প্রতিবেদন : দেশে পরিবেশগত ক্ষতির বড় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভারতে ইন্দো-গাঙ্গেয় অববাহিকার কিছু এলাকায় ভূগর্ভস্থ জলস্তর ইতিমধ্যেই তলানিতে পৌঁছে গিয়েছে। এরই মাঝে সমগ্র উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর ২০২৫ সালের মধ্যে গুরুতরভাবে কমে যাবে বলে পূর্বাভাস দিল রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট।
আরও পড়ুন-কল্যাণী এইমসে নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগ, ডিরেক্টরকে তলব করল সিআইডি
‘ইন্টারকানেক্টেড ডিজাস্টার রিস্কস রিপোর্ট ২০২৩’ শিরোনামে রাষ্ট্রসংঘের ইউনিভার্সিটি-ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান সিকিউরিটি (ইউএনইউ-ইএইচএস) দ্বারা প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বর্তমান বিশ্ব ৬টি পরিবেশগত সমস্যার দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলি হল ত্বরান্বিত বিলুপ্তি, ভূগর্ভস্থ জলহ্রাস, পর্বত হিমবাহের গলন, মহাকাশের ধ্বংসাবশেষ, অসহনীয় তাপমাত্রা এবং বসবাসের অযোগ্য ভবিষ্যৎ। এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভারতের মতো দেশে প্রায় ৭০ শতাংশ ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলন করে কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এই প্রবণতা শুধু যে বিপজ্জনক তাই নয়, পরিবেশগত ভারসাম্যের গুরুতর অবনতির দিকে নিয়ে চলেছে।
আরও পড়ুন-গাজার মৃত্যুমিছিল এবার চাপে ফেলেছে বাইডেনকে
রাষ্ট্রসংঘের প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, নলকূপগুলিও টিপিং পয়েন্টের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি প্রধান জলাশয় প্রাকৃতিকভাবে কমতে শুরু করেছে। জলের স্তর যেভাবে নিচে নামতে শুরু করেছে তাতে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে শুরু করেছে। সৌদি আরবের মতো কিছু দেশ ইতিমধ্যেই ভূগর্ভস্থ জলের স্তর ঝুঁকিপূর্ণ সীমা অতিক্রম করেছে, ভারত-সহ অন্যরাও এর চেয়ে বেশি দূরে নয়৷
আরও পড়ুন-চূড়ান্ত সময় বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট
রাষ্ট্রসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহারকারীর তালিকায় বিশ্বের বৃহৎ দেশগুলির মধ্যে শীর্ষ সারিতে অবস্থান করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিনের সম্মিলিত ভূগর্ভস্থ জলের ব্যবহারকেও ছাপিয়ে গিয়েছে ভারত। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চল, যা ১৪০ কোটি জনগণের জন্য ‘রুটির ঝুড়ি’ হিসাবে পরিচিত, সেখানে দ্রুত ভূগর্ভস্থ জল নেমে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি ভবিষ্যতে কৃষিক্ষেত্রে বড় বিপদ ডেকে আনতে চলেছে। প্রসঙ্গত, পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার মতো রাজ্যগুলি থেকে দেশের মোট গমের ৮৫ শতাংশ আসে। অথচ পাঞ্জাবের ৭৮ শতাংশ কূপের জলস্তর অত্যধিক নেমে গিয়েছে। সামগ্রিকভাবে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ২০২৫ সালের মধ্যে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর গুরুতরভাবে কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়ে সতর্ক করেছে এই গবেষণামূলক রিপোর্ট।