প্রতিবেদন : রাজ্য সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শিশুদের মধ্যে এআরএই অর্থাৎ শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ, নিউমোনিয়া এবং অ্যাডিনো ভাইরাসের (Adenovirus) প্রকোপ অনেকটাই কমেছে। সংক্রমণের সমস্যা নিয়ে বর্তমানে হাসপাতালগুলিতে ভর্তির সংখ্যা সাপ্তাহিক ৮০০ থেকে কমে ৬০০-য় এসে দাঁড়িয়েছে। কমেছে শিশুমৃত্যুর গড় হারও। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে একথা জানানো হয়েছে। ওই বুলেটিনে বলা হয়েছে, গত আড়াই মাসে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে ১৩ হাজার ৬১টি অসুস্থ শিশু বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হলেও তার মধ্যে অ্যাডিনো ভাইরাসে (Adenovirus) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে অন্যান্য কোমর্বিডিটি জনিত কারণে। মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata Banerjee) নির্দেশে শিশুদের মধ্যে রোগের প্রকোপ ও প্রাণহানি আটকাতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মাঠে নেমেছে রাজ্য প্রশাসন। প্রতিটি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিকাঠামো বৃদ্ধি করা হয়েছে। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নেতৃত্বে এই সংক্রান্ত যে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে পরিস্থিতির উপরে নজরদারি রেখে তারা উপযুক্ত পদক্ষেপ করছে। গত ১৩ এবং এবং ১৫ তারিখে টাস্ক ফোর্সের পরপর দুটি বৈঠকে নিয়মিত হাসপাতালগুলি পরিদর্শন, সচেতনতা বৃদ্ধিতে আশাকর্মীদের কাজে লাগানো, শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল শিশুদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাস্তানির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী
একনজরে :
* ৩ দিনের বেশি জ্বর * নাক দিয়ে জল পড়া, গলাব্যথা * ঝিমিয়ে থাকা * সারা শরীরে ব্যথা * বমি ও লুজমোশন * দ্রুত শ্বাস নেওয়া
কী করণীয়?
* প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়াতে হবে * ওআরএস খাওয়াতে হবে * জ্বর বেশি হলে প্যারাসিটামল দিতে হবে। ডোজ ১০-১৫ মিলিগ্রাম প্রতিবার। সর্বাধিক দিনে পাঁচবার। ৪ ঘণ্টার ব্যবধানে খাওয়াতে হবে * জ্বর না কমলে বারবার জল দিয়ে গা মোছাতে হবে * নাক বন্ধ হয়ে গেলে নুন-জলের ফোঁটা ব্যবহার করতে হবে * প্রস্রাবের পরিমাণের দিকে নজর রাখতে হবে * বাসক-তুলসীর রস কার্যকর
বিপদের লক্ষণ :
* ৫ দিনের বেশি অতিরিক্ত জ্বর * স্বাভাবিকের থেকে দ্রুত শ্বাস * শ্বাস নেওয়ার সময় বুকের চামড়া ভিতরে ঢুকে যাওয়া * শিশুর খাওয়ার পরিমাণ অর্ধেকের বেশি কমে যাওয়া * দিনে ৫ বারের কম প্রস্রাব * খিঁচুনি, বেহুঁশভাব * রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে
সচেতনতা :
* বারবার সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে * বাড়ি ফিরে দ্রুত জামা-কাপড় বদলাতে হবে * ভিড় থেকে শিশুদের দূরে রাখতে হবে * হাঁচি-কাশির সময় রুমাল দিয়ে মুখ ঢাকতে হবে * জন্মগত সমস্যা, অপুষ্টি, হৃৎপিণ্ডে ফুটো ইত্যাদি থাকলে বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে শিশুকে * অসুস্থ শিশুকে স্কুলে পাঠাবেন না * বড়দের সংক্রমণ হলে শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের থেকে দূরে থাকুন * গরম জলে ভেপার নিতে হবে।