প্রতিবেদন : বামেদের দ্বিচারী এবং নোংরা রাজনীতির পর্দাটা সরে গেল শনিবার বিকেলে। তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষের সঙ্গে বৈঠকের পর বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কর্মপ্রার্থীদের প্রতিনিধিরা। অভিযোগ, পাশে দাঁড়ানোর নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছেন সিপিএমের সাংসদ এবং আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন-ব্যাট হাতে কাউন্সিলাররা
এই অভিযোগ কোনও রাজনৈতিক নেতার নয়, অভিযোগ এসএলএসটির শারীরশিক্ষা-কর্মশিক্ষার সেই সব চাকরিপ্রার্থীদের। কোন চাকরিপ্রার্থীরা? যাঁদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ১৬০০ পদ তৈরি করেছিলেন, রেকমেন্ডেশন লেটারও দেওয়া হয়েছিল। অপেক্ষা ছিল শুধু নিয়োগপত্রের। শনিবার তাঁরাই প্রকাশ্যে বললেন, চাকরি করে দেওয়ার নাম করে ২৭ লক্ষ টাকা নিয়েছেন বিকাশবাবু ও তাঁর সহকারী আইনজীবীরা। শুধু এখানেই শেষ নয়। টাকা নিয়ে সমস্যার সমাধান তো তিনি করেনইনি, উল্টোদিকে চাকরি আটকাতে অযোগ্য প্রার্থীর হয়ে পাল্টা মামলা করেন। আদালত স্থগিতাদেশ দেয়। আইনি পথে হওয়া চাকরি আটকাতে কুটিল চক্রান্ত বিকাশ ভট্টাচার্য-সহ বামেদের, তথাকথিত গরিবের পাশে দাঁড়ানো সেইসব আইনজীবীদের। যাকে চাকরিপ্রার্থীরা শনিবার স্পষ্ট ভাষায় বলছেন, সর্বনাশা এক মারণ চক্রান্ত। ঘটনাক্রম এইরকম, এসএলএসটি শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষা প্রার্থীরা ধরনায় বসেছিলেন মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে। চাকরিপ্রার্থীদের অনুরোধে ধরনামঞ্চে যান তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, ২০২২-এর মে মাসে। তাদের সঙ্গে কথা বলার পর বিষয়টি তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানান। মুখ্যমন্ত্রী সেই সময় কলকাতার বাইরে ছিলেন। তিনি জানান, ফিরে গিয়েই চাকরিপ্রার্থীদের কাছে অফিসার পাঠাবেন। চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে ফোনে কথা হয় মুখ্যমন্ত্রীর। প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। অফিসাররা চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে মঞ্চে বৈঠক করেন, পরে আরও কয়েকটি। এরপর মুখ্যমন্ত্রী নিজে উদ্যোগ নিয়ে কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার এই কর্মপ্রার্থীদের জন্য ১,৬০০টি পদ তৈরি করেন। কাউন্সেলিং হয়। নভেম্বর মাসে কাউন্সেলিংয়ে ১৪০৪ প্রার্থীর হাতে নিয়োগের সুপারিশপত্র তুলে দেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন। এরপরই খেলায় নেমে পড়ে গরিবের বিনা পয়সার আইনজীবীর নামে সিপিএম। চাকরি আটকাতে মামলা হয়। নিয়োগে স্থাগিতাদেশ। ফের চরম অনিশ্চয়তা।
আরও পড়ুন-রাম-বামে ফের ভাঙন ৫৫ পরিবার তৃণমূলে
ঠিক এই অবস্থাতেই চাকরিপ্রার্থীরা শনিবার বিকেলে কুণালের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সেখানে চাকরিপ্রার্থীরা পরিস্কার ভাষায় জানান, নিশ্চিত চাকরি আটকাতে কী ধরনের চক্রান্ত করেছে বিকাশ-সহ তার সহযোগী আইনজীবীরা। কুণাল এদিন বলেন, এই চক্র এদের হয়ে এক সময় মামলা করেছে। আবার যখন মুখ্যমন্ত্রী জট খুলে দিচ্ছেন তখন ওই চক্রই চাকরি আটকানোর জন্য মামলা করেছে। গরিব, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়েদের থেকে ২৭ লক্ষ টাকা নিয়েছে। এই নাকি বামেদের দরদ? এরা নাকি গরিবের বিনা পয়সার আইনজীবী? গরিবের নেতা! সমস্ত আইনি পদ্ধতি পেরিয়ে সরকার যখন চাকরি দিচ্ছে তখন এদের উল্টোদিকের লোকেরা এদের ক্লায়েন্ট হয়ে গিয়েছে। অযোগ্য প্রার্থীর হয়ে মামলা করে চাকরি আটকানোর খেলায় নেমেছে। কারণ চাকরি না পেলেই এরা রাজনীতির মঞ্চ পাবে। চাকরি হয়ে গেলে এদের বাড়িতে ঢুকে দরজায় খিল দিতে হবে। কুণাল আরও বলেন, যে মেয়েটির নাম দিয়ে মামলা হয়েছে, তার যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। তাকে খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না অথচ মামলা চলছে। বিচারপতিদের উদ্দেশে কুণালের মন্তব্য, এসএসসির আইনজীবীরা কোর্টে দাঁড়িয়ে বলছেন, এরা চাকরির যোগ্য এবং উপযুক্ত। তাহলে দীর্ঘসুত্রিতা কেন? স্থগিতাদেশ তোলার জন্য আইনি পথে যা-যা করার দরকার, তার জন্য সরকার যাতে উদ্যোগী হয় সেই অনুরোধ করা হবে। আশা সমস্যা সমাধান সম্ভব।