কলম্বো: এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলা আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল ভারতের। তেমনই ফাইনালের দৌড় থেকে আগেই ছিটকে গিয়েছিল বাংলাদেশ (India-Bangladesh)। শুক্রবার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সুপার ফোরের শেষ ম্যাচটি ছিল কার্যত নিয়মরক্ষার। এমন একটা ম্যাচে ফাইনালের আগে বাংলাদেশের কাছে ৬ রানে হেরে গেল ভারত। কাজে এল না শুভমন গিলের সেঞ্চুরি। দু’দলের মধ্যে শেষ চারটি ওয়ান ডেতে তিনবারই হার ভারতীয়দের। এশিয়া কাপে এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের কাছে দ্বিতীয় হার মেন ইন ব্লু-র।
শাকিব আল হাসানদের লক্ষ্য ছিল ভারতকে হারিয়ে বিশ্বকাপের আগে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেশে ফেরা। ভারতীয় দল যথারীতি নিয়মরক্ষার ম্যাচে পরীক্ষার পথেই হাঁটল। পাকিস্তান ম্যাচের দল থেকে প্রথম একাদশে পাঁচটি বদল করে তারা। এদিন বিশ্রামে থাকলেন বিরাট কোহলি, হার্দিক পান্ডিয়া, যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজ ও কুলদীপ যাদব। ব্যাটিং বা বোলিং বিভাগে যাঁরা সুযোগ পাচ্ছেন, নজর ছিল তাঁদের দিকে। কিন্তু ওয়ান ডে-তে এদিন অভিষেক হওয়া তিলক ভার্মাই হোক বা সূর্যকুমার যাদব, কেউই সেভাবে পরীক্ষায় পাশ করতে পারলেন না। এই ম্যাচ থেকে ভারতের প্রাপ্তি বলতে শুভমনের সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপের আগে তাঁর ফর্ম ভারতীয় শিবিরে নিঃসন্দেহে বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাবে।
আরও পড়ুন-সুনীলের কাছে সবার আগে দেশ, প্রশংসা ফেডারেশন কর্তার
বাংলাদেশের ২৬৫ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় ভারত (India-Bangladesh)। অভিষেককারী পেসার তানজিম হাসানের দ্বিতীয় ডেলিভেরিতেই আউট রোহিত শর্মা। তবু ভারতীয় শিবিরে জয়ের প্রত্যাশা ছিল। কারণ, শুভমন, কেএল রাহুলরা ছিলেন। কিন্তু রাহুল, সূর্যকুমাররা ব্যর্থ। লড়াই করলেন শুভমন। ওয়ান ডে-তে চতুর্থ সেঞ্চুরি হাঁকালেন। ১৩৩ বলে ১২১ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেও ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেননি। ভারতও হার এড়াতে পারেনি। শেষ দিকে মরিয়া লড়াই করেন অক্ষর প্যাটেল। তাঁর সঙ্গী ছিলেন শার্দূল ঠাকুর। জয়ের জন্য শেষ ২ ওভারে দরকার ছিল ১৭ রান। মুস্তাফিজুর এসেই শার্দূলের উইকেট নেন। ক্রিজে আসেন মহম্মদ শামি। স্ট্রাইক দেন অক্ষরকে। বাউন্ডারি মেরে জয়ের আশা জাগান। কিন্তু ওভারের চতুর্থ বলে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট অক্ষরও (৩৫ বলে ৪২)।
তার আগে টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরুটা ভাল করেছিল ভারত। বুমরা, সিরাজরা বিশ্রাম নিলেও বাংলাদেশকে শুরুতেই কোণঠাসা করে দেয় রোহিতের দলের বোলাররা। নেপাল ম্যাচের পর মাঠে ফিরেই বল হাতে দাপট দেখান শামি। লিটন দাসকে বোল্ড করে বাংলাদেশ ইনিংসের শুরুতে যে ধাক্কা দেন শামি, সেই চাপ আরও বাড়ান এদিন নতুন বলে বোলিং শুরু করা শার্দূল। বাংলাদেশ দ্রুত ২৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বেকায়দায় পড়ে যায়। ২৮/৩ থেকে ১৫তম ওভারে স্কোর ৫৯/৪ হয়ে যেতেও বেশি সময় লাগেনি।
অধিনায়ক শাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায় লড়াই শুরু করে বাংলাদেশ। শাকিবকে যোগ্য সঙ্গত করেন তাওহিদ হৃদয়। দু’জনের পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১০১ রান যোগ হয়। টাইগাররা লড়াইয়ে ফেরে। এইসময় শাকিবকে (৮০) আউট করে শার্দূল ভারতীয় শিবিরে স্বস্তি ফেরালেও হৃদয় (৫৪), নাসুম আহমেদ (৪৪) ও মাহেদি হাসানের (অপরাজিত ২৯) লড়াকু ব্যাটিং বাংলাদেশের স্কোর আড়াইশো পেরোতে সাহায্য করে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৬৫ রান তুলতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ। ম্যাচের সেরা শাকিব।