ধনখড় জমানা শেষ হলেও বাংলার রাজ্যপালের (governor) মসনদে সি ভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose) এর উপাচার্য বদলের ঘটনায় খুশি নয় রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করার কথা বলেছিলেন কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠছে না। তুঙ্গে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত।
আরও পড়ুন-কাকদ্বীপে ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে একমঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
ইতিমধ্যে ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল। সার্চ কমিটির বাইরে গিয়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন রাজ্যপাল আর সেই নিয়েই ক্ষুব্ধ রাজ্য। সেই প্রশ্ন ফের তুললেন প্রাক্তন ও কয়েকজন বর্তমান উপাচার্য। সাংবাদিক বৈঠকে আচার্য তথা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তাঁরা। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য নিমাই সাহা, সিধো কানহো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য দীপক কর, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, নেতাজী সুভাষ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী, রানি রাসমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ, কল্যানী বিশ্ববিদ্য়ালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মানস স্যান্যাল, সংস্কৃত বিশ্ববিদ্য়ালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অনুরাধা মুখোপাধ্যায় সহ ১০ জন।
আরও পড়ুন-৯ জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা, কবে হবে বৃষ্টি
দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘গত ১১ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে। বহু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাচ্ছি একটা অদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। কেন এই পরিস্থিতির সৃষ্টি? উপাচার্য নিয়ে নিয়ে কিছু সমস্যা ছিল। রাজ্য সরকার কোর্টের নিয়ম মেনে সেগুলি যথারীতি সংশোধন করে। একটা নিয়মমাফিক বিষয় সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে। আমরা তো নিয়মমাফিক চলতে চাই। সুপ্রিম কোর্টের অর্ডার মেনে সার্চ কমিটি হবে। তারপর বাছাই। এটা খুবই জরুরি বিষয়। এখন সমস্ত উপচার্যদের বলা হচ্ছে সাপ্তাহিক রিপোর্ট পাঠাতে। এটা আমি আগে কখনও শুনিনি। এটার তো কোনও দরকারই নেই। এটা তো নিয়মের বাইরে গিয়ে হচ্ছে। প্রশাসনিক যে নিয়ম রয়েছে তার বাইরে তো এটা।’
আরও পড়ুন-কলকাতা বিমানবন্দর এর কাছে উদ্ধার জোড়া কামান
তিনি আরও বলেন, ‘যদি উনি কিছু খবর পেতে চান তাহলে উচ্চ শিক্ষা দফতরের হাত দিয়ে আমাদের লিখতে পারেন। আমরাও সেই অনুযায়ী উত্তর দেব। কিন্তু, দেখা যাচ্ছে উল্টো হচ্ছে। উনি (রাজ্যপাল) নিবেআইনিভাবে চিঠি পাঠাচ্ছেন। উনি আমাদের নিয়ম ভাঙতে উৎসাহিত করছেন। যাঁরা নিয়ম ভাঙতে চায় না তাঁদের তাড়াতাড়ি সরিয়ে দিলেন। যাঁরা নিয়ম ভেঙেছে তাঁদের উৎসাহিত করলেন। এটা আমাদের পশ্চিমবঙ্গের কালচার নয়। আমরা কোনওদিন দেখিনি এ জিনিস।’
আরও পড়ুন-বীরভূমের মসজিদে জাপানের ২ লাখি মিয়াজাকি আম
এদিন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, ‘উনি বলছেন তিন জনকে কনসিডার করেছেন। এই তিনজন কারা? আসলে ৩ জনই নিয়ম ভেঙে ওনাকে সরাসরি কিছু রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। উনি বুঝিয়ে দিচ্ছেন যদি আপনারা আমার কথা শুনে চলেন তাহলে আমি আপনাদের এক্সটেনশন বা অন্যান্য ব্যবস্থার বিষয়ে সুপারিশ করব। প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটো গ্রুপ তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একদিকে যাঁরা নিয়ম মেনে, বিধি মেনে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন। আর একদিকে থাকছেন যাঁরা আচার্যের কথা শুনে চলবে। সেই মতো কাজ করবেন।’
আরও পড়ুন-অনুব্রতকে দেখতে তিহাড়ে যাচ্ছেন দোলা সেন ও অসিত মাল
তিনি রাজ্য রাজ্যপাল সংঘাত নিয়ে বলেন, ‘কোন ভিত্তিতে উনি কিছু কিছু অধ্যাপকদের রাজভবনে ডেকে পাঠাচ্ছেন? এর পিছনে কী জাস্টিফিকেশন আছে। কোন ভিত্তিতে উনি তাঁদের উপাচার্য হওয়ার জন্য ১২টা শর্ত দিচ্ছেন? এই শর্ত যাঁরা মেনে চলবেন তাঁদেরকে উনি ভিসি হিসাবে নিয়োগ করবেন বলে জানিয়েছেন। আমার কাছে চিঠি আছে। গৌড়বঙ্গের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সমীর বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন।’