অ্যাডিলেড, ২ নভেম্বর : অ্যাডিলেডে যখন বৃষ্টি নামল, শাকিবরা দারুণ জায়গায়। এক তো কোনও উইকেট না হারিয়ে ৭ ওভারে ৬৬ রান তুলে ফেলেছেন। তার উপর যদি আর খেলা না-ই হত, তাহলে প্রথম পাঁচ ওভারে তাঁরা এগিয়ে ছিলেন বলে ম্যাচও জিততেন।
কিন্তু ক্রিকেট বড় মজার খেলা। খালি রং বদলায়। বুধবারের ম্যাচ যেমন। বৃষ্টিটা শেষমেশ থামল। ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়মে ওভার কমে খেলা ১৬ ওভারে দাড়াল। ১৬ ওভারে বাংলাদেশকে করতে হত ১৫১ রান। তারা ১৪৫ রান তুলে ম্যাচ হেরে গেল ৫ রানে। এদিন জিতে ৪ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ শীর্ষে উঠে গেল ভারত (India vs Bangladesh)। সেমিফাইনালও নিশ্চিত হয়ে গেল এই জয়ে। আবার এই ম্যাচেই মাহেলা জয়বর্ধনেকে পিছনে ফেলে টি-২০ বিশ্বকাপে সবথেকে বেশি রান করে ফেললেন বিরাট কোহলি।
হতে পারে বুধবারের ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট এই বৃষ্টি। আবার এ-ও হতে পারে টার্নিং পয়েন্ট আসলে লিটন দাসের রান আউট। বৃষ্টির আগে ২৬ বলে ৬০ নট আউট ছিলেন তিনি। কিন্তু ফের খেলা শুরু হলে রাহুলের ডাইরেক্ট থ্রোতে রান আউট হয়ে গেলেন আর কোনও রান না করেই। এরপর একটা সময় ১১ বলে ৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে হারিয়ে গেলেন শাকিবরা। পরের দিকে নুরুল হাসান ১৪ বলে ২৫ রান করে অ্যাডিলেড ওভালে উত্তেজনা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু তাতে ভারতের জয় আটকে থাকেনি।
এর আগে ৩২ বলে ৫০ করে রাহুল ফিরে যাওয়ার পর কিছুটা স্বস্তি ফিরেছিল বাংলাদেশ (India vs Bangladesh) শিবিরে। তা না হলে এতক্ষন তিনি একাই তাসকিন, শাকিবদের দায়িত্ব নিয়ে ফেলেছিলেন। রাহুলের ব্যাটে রান নাই-রান নেই বলে গণ-চিৎকারের পর একরকম বাধ্য হয়েই অ্যাডিলেড ম্যাচের আগে রাহুলই খেলবেন জানাতে হয়েছিল কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে। দল জানত বেঙ্গালুরুর তরুণের রানে ফেরাটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। যেটা ঘটে গেল বুধবার।
আরও পড়ুন-বিরাট কবে ফর্মে ছিল না : রোহিত
মেঘলা আকাশ দেখে শাকিব টস জিতে ভারতকে আগে ব্যাট করতে দিয়েছিলেন। রোহিত যখন ২ রান করে ফিরে গেলেন, মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ অধিনায়ক ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু বিরাট উইকেটে আসার পর ছবিটা বদলে গেল। রাহুলের সঙ্গে তাঁর জুটি অনায়াসে ম্যাচের দখল নিয়ে নিল। ১১ রানে রোহিত হাসান মাহমুদকে উইকেট দিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় উইকেটে ৬৭ রান উঠে এল চোখের নিমেষে। রান তোলার দায়িত্ব তখন হাতে তুলে নিয়েছিলেন রাহুল।
তাঁর ইনিংসে তিনটি চার, চরটি ছয়। কিন্তু তার থেকেও বড় কথা হল গোটা ইনিংসে একবারও এটা মনে হয়নি যে তিনি রানে নেই এবং এই রানে না থাকা নিয়ে নিরন্তর কাঁটাছেড়া হচ্ছে। কিন্তু রাহুলের এই রানটা বাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল। আর সেটা তিনি নষ্ট করেছেন। পঞ্চাশের পরই উইকেট দিয়ে গেলেন শাকিবকে। অথচ তখন তিনি ওয়েল সেট।
এদিকে, রাহুল রান পেয়ে গেলেও রোহিত আবার ব্যর্থ হলেন। হিটম্যান রান না পাওয়ায় অস্বস্তি সেই থেকেই গেল থিঙ্ক ট্যাঙ্কের। ঠিক যেভাবে হার্দিকও চাপে রাখলেন রাহুল দ্রাবিড়কে। পাকিস্তান ম্যাচে রান করার পর থেকে আর হার্দিকের ব্যাটে রান নেই। এদিন যেমন হাসানকে উইকেট দিয়ে গেলেন ৫ রান করে। তার আগে সূর্য ফিরে গিয়েছেন। তাঁর ১৬ বলে ৩০ রানের ইনিংস আর বেশি এগোতে পারেনি শাকিবের জন্য।
কিন্তু উল্টোদিকে বিরাট ছিলেন। আর ইনিংসের শেষ পর্যন্ত থেকেও গেলেন ৪৪ বলে ৬৪ নট আউট থেকে। একদম শেষদিকে একটা সময় ১০ বলে ১০ রান উঠেছিল মুস্তাফিজুরের সৌজন্যে। তা না হলে রানটা ২০ ওভারে ১৮৪/৬ নয়, আরও কিছুটা যেত। ফিনিশার কার্তিক (৭), অক্ষর (৭) কেউ রান পেলেন না। বরং অশ্বিন (১৩ নট আউট) কিছুটা সঙ্গ দিতে পেরেছেন বিরাটকে। যাঁর এই বিশ্বকাপে তিনটি পঞ্চাশ হয়ে গেল।