প্রতিবেদন : অ্যাডিনো ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের মধ্যেই ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রাদুর্ভাব দেশ জুড়ে। শিশুদের সঙ্গে এই রোগের প্রকোপ ছড়িয়েছে বড়দের মধ্যেও। বহু রোগীকেই হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছে। রাজ্য সরকারের তৎপরতায় এরাজ্যে শিশুদের মধ্যে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণজনিত সমস্যা ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ কিছুটা কমার ছবি ধরা পড়লেও নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে এই ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ আইসিএমআর। অ্যাডিনো ভাইরাসের মতো এই ইনফ্লুয়েঞ্জাও মরশুমি রোগ বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। কিন্তু রোগীদের মধ্যে যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ঋতু পরিবর্তনের সময়ের সাধারণ এই অসুখকে ঘোরালো করে তুলছে বলে তাঁরা মনে করছেন। তাই এ-ব্যাপারে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। সামান্য কারণে চিকিৎসকরা যাতে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরামর্শ না দেন সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। একইসঙ্গে রোগীদেরও মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক খেতে নিষেধ করা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।
আরও পড়ুন-সিপিএমের কীর্তি খবর অপছন্দ তাই তছনছ করা হল মিডিয়া অফিস
এদিকে শিশুমৃত্যুতে পুরোপুরি লাগাম টানা না গেলেও রাজ্য সরকারের তৎপরতায় শিশুদের মধ্যে শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ এবং নিউমোনিয়ার প্রকোপ কিছুটা কমার ইঙ্গিত মিলেছে। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, হাসপাতালের ইন্ডোর ওয়ার্ড হয়তো এখনও শিশুরোগীতে ভর্তি। কিন্তু বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে আউটডোরে জ্বর-সর্দি-কাশি-শ্বাসকষ্টে ভোগা শিশুরোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমছে। এই প্রবণতার প্রতিফলন ইন্ডোর এবং আইসিইউতে পড়তে অবশ্য সপ্তাহখানেক লাগবে। স্বাস্থ্যকর্তাদের আশা, শ্বাসকষ্টের রোগী ধীরে ধীরে কমতে বাধ্য পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ডে।
হাসপাতালে পরিকাঠামো বাড়ার পাশাপাশি ইতিমধ্যে চালু থাকা রাজ্য সরকারের টেলিমেডিসিন প্রকল্প ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’কে সরকার আরও মজবুত করছে।
আরও পড়ুন-দল জিতলেও ট্রোলড রোনাল্ডো
এর ফলে দূরবর্তী হাসপাতালে ভর্তি গুরুতর অসুস্থ রোগীকে বড় হাসপাতালে রেফার না করে বড় হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের থেকে ভার্চুয়াল পরামর্শ নিচ্ছেন অপেক্ষাকৃত ছোট হাসপাতালের চিকিৎসকরা। শিশুদের চলতি অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশনের (এআরআই) চিকিৎসায় টেলি-মেডিসিন পরিষেবায় লাভবান হচ্ছেন রাজ্যবাসী।
আরও পড়ুন-শুধু আন্তর্জাতিক পুরস্কার নয়, বাংলার পর্যটন দেশে মডেল
এদিকে প্রশাসনিক স্তরে সবরকমের তৎপরতা সত্ত্বেও কলকাতার বি সি রায় শিশু হাসপাতালে এদিন ফের তিনটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মৃত তিন শিশুর বয়স ২ মাস থেকে ১১ মাসের মধ্যে। এ নিয়ে গত ৮ দিনে রাজ্যে জ্বর, নিউমোনিয়া এবং অ্যাডিনো ভাইরাসে ৩৩টি শিশুর মৃত্যু হল। এদিন ফের বি সি রায় শিশু হাসপাতাল পরিদর্শন করেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী। তিনি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেন।