একুশের বিধানসভা ভোটের আগে কলকাতায় একটি কনক্লেভে দিলীপ ঘোষ দুর্গার বংশ পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল দিলীপকে। সেই সময় রাজ্যে বিজেপির মুখ ছিলেন, তাই স্বাভাবিকভাবেই ধরে নিতে হবে বিজেপি “দুর্গা বিরোধী”!
দুর্গা নিয়ে বিজেপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নতুন নয়। আগেও বহুবার এই দৃশ্য দেখা গিয়েছে। গতবছর যখন রাজ্যের ক্ষমতা দখলের তাগিদ ছিল তখন কতই না নাটক করেছিল বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। সল্টলেকের ইজেডসিসি-তে প্রথমবারের মতো ঢাক-ঢোল পিটিয়ে আয়োজিত হয়েছিল বঙ্গ বিজেপির দুর্গাপুজো।
আরও পড়ুন-কথায় কথায় আমলাদের তলব নয়, রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
সেই পুজো উদ্বোধন করতে এসেছিলেন অমিত শাহ। দিল্লি থেকে ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতবারেও এই পুজো নিয়ে প্রবল আপত্তি তুলেছিলেন দিলীপ ঘোষ ও তাঁর শিবিরের নেতারা। দিলীপ ঘোষ জানিয়ে ছিলেন, কোনও রাজনৈতিক দলের কাজ নয় পুজোর আয়োজন করা। তাই ইজেডসিসি-তে যে পুজো হচ্ছে তা বিজেপির কয়েকজন নেতা করছেন, তা দলের পুজো নয়। এবারও প্রবল আপত্তি তুলেছেন তিনি। গতবছরও বিরোধিতা করে এই পুজোয় তিনি ছিলেন না। এবারও থাকবেন না।
কিন্তু রাজ্য বিজেপির নতুন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কিন্তু পুজো করতে বদ্ধ পরিকর।তাঁর লবির নেতাদের নিয়ে সেই আয়োজনও করে ফেলেছেন সুকান্ত। এবার বিজেপির পুজোয় কলকাতায় আমন্ত্রিত সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা।
গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা যাচ্ছে এসব সুকান্তের বুদ্ধিতে নয়, দলের মধ্যে দিলীপ ঘোষকে আরও কোণঠাসা করতে শুভেন্দু অধিকারীর কূটনৈতিক চাল। কলকাঠি নাড়ার মূলে আসলে শুভেন্দু। পুজোকে ঘিরে বঙ্গ বিজেপি শিবিরের আড়াআড়ি বিভাজন এবার সামনে নিয়ে চলে দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদার।
আরও পড়ুন-
কেউ আবার বলছেন,”সংকল্প” রয়েছে, তাই তিন বছর পুজো করতে হয়। সুতরাং, ভক্তি ভরে দেবী দুর্গার আরাধনা নয়, ককিছুটা রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা ও লোকলজ্জা এড়াতে এবারও পুজোর আয়োজন করেছে বিজেপি।
সবমিলিয়ে দুর্গাপুজোকে সামনে রেখে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তুঙ্গে “দুর্গা বিরোধী” বঙ্গ বিজেপির। মা দুর্গাকে নিয়ে কার্যত ছেলেখেলার শুরু করেছেন দিলীপ-সুকান্ত-শুভেন্দুরা।
মা দুর্গাকে কার্যত অপমান করে আসলে বাঙালির আবেগ, শ্রদ্ধা, কৃষ্টি, সংস্কৃতিতেই আঘাত করছে বিজেপি।