আজ ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বুধবারে সংসদে বাজেট (Budget) পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী (Finance Minister)নির্মলা সীতারমণ। এই বাজেট থেকে সাধারণ মানুষের অনেক প্রত্যাশা ছিল। ঠিক কতটা লাভ হল সাধারণের? এবার কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন। (Mamata Banerjee)। এই বাজেটে (Union Budget 2023) গরিবের কোনও উপকার হবে না বলে মনে করছেন মমতা।
আরও পড়ুন-‘নলহাটি তে যে সেতু হল তাকে আমি মা নলহাটেশ্বরী সেতু নাম দিলাম’, উপহার মুখ্যমন্ত্রীর
আজ বীরভূমে সভা থেকে কেন্দ্রকে নিশানা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এই বাজেটে আশার আলো নেই, অন্ধকারের অমাবস্যা আছে। এটা অপরচুনিস্টিক বাজেট। বাজেটে একশ্রেণির লাভ, দরিদ্ররা বঞ্চিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন-নেই ‘জংলাদা, শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
তিনি বলেন, ‘বাজেট না অন্য কিছু। মুখে বলা হচ্ছে যে দারুন নাকি বাজেট হয়েছে। ৩.৭ কোটি বেকার। একটা কথা বেকারদের জন্য বলা নেই। সব বিক্রি করে দিয়েছে। আয়করে (Income Tax) ছাড় দেওয়া হয়েছে। দেশজুড়ে এই নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। এই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে, আয়করে ছাড় দিয়ে লাভ নেই। ওই স্ল্যাব এর নাম ইনফ্লেশন যে বেড়ে গেছে সেটা পুরোটাই লোকসান। ফিউটারিস্টিক বাজেট না এটা, এটা অপর্চুনিস্টিক বাজেট। বাজেটের নাম দরিদ্র হয়েছে বঞ্চিত। একাংশ হয়েছে লাভবান।’
আরও পড়ুন-বাজেটে মহিলা ও প্রবীণ নাগরিকদের বিশেষ সুবিধা, রেলের জন্য থাকছে রেকর্ড বরাদ্দ, দেখুন এক নজরে
কেন্দ্রীয় সরকার বাজেটে আবাস যোজনার বরাদ্দ বাড়িয়েছে । সেই প্রসঙ্গ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যের টাকা কেন্দ্রের কাছে জমা পড়ূবে, সেখান থেকে রাজ্যের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আমার টাকা আমি জমা করছি। সেই টাকা ওরা ফিরিয়ে দেবে। ওরা সেই টাকা দেয় না। সত্যিকারের চোরডাকাতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আপত্তি নেই। কাল সারা দেশ জুড়ে রেইড হয়েছে। কেন টাকা নেই বুঝি? লোকের পকেট মারতে হবে?’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ঘটা করে উজ্জ্বলা প্রকল্পের ঘোষণা হয়েছিল। আজ তার কোনও অস্তিত্বও নেই’। কর্মসংস্থান নিয়ে তিনি বলেন ‘ বাজেটে বেকারদের জন্য কোনও প্রস্তাব নেই। বেকারত্ব দূরীকরণের কোনও প্রস্তাব নেই। লোকসভা ভোটের আগে যে যে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তা পূরণ হয়নি, উপরন্তু বেকারত্ব বেড়ে গিয়েছে।’
আরও পড়ুন-মেয়েদের আইপিএল, ঝুলনকে পেতে জোর লড়াই
তিনি বলেন ‘বিজেপি শাসিত রাজ্য ছাড়া অন্য রাজ্যেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে মঙ্গলবারই বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। গত দুদিন রাজ্যে রয়েছে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল, যাঁরা মিড মিলের অবস্থা খতিয়ে দেখছেন। এখানে তো বিজেপি নেতাদের উইপোকা কামড়ালেও কেন্দ্রীয় দল চলে আসে।’
আরও পড়ুন-শীঘ্রই চালু হবে বালুরঘাট বিমানবন্দর
এদিন মমতা বলেন, ‘সেল্ফ হেলফ গ্রুপ করবে বলছে কেন্দ্র। কিন্তু সেটা তো রাজ্য করে। আমরা ক্ষমতায় আসার সময় ছিল ১ লক্ষ। সেটা ১১ বছরে করেছি ১১ লক্ষ। ওইটাকে যুক্ত করে বলছে। তোমার ক্রেডিট কোথায়? কী করেছ আশার জন্য়, আইসিডিএস, বেকার, কৃষকদের জন্য? বাজেটের নামে দরিদ্ররা হয়েছে বঞ্চিত। একাংশ হয়েছে লাভবান। উজ্জ্বলা যোজনায় গ্যাস পাওয়া যাচছে না। আজ পর্যন্ত কোনও কথা রাখতে পেরেছে কেন্দ্রীয় সরকার!’
আরও পড়ুন-উন্নয়নে নেই, পাওনা দেয় না এই কেন্দ্র ব্যস্ত শুধু রাজনীতি করতে
মমতা এদিন বলেন, ‘কেন বাংলা থেকে ইনকাম ট্যাক্সের টাকা তুলে নিয়ে যায় কেন্দ্র। আমাদের টাকা আমাদের দেওয়া হচ্ছে না। জিএসটির নামে টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আইসিডিএসে ৬০-৪০ করে দিয়েছে। অনেকে ভেবেছিলেন বন্ধ হয়ে যাবে। আশার মেয়েদের আমরা মাইনে দিতে শুরু করেছি। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার কেড়ে নিয়েছে বিজেপি সরকার। সেকারণে বলেছি মাগো সযত্নে আগলে রাখো। কোথায় পাবেন বিনা পয়সায় চিকিৎসা।
ফুড সাবসিডি কমিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। বড় কেলেঙ্কারি করে দিয়েছে। সাউথ ইন্ডিয়ায় কিছু জায়গা আছে যেখানে অন্যভাবে টাকা ইনকাম করে। তামিলনাড়ুও ইনকাম করে। কিন্তু আমরা করতে পারি না।’
আরও পড়ুন-পুরুলিয়াকে বঞ্চিত করেছে গদ্দার, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী দেশনেত্রী : অমর্ত্য
১০০ দিনের টাকা নিয়েও মুখ খুললেন তিনি। মঞ্চ থেকেই তোপ দাগেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্বকে। তিনি বলেন, ‘১০০ দিনের কাজের টাকা দিতে হবে। আমরা ভিক্ষে চাই না। এটা আমাদের অধিকার। এনআরসি করতে দেব না। আমাদের দিদির দূতরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে। সবটা হয়তো সম্ভব নয়। আমার এই সব সামাজিক সংস্কার। বাচ্চা জন্মালেই গাছ, স্কুলে গেলেই পোশাক, জুতো, বড় হলেই স্কলারশিপ।’