প্রতিবেদন : যাদবপুরের ছাত্ররা আদালতে এসে জানাক, কেন ক্যাম্পাসে সিসিটিভি চায় না তারা। সোমবার স্পষ্ট নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের মামলায় পার্টি করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে আদালতের প্রশ্ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কিছু আইন আছে, সেগুলি কি সার্বিকভাবে মানা হয়? না মানা হলে কেন তা হয় না সেটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আদালতকে জানাতে হবে বলে নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। পড়ুয়াদের হস্টেলে থাকার কী নিয়ম আছে তা-ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানোর নির্দেশে দিয়েছে হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। দু’সপ্তাহ পরে পরবর্তী শুনানি। সবমিলিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সহ-সভাপতি সুদীপ রাহার দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে সোমবার নজিরবিহীন পদক্ষেপ করল হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এদিন ছিল এই মামলার শুনানি। শুনানি শেষে ছাত্রনেতা সুদীপ রাহা জানান, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং বহিরাগতের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার দাবিতে এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিছু বাম-অতিবাম ছাত্র সংগঠনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পর্যন্ত তাদের নিয়ে আতঙ্কিত। কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে গেলে আন্দোলনের নামে ঘেরাও, পথ অবরোধ, আমরণ অনশনের হুমকি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দেয় তারা। একটা সময় সিসিটিভি থাকলেও তা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা চাই, সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই ক্যাম্পাসে সিসিটিভি বসাতে হবে। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশের ক্ষেত্রে আই-কার্ড চেক করাও জরুরি। এটাই আমাদের আবেদন।
আরও পড়ুন-পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী
এদিকে, যাদবপুরে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ মামলায় রাজ্যপালকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগে রাজ্যপালের পদক্ষেপের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা দায়ের করেছে রাজ্য। সোমবার এই মামলারও শুনানি হয়। পরের শুনানি দু’সপ্তাহ পরে।
অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাহু সোমবার কার্যত শীতল অভ্যর্থনা পেলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। দায়িত্বগ্রহণের প্রথম দিনে রেজিস্ট্রার বা সহকারী রেজিস্ট্রার, কাউকেই দেখা গেল না তাঁর সঙ্গে। এক আধিকারিককে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে দেখলেন ক্যাম্পাস, হস্টেল। ডাকলেন অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটির বৈঠক। সোমবার ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে আসেন পুলিশের অপরাধ বিশেষজ্ঞরা। আসেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরাও। মৃত ছাত্রের সম-ওজনের একটি পুতুল এনে হস্টেলের উপর থেকে নিচে ফেলে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। পাশাপাশি ইউজিসির কাছে পাঠানো বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় দফার উত্তরেও সন্তুষ্ট নয় কর্তৃপক্ষ। বেশকিছু প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। আবারও কোথাও উত্তরই দেওয়া হয়নি।