নয়াদিল্লি : ফের লজ্জাজনক পারফরম্যান্স! নারী-পুরুষের সমানাধিকারের প্রশ্নে বিশ্বে ভারতের স্থান ১৪৬টি দেশের মধ্যে ১৩৫ নম্বরে। প্রতিবেশী বাংলাদেশের স্থানও বহু উপরে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের লিঙ্গ বৈষম্য (জেন্ডার গ্যাপ) রিপোর্ট ২০২২ অনুযায়ী লিঙ্গ সমতা অর্জনে বিশ্বের ১৪৬টি দেশের মধ্যে মোদির ভারত ১৩৫ তম স্থানে রয়েছে।
আরও পড়ুন-ইডি অধিকর্তার মেয়াদ মামলা
ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, লিঙ্গ-সাম্যের ক্ষেত্রে এবারও নিজের প্রথম স্থান ধরে রেখেছে আইসল্যান্ড। তালিকায় পরবর্তী স্থানগুলিতে আছে যথাক্রমে ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, নিউজিল্যান্ড এবং সুইডেন। ব্যাপক লিঙ্গ ব্যবধান শ্রমশক্তির ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী মহিলাদের জীবিকার উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে বলে ওই রিপোর্টে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের এই বার্ষিক রিপোর্টে সতর্ক করে বলা হয়েছে, লিঙ্গ ব্যবধান বন্ধ করতে আরও ১৩২ বছর সময় লাগবে। লিঙ্গ-সাম্যর অগ্রগতি কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে এক প্রজন্ম পিছিয়ে গিয়েছে। করোনা পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী লিঙ্গ-সাম্যের স্থিতিকে আরও খারাপ করেছে। সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে ভারতের অবস্থান বেশ খারাপ। লিঙ্গ-সাম্যের ক্ষেত্রে বর্তমানে বাংলাদেশ (৭১), নেপাল (৯৬), শ্রীলঙ্কা (১১০), মালদ্বীপ (১১৭) এবং ভুটান (১২৬) স্থানে রয়েছে। তুলনায় ভারত রয়েছে ১৩৫ স্থানে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পর আছে ইরান (১৪৩), পাকিস্তান (১৪৫) এবং আফগানিস্তান (১৪৬)। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলেছে, ভারতে লিঙ্গ ব্যবধানের স্কোর গত ১৬ বছরে তার সপ্তম সর্বোচ্চ স্তর পৌঁছেছে। যা সবচেয়ে খারাপ দেশগুলির মধ্যে অন্যতম।
আরও পড়ুন-বাঙালি তরুণীকে গুরুগ্রামে ধর্ষণ
লিঙ্গ সাম্যের ক্ষেত্রে ভারত কেন এতটা পিছিয়ে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংক, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক-সহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা বিগত কয়েক বছর ধরে বলে আসছে যে, স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতে যে পরিমাণ আর্থিক উন্নতি হওয়া উচিত ছিল তা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। সে কারণেই ভারতে লিঙ্গ বৈষম্য এত প্রকট। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরাও এ বিষয়ে সরকারকে একাধিকবার সতর্ক করেছেন। তাঁদের পরামর্শ মেনে বিগত দিনে সরকার প্রশাসনিক স্তরে কিছু পদক্ষেপ করলেও তাতে অবস্থার বিশেষ কোনও উন্নতি হয়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকার আইন কানুন বদল করে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সংস্কার করলেও সমাজ ও পরিবারের মানসিকতা বদল করতে পারেনি। ফলে উচ্চশিক্ষা লাভের পরও বহু পরিবার মেয়েদের চাকরির ক্ষেত্রে আপত্তি তোলে। এমনকী, বহু পরিবার এখনও মেয়েদের উচ্চশিক্ষা দিতেও রাজি নয়। এর পাশাপাশি ভারতের বর্তমান শাসক দলের নারীবিদ্বেষী মনোভাবও উল্লেখযোগ্য।