প্রতিবেদন : নন্দীগ্রামে হেরে ভূত বিরোধী জোট। নন্দীগ্রাম ২ নং ব্লকের ভেটুরিয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে ১২-০ গোহারা হারল বিরোধী জোট। আর এভাবে পায়ের তলার মাটি সরতেই নন্দীগ্রাম দেখল বিজেপির গুন্ডাদের তাণ্ডব। হারের পর বাইরে থেকে লোক এনে এলাকায় গুন্ডামি শুরু করে বিরোধীরা। কিন্তু রুখে দাঁড়ান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের প্রতিরোধের সামনে পড়ে এলাকা ছেড়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। যদিও তার আগে দুষ্কৃতীদের মারে তৃণমূলের বেশ কয়েকজন কর্মী ও ভোটার আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন-মেঘালয়ে বিপ্লব, উই কার্ডে ৯ দিনে নাম ৬০ হাজারের
আজ শনিবারই আহতদের দেখতে তমলুক হাসপাতালে যাবেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। তাই নন্দীগ্রামের আরএসি বিধায়ক হার মেনে নিতে না পেরে বাইরে থেকে দুষ্কৃতী এনে এলাকায় অশান্তি করছে। কিন্তু স্থানীয় মানুষই আজ রুখে দাঁড়িয়েছেন। এদিন সকাল থেকেই বিজেপির দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব নিয়ে পুলিশকে জানিয়েছেন নন্দীগ্রাম ২-এ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অরুণাভ ভুঁইয়া৷ তিনি বলেন, বিজেপির গুন্ডারা তাণ্ডব করলেও আমরা মানুষকে শান্ত করার চেষ্টা করছি। আমরা আইনের দ্বারস্থ হচ্ছি। এরপর আমাদের দল যা নির্দেশ দেবে সেভাবেই এগোব।
আরও পড়ুন-আরও ৪২ হাজার ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হবে পড়ুয়াদের
নন্দীগ্রামের ভেটুরিয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে যে পায়ের তলার মাটি সরছে তা টের পাচ্ছিলেন লোডশেডিং অধিকারী। তাই আগের রাত থেকেই গণ্ডগোল পাকানো শুরু হয়। ভোটের দিন ব্যাপক অশান্তি করেও পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের ‘ভেটুরিয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি’র নির্বাচনে গোহারা হারল বিজেপি। বাম ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেও খেল ‘নিল গেম’। ১২ আসনের সবগুলিই জিতল তৃণমূল। রাম-বাম জোট করেও শুক্রবার খাতা খুলতে না পারায়, প্রমাণ হয়ে গেল যে, নন্দীগ্রাম বিধানসভা ভোটে লোডশেডিং না হলে ফলাফল অন্যরকম হতে পারত।
ভেটুরিয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে মোট আসন ১২টি। বিজেপি-র এক প্রার্থী আগেই প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করেন। শুক্রবার সকাল থেকেই টানটান উত্তেজনা ছিল। বেলা ১১টা নাগাদ বিজেপি হামলা চালায়। জখম হন বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী। অভিযোগ, বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক মেঘনাথ পালের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন-কোর্ভিভ্যাক্সে ছাড়পত্র, সাবধানি পদক্ষেপ রাজ্যের
ইতিমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরে বেশ কয়েকটি সমবায় সমিতির নির্বাচন হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গোহারা হেরেছে বিজেপি। রাম-বাম জোট করেও হালে পানি পায়নি। সম্প্রতি নন্দীগ্রামে বেশ কিছু আদি বিজেপি নেতা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় নন্দীগ্রামে বিজেপির পায়ের নিচের মাটি আরও সরে গিয়েছে। তাই এই সমবায় সমিতির নির্বাচনে হার নিশ্চিত বুঝে গিয়েছিল বিজেপি। বিরোধী দলনেতার কেন্দ্রে বিজেপির ভরাডুবি হলে, রাজ্য জুড়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, বুঝেই হার আটকাতে দুষ্কৃতীদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। গুরুতর জখম ও রক্তাক্ত অবস্থায় বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী ও ভোটারকে নন্দীগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
কুণাল ঘোষ বলেন, সমবায় নির্বাচনে ভোকাট্টা হয়ে গিয়েছে বিজেপি। পায়ের তলার মাটি সরছে বলেই বাইরে থেকে লোক এনে এই গুন্ডামি। যে ভেটুরিয়ায় বিজেপি জোট হারল, ক’দিন আগেও তো সেখানে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ভোট নিয়েছে ওরা। এদিন ওদের দুষ্কৃতীদের আক্রমণে বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী ও ভোটার আহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে একজনের আঘাত গুরুতর। মাথায় প্রায় ৮টি সেলাই করতে হয়েছে। আজ শনিবার তমলুক হাসপাতালে আহতদের দেখতে যাব। এরপর জেলা সভাপতির দফতরে নন্দীগ্রাম ১ এবং ২ নং ব্লকের সভাপতি ও স্থানীয় নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করব।