নয়াদিল্লি : এবার সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে মানবাধিকার সংগঠনগুলিকে জুড়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের নিন্দা করেছেন বিরোধীরা। বৃহস্পতিবার এনআইএ-র ১৩তম প্রতিষ্ঠাদিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান হলেই মানবাধিকারের ধুয়ো তোলে কিছু সংগঠন। মানবাধিকার সংগঠনগুলি সন্ত্রাসবাদীদের আড়াল করতে চায়, এমনই অভিযোগ শাহের। আর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্য সামনে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলি। নিন্দায় বিরোধী রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন-মারিউপোল স্বাধীন ঘোষণা পুতিনের, ওখান থেকে একটা মাছিও যেন গলতে না পারে, রুশ সেনাকে নির্দেশ
মানবাধিকার কর্মীদের অভিযোগ, দেশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অপ্রীতিকর, বিভাজন ও বিদ্বেষমূলক ঘটনায় যেভাবে মানবাধিকার সংগঠনগুলি পথে নেমে পীড়িতদের পাশে দাঁড়ায়, তাতে হয়তো গাত্রদাহ হচ্ছে বিজেপি নেতার। তবে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অনুষ্ঠানমঞ্চে দাঁড়িয়ে কীভাবে মানবাধিকার রক্ষার বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কথা বললেন, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকেই। তাঁদের আশঙ্কা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর ভবিষ্যতে কাজ করতে গিয়ে মানবাধিকার কর্মী এবং সংগঠনগুলিকে আরও বিপদের সম্মুখীন হতে হবে ।
আরও পড়ুন-পর্যটনে আগ্রহ প্রকাশ কেনিয়ার
ঠিক কী বলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ? বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লির আম্বেদকর আন্তর্জাতিক সেন্টারে এনআইএ প্রতিষ্ঠাদিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় তিনি বলেন, দেশে যখনই কোনও সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান চালানো হয়, কিছু সংগঠন মানবাধিকারের ধুয়ো তুলে সামনে চলে আসে। তবে আমি মনে করি, সন্ত্রাসবাদই মানবাধিকার লঙ্ঘনের সবচেয়ে বড় কারণ। শাহ আরও বলেন, ২০১৯ সালে এনআইএ আইন সংশোধন করে আমরা এই তদন্তকারী সংস্থাকে আরও মজবুত করেছি। এনআইএকে সাইবারক্রাইম, অনুপ্রবেশ এবং বিস্ফোরক নিয়ে তদন্তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কাউকে জঙ্গি ঘোষণা করার ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে এনআইএকে।
আরও পড়ুন-দেউচায় বিদেশি লগ্নি
পরে এপ্রসঙ্গে মানবাধিকার সংগঠন ‘সহমতের’ প্রতিষ্ঠাতা শবনম হাসমি পাল্টা বিজেপিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বলেন, মানবাধিকার সংগঠন সম্পর্কে কথা বলতে অস্বস্তি হয় ফ্যাসিবাদী সরকারের। কারণ এরা বিভাজন আর বিদ্বেষের দৃষ্টিতে মানুষকে দেখে, সমাজকে ভাগ করতে চায়। বহু ক্ষেত্রে এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সন্ত্রাসের মিথ্যা অভিযোগে হেনস্তা করা হয়। আর এসব ক্ষেত্রে মানবাধিকার সংগঠনগুলি প্রশ্ন তোলে বলেই বিজেপি সরকারের এত উষ্মা! অমিত শাহরা যে ফ্যাসিবাদী কায়দায় সরকার চালান তাতে যারা বাধা হয়ে দাঁড়াবে তারাই ওদের ক্ষোভের কারণ হবে। এই সরকার চায় না কেউ ওদের নিয়ে প্রশ্ন তুলুক।