রিতিশা সরকার, দার্জিলিং : পাহাড়ের মানুষকে বিচ্ছিন্নতাবাদে উৎসাহিত করে, বাংলাভাগের প্ররোচনা দিয়ে কিছুদিন ভুল বোঝাতে পেরেছিল বিজেপি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার মোকাবিলা করেছেন উন্নয়ন দিয়ে। পাহাড়ের মানুষ নিজের ভুল যে বুঝতে পারছেন, এবার দার্জিলিং পুর নির্বাচন তার উজ্জ্বল উদাহরণ। দার্জিলিংয়ের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ী তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) প্রার্থী সঞ্জয় গুরুং এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের গণেশ সার্কি। বোঝাই যাচ্ছে পাহাড়ে সুস্থ, গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসছে। আসন না পেয়ে পাহাড়েও অস্তিত্বহীন হয়ে গেল বিজেপি। দার্জিলিং পুর নির্বাচনের ৩২টি আসনের একটিতেও খাতা খুলতে পারেনি। নির্বাচনে জিএনএলএফের সঙ্গে জোট বেঁধেছিল বিজেপি। অন্য বাকি সব দলই কিছু হলেও আসন পেয়েছে। কিন্তু জিএনএলএফ ও বিজেপি-র একেবারে হাঁড়ির হাল। মজার কথা হল, সেখানে দার্জিলিঙের বিধায়ক বিজেপির এবং সংসদও তাদের। এই অবস্থায় পুর নির্বাচনে একটিও আসন না পেয়ে কার্যত দিশাহারা তারা। বুধবার সকালে ভোটগণনার পরে তৃণমূল কংগ্রেস ১০টি আসনের মধ্যে দুটি আসনে জয়ী হয়েছে। ৫ নম্বর ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) প্রার্থীরা জয়ী হন। আগে তৃণমূল কংগ্রেসের একটি আসন ছিল, সেখানে এবার আরও একটি আসন বেশি পেল। পাহাড়ে প্রতিষ্ঠিত হল গণতন্ত্র। জিএনএলএফ ও বিজেপির সংগঠন বরাবরই ওখানে শক্তিশালী ছিল। তৃণমূলের সংগঠন সেভাবে না থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের পরিকল্পনা দেখেই পাহাড়বাসী ভোট দিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীদের। দার্জিলিং পুর নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব দিয়েছিল গৌতম দেবকে। গৌতম পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব তুলে দেন দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অলোক চক্রবর্তীর ওপরে। নির্বাচনের শুরুর দিন থেকেই অলোক পাহাড়ে মাটি কামড়ে পড়েছিলেন। দুটি আসন জয়ে গৌতম-অলোকের যুগলবন্দির ভূমিকাই মুখ্য। অলোক বলেন, ‘‘আগের তুলনায় পাহাড়ে আমাদের সংগঠন অনেকটাই মজবুত হয়েছে। বিজেপির বিধায়ক ও সাংসদ থাকা সত্ত্বেও বিজেপি একটিও আসন পায়নি। তৃণমূল কংগ্রেসের আসন বেড়েছে, সংগঠনও অনেক মজবুত হয়েছে।’’ গৌতম দেব বলেন, ‘‘পাহাড়ে বিজেপি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। দুটো আসনে জয়লাভ করেছি এবং একটি আসন টাই হয়েছিল, পরে সেখানে হেরেছি। এরপর পাহাড়ের রাজনীতি বদলে যাবে। গোটা পাহাড়ই শরিক হবে মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নযজ্ঞে।’’