বেঙ্গালুরু, ১৪ মার্চ : আসিফ ইকবাল তাঁর শেষ টেস্টে এমন বিদায়-সংবর্ধনা পেয়েছিলেন যে, ইডেন গার্ডেন্সকে কোনওদিন ভুলতে পারেননি।
সুরঙ্গা লাকমলও বোধহয় ভাবেননি বিদায় মুহূর্তে এমন কিছু ঘটবে! ২২ টেস্টেই কেরিয়ার থেমে গেল বছর পঁয়ত্রিশের সিংহলি ফাস্ট বোলারের। শেষ ইনিংসে তিনি বুমরার শিকার। কিন্তু চিন্নাস্বামীতে লাকমল বোল্ড হয়ে হওয়ার পর যা ঘটল, সেটাই আসল ক্রিকেট। বোলার বুমরাই সবার আগে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলেন তাঁকে। তারপর ঋষভ, রোহিত, বিরাটরা। মহান খেলাটা আজও জেন্টলম্যান্স গেম এইজন্যই।
আরও পড়ুন-ওয়ার্নকে মরণোত্তর নাইটহুড !
শ্রীলঙ্কার হার মোটামুটি নিশ্চিতই ছিল। শুধু দেখার ছিল সিংহলিরা হারকে কত পিছনে ঠেলতে পারে। তা ডিমুথ করুণারত্নের লড়াকু সেঞ্চুরি (১০৭) বিশেষ কোনও কাজে আসেনি। সোমবার ম্যাচের দ্বিতীয় সেশনে ছয় উইকেট হারিয়ে ২০৮ রানে গুটিয়ে গেল শ্রীলঙ্কার ইনিংস। আগের দিন ওপেনার থিরিমানেকে হারিয়েছিল সিংহলিরা। এদিন নয় উইকেট চলে গেল একটা আস্ত সেশন ও দুটো দিন বাকি রেখে। ২৩৮ রানে বেঙ্গালুরুর গোলাপি টেস্ট ও ২-০ সিরিজ হেরে ফিরছেন করুণারত্নেরা।
আরও পড়ুন-বলে চমকের দাবি হার্দিকের
ভারতের মাটিতে এটা তৃতীয় গোলাপি টেস্ট। আর তিনটি টেস্টই জিতল মেন ইন ব্লু। তবে যেটা জরুরি তথ্য, এই তিন টেস্টের কোনওটাই তিনদিনের বেশি গড়াল না! আমেদাবাদে অবশ্য দু’দিনেই শেষ হয়েছিল ইংল্যান্ড টেস্ট। গার্ডেন সিটির এই উইকেট বিস্তর চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে ব্যাটারদের দিকে। কিন্তু তাতেও শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং ব্যর্থতা চাপা পড়ছে না। প্রথম ইনিংসে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ও দ্বিতীয় ইনিংসে অধিনায়ক করুণারত্নে ছাড়া আর কেউ ভারতীয় বোলিংকে সামলাতে পারেননি।
আরও পড়ুন-পিচ নিয়ে রাজাকে একহাত আক্রমের
শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসে অশ্বিন চার ও বুমরা তিনটি উইকেট নিয়েছেন। ম্যাচে বুমরার আট উইকেট। কিন্তু চিন্নাস্বামীর এই উইকেট সবার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে রেখেছিল। সিমাররা বাউন্স পেয়েছেন। উইকেট নিয়েছেন। আবার স্পিনাররাও অনেকটা করে টার্ন পেয়েছেন। তবে বেঙ্গালুরুর এই টেস্ট অনেকগুলি তথ্য সামনে এনে দিয়েছে। যা ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট তথা রাহুল দ্রাবিড়কে সন্তুষ্ট করবে। যেমন পূজারা-রাহানের জায়গা ভরিয়ে দিয়েছেন হনুমা ও শ্রেয়স। ঋষভ শুধু সিরিজ সেরা হননি, মিডল অর্ডারে ধারাবাহিকতা এনেছেন। আর অধিনায়ক রোহিত শর্মা এখন যা ধরছেন, তাই সোনা হয়ে যাচ্ছে। পুরো সময়ের অধিনায়ক হওয়ার পর থেকে তিনটি টি-২০, একটি একদিনের সিরিজ ও একটি টেস্ট সিরিজে তিনি ক্লিন সুইপ করলেন। তবে হিটম্যানের ব্যাটে সেই ঝাঁজ দেখা যায়নি, এটাও মানতে হবে।
আরও পড়ুন-শুরুতে নেই ২৬ বিদেশি তারকা আইপিএল ২০২২
শ্রীলঙ্কার ইনিংসে করুণারত্নে ছাড়া একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসাবে রান পেয়েছেন কুশল মেন্ডিস (৫৪)। কিন্তু তাতেও তাঁদের ইনিংসে কখনও স্থিরতা আসেনি। অশ্বিন ও বুমরা ছাড়া বাকি তিন উইকেট গেল অক্ষর ও জাদেজার দখলে। কিন্তু সব ভালর মধ্যেও বিরাটের ব্যাটে সেঞ্চুরির খরা কোথায় যেন তাল কেটে দিচ্ছে। ৮৪২ দিন সেঞ্চুরি নেই কিং কোহলির ব্যাটে। সিরিজ জয়েও বিরাট-যন্ত্রণা তাই থেকেই যাচ্ছে!