সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেব মানুষকে

পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার। একান্ত সাক্ষাৎকারে খোলামেলা উত্তর দিলেন জাগোবংলার প্রতিনিধি সুনীতা সিং-কে।

Must read

দলনেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৯৮ সালেই আমার মা স্কুলশিক্ষিকা আশালতা লোহার বাম সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর মঙ্গলকোটে তৃণমূলের জেলা পরিষদের প্রার্থী হন। আমার এক দাদাও পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হন। বামসন্ত্রাসকে উপেক্ষা করে মা-দাদার প্রচারের জন্য পরিবারের সকলে মিলে পোস্টার, ব্যানার লাগানো ও প্রচারে অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে রাজনীতির আঙিনায় প্রবেশ করি। ২০১৮-য় মঙ্গলকোট থেকে দল জেলা পরিষদের প্রার্থী করে।

সভাধিপতি (Shyamaprasanna Lohar) হিসাবে কোন কোন কাজে অগ্রাধিকার দেবেন?
উঃ পানীয় জল, বিদ্যুৎ ও রাস্তা সহ যে সমস্ত পরিষেবা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রদান করা হচ্ছে সেই সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই হবে আমার প্রধান লক্ষ্য।

জেলার গ্রামীণ ক্ষেত্রে চাষের উন্নতি সাধনে কী কী উদ্যোগ নেবেন?
উঃ পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে চেষ্টা করব বিভিন্ন সময় সরকারি উদ্যোগে যে সমস্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেই প্রশিক্ষণ যাতে গ্রামের সকল চাষি নিতে পারেন তার ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগে দেওয়া বিভিন্ন উন্নত মানের বীজ চাষিদের কাছে পৌঁছে দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হবে। এরই সঙ্গে সেচের এলাকা বৃদ্ধি করা হবে ও কৃষকবন্ধু প্রকল্পের সুবিধা সকল চাষির জন্য সুনিশ্চিত করা হবে।

বাম আমলে জেলা পরিষদের বহু জমি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নামে বা ব্যক্তিগতভাবে দখল করে রাখা হয়েছে। সেই সমস্ত জমি দখল মুক্ত করার জন্য কি উদ্যোগ নেবেন?
উঃ এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং প্রথম মিটিংয়ে আমরা এটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে জেলা পরিষদের যে সমস্ত জমি নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে নানা অছিলায় দখল করে রাখা হয়েছে সেই সমস্ত জমি পুনরুদ্ধার করা হবে।

আরও পড়ুন- মোদিবাবু! ও মোদিবাবু! এই অঙ্কটা তো বুঝলাম না

পর্যটনের উন্নতিসাধনে বা পর্যটন মানচিত্রে জেলাকে তুলে আনার জন্য এই ক্ষেত্রগুলোকে কীভাবে ব্যবহার করবেন?
উঃ মেমারিতে একটি জমি চিহ্নিত করে তার সৌন্দর্যায়নে কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য যে সমস্ত ক্ষেত্রগুলো বা বাংলোগুলো আছে, সেগুলোকেও সাজিয়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে। যাতে পূর্ব বর্ধমান জেলাকে পর্যটনে সমৃদ্ধ জেলা হিসাবে গড়ে তোলা যায়।

জেলা পরিষদকে স্বাবলম্বী হিসাবে গড়ে তুলতে নিজস্ব তহবিল গঠনে কী কী ভূমিকা নিবেন?
উঃ বর্তমানে জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিলের অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। তাই গুসকরা, ভাতার ও সাতগেছিয়া সহ বিভিন্ন জায়গায় যে সমস্ত জেলা পরিষদের মার্কেটগুলি আছে সেই মার্কেটগুলি থেকে যে ভাড়া ওঠার কথা, সে ভাড়া সঠিকভাবে উঠছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি বহু সম্পত্তি লিজে দেওয়া আছে অনেক ক্ষেত্রেই সেই সমস্ত প্রপার্টি রিনিউ করা হয়নি। বহু ক্ষেত্রে প্রাপ্য টাকাও আটকে আছে। সেই সমস্ত বকেয়া টাকা আদায়ের ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

২৩টি ব্লকের ক্ষেত্রে আলাদাভাবে কি কোনও উন্নয়ন পরিকল্পনা করবেন?
উঃ পূর্ব বর্ধমান জেলায় ২৩টি ব্লক আছে। প্রতিটি ব্লকের ক্ষেত্রেই কিছু আলাদা আলাদা সমস্যা আছে। যেগুলি ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে। যেমন কালনা, পূর্বস্থলীর ক্ষেত্রে গঙ্গার ভাঙন একটা বড় সমস্যা। তেমনি আউশগ্রামের জঙ্গলমহল থেকে রায়না, গলসি থেকে জামালপুর প্রতিটি ব্লকের কিছু আলাদা আলাদা সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যাগুলির সমাধানে আশু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আইনজীবী পেশা থেকে সরে এসে মায়ের কথায় জনসেবায়, কোথাও কি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে?
উঃ জনসেবার করার জন্য পেশা থেকে সরে এসে সাময়িকভাবে একটা আর্থিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কিন্তু মা আশ্বস্ত করেছেন মায়ের পেনশন থেকে তিনি সহযোগিতা করবেন।

তফসিলি জাতি-উপজাতি এবং অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য কী করবেন?
উঃ এই সমস্ত শ্রেণির মানুষদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই একাধিক সরকারি প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। সেই সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা যদি তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় তাহলে আর নতুন করে কোনও উদ্যোগের প্রয়োজন নেই। আমাদের মূল লক্ষ্য হবে এই সমস্ত সুবিধাগুলিই নিরবচ্ছিন্নভাবে তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া।

মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিশেষ কোনও আবেদন করবেন?
উঃ মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই পূর্ব বর্ধমান জেলার জন্য অনেককিছু করেছেন। তবে পূর্ব বর্ধমান ও বীরভূমের সংযোগকারী মঙ্গলকোটের লোচনদাস সেতু এবং বর্ধমান শহর ও দক্ষিণ দামোদর এলাকার সংযোগকারী কৃষক সেতুর মতো করে ওই সেতুগুলোর পাশে আরও দুটি সেতু নির্মাণের দাবি জানাব। গঙ্গার ভাঙন প্রতিরোধ ও ভবঘুরে ও অনাথ শিশুদের জন্য জেলায় একটি শেল্টার হোম তৈরি করাই হবে আমার (Shyamaprasanna Lohar) প্রাথমিক কাজ।

Latest article