চিনের এই প্রদেশে মহিলারাই সর্বেসর্বা

Must read

ইউনান : এখানে ছেলেদের কাজ ঘরকন্নার কাজ সামলানো। আর মেয়েরাই চালায় বাকি সবকিছু। অর্থাৎ পরিবারের জন্য অর্থ উপার্জন করা থেকে শুরু করে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেন মহিলারাই। এককথায় তাঁরাই সর্বেসর্বা, ছেলেরা লবডঙ্কা বললেও ভুল হয় না।

আরও পড়ুন- আকাশছোঁয়া বেকারি, বাংলাকে বঞ্চনা: কেন্দ্রকে তোপ তৃণমূল কংগ্রেসের

কোথায় রয়েছে এই মহিলাতান্ত্রিক ‘দেশ’? চিনের দক্ষিণ পশ্চিমে ইউনান প্রদেশে। পাহাড়ের কোলে এক সম্প্রদায়। নাম মসুও। তাদের সমাজ সম্পূর্ণ নারীশাসিত। এখানে নারীর কথায় পুরুষরা ওঠে – বসে। পুরুষদের তাহলে কাজটা কী? শুধু বংশবৃদ্ধি করা আর ঘরের কাজ সামলানো। জানা যায়, মসুও মহিলারা একাধিক পুরুষ সঙ্গী চান।

মসুও আদতে চিনের অতি প্রাচীন এক সম্প্রদায়। এর জনসংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। এরা মূলত স্বনির্ভরগোষ্ঠী। কঠোর ধর্মবিশ্বাস এবং সংস্কৃতিকেন্দ্রিক এদের জীবনযাপন। সম্প্রদায়ের মহিলারা হন আত্মবিশ্বাসী, ক্ষমতাশালী। এটা তাদের স্বভাবজাত। যা সচরাচর অন্যত্র এভাবে দেখা যায় না। সকলেই কৃষিজীবী।

এই মহিলারা প্রকৃতির উপাসক। লুগু হ্রদকে এরা মায়ের মতো সম্মান করে। এই হ্রদের ধারে তাদের বর্ণাঢ্য নৃত্যও দেখা যায়। প্রথাগত উজ্জ্বল সাজপোশাক পরে পাহাড়ি দেবীর উৎসব উদযাপন করেন। তাদের দেবী ‘গামু’। পাহাড়ের মাথায় তাঁর মন্দির। প্রচলিত বিশ্বাস, এই দেবীই তাদের রক্ষাকর্ত্রী। দেবী নাকি নাচগান , মদ্যপান, বহুগামিতা পছন্দ করেন। তাই তাঁর কথা মতোই চলে মসুও মহিলাদের জীবন।

আরও পড়ুন- রাজ্য জুড়ে উচ্ছ্বাসে , পালিত ‘কন্যাশ্রী দিবস’

মায়ের মেয়েরাই স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়। যে কন্যাসন্তান সবচেয়ে বুদ্ধিমতী ও পরিশ্রমী, তাকেই পরিবারের প্রধান ঘোষণা করা হয়।

তাহলে এই সমাজে পুরুষের ভূমিকা কী? মসুও পুরুষরা সাধারণত বাড়ি ছেড়ে কোথাও যায় না। তারা মনে করে নারীর শরীরে নতুন জীবনের যে বীজ সুপ্ত আছে, পুরুষ তাকে অঙ্কুরিত করবে। সেই বীজে যখন প্রাণের সঞ্চার হবে, তখন থেকেই সেই শিশুর উপর অধিকার তার গর্ভধারিণী মায়ের। এই সমাজে শিশুর উপর পিতার কোনও অধিকার নেই। সন্তানকে বড় করার দায়িত্বও মায়ের।

২৪ দেশলাইকাঠিতে ৭৫ স্বাধীনতা সংগ্রামী

ইউনান প্রদেশের এই সম্প্রদায়ের বিয়ের প্রথাও চমকপ্রদ। এরা কোনও বিয়েতেই দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক তৈরিতে বিশ্বাস করে না। কোনও এক পুরুষ, কোনও নারীকে বলে দেয় আজ রাতে সে তার বাড়িতে থাকবে। সেই ঘরেই ব্যবস্থা করা থাকে। পুরুষ এসে পছন্দের নারীর দরজায় পাথর দিয়ে টোকা মেরে ওই বিশেষ ঘরে ঢুকে একসঙ্গে রাত কাটায়। সূর্য ওঠার আগেই ওই পুরুষ ওই ঘর ছেড়ে চলে যায়। এটাই নাকি চলতি নিয়ম। আর এটাই বিয়ে। তাতে যে সন্তান হবে তার দায়িত্ব সেই মহিলার পরিবারের। তবে সময় বদলাচ্ছে। অনেক মসুও নারী একজনমাত্র জীবনসঙ্গীর সঙ্গেও সংসার করছেন। বাকি সবকিছু অবশ্য একইরকম।

Latest article