অশান্ত উত্তর এখন শান্ত। মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের দায়িত্ব নেওয়ার পরই উন্নয়নকে দক্ষিণের সঙ্গে সমানতালে পৌঁছে দিয়েছেন উত্তরের জেলায়। রাস্তাঘাট, পরিকাঠামো, চিকিৎসা ব্যবস্থা থেকে সামাজিক প্রকল্প— কাজ হয়েছে প্রতিটি ক্ষেত্রে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা : জেলার উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। জলপাইগুড়ি জেলায় সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণে কাজ হয়েছে। গ্রামগুলোর সঙ্গে শহরের যোগাযোগ সুগম করতে ৮০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১৮৪টি রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে ১০৭ কোটি টাকায়। যার অনেকগুলোর কাজই হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন-খরাক্লিষ্ট পুরুলিয়া জেলা এখন সজল আর গতিময়
সামাজিক প্রকল্প : মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের মানুষের জন্য একাধিক সামাজিক প্রকল্প চালু করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম হল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। জেলায় প্রায় এক লাখ মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পাচ্ছেন। আরও এক লক্ষ মহিলা আবেদন করেছেন। তাঁরা শিগগিরই পেয়ে যাবেন। সেই সঙ্গে কন্যাশ্রী, রূপশ্রীতে বহু মেয়ে উপকৃত। সবুজসাথী সাইকেলে পেয়েছে প্রায় সমস্ত স্কুলছাত্রী। বার্ধক্যভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাও পেয়েছেন বহু মানুষ।
শিক্ষা : শিক্ষাক্ষেত্রে জেলা জুড়েই ব্যাপক কাজ হয়েছে। জেলার রাজগঞ্জ ব্লকে হস্টেল কাম স্কুলঘর তৈরি করা হয়েছে ১০ কোটি ২১ লাখ টাকায়। ২৫৩ কোটি টাকায় জলপাইগুড়িতে মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে ইতিমধ্যে পঠন-পাঠন শুরু হয়ে গিয়েছে। বানারহাটে হিন্দি কলেজ তৈরি করা হয়েছে। ১০০-র বেশি আইসিডিএস সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। জেলার ছেলেমেয়েদের কারিগরি শিক্ষা দিতে ৯ কোটি টাকায় মেটেলিতে আইটিআই কলেজ তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-দলে নেই রিঙ্কু,উত্তাল গণমাধ্যম, বার্তা দিলেন তরুণ নাইটও
স্বাস্থ্য : প্রাথমিক থেকে সুপার স্পেশালিটি, চিকিৎসাক্ষেত্রে বহু উন্নতি হয়েছে। ৬ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকায় সামসিং প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। জলপাইগুড়িতে অত্যাধুনিক মর্গ তৈরি করা হয়েছে। ময়নাগুড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আইসিইউ যুক্ত ১০০ শয্যার হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। এছাড়াও প্রত্যেকটি গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নত পরিষেবার জন্য সেগুলিকে নতুনভাবে সাজানো হচ্ছে।
পানীয় জল : পাহাড়ে পানীয় জল একটা বড় সমস্যা। তৃণমূল সরকার লাগাতার এ নিয়ে কাজ করে চলেছে। জেলার প্রত্যেকটি ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকায় জলের ট্যাঙ্ক তৈরি করা হয়েছে। ধূপগুড়ি ব্লকের ভাণ্ডানিতে ৫ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা ব্যয় করে জলের ট্যাঙ্ক বসানো হয়েছে।
আরও পড়ুন-ধোনিদের সেই জয়ের পুনরাবৃত্তি চান ঝুলন, শহরে বিশ্বকাপ
ময়নাগুড়ির খাগড়াবাড়ি ২ নং অঞ্চলে ৬ কোটি টাকায় একটি জলের ট্যাঙ্ক বসানো হয়েছে। জেলার প্রতিটি এলাকায় বাড়ি বাড়ি জল দেওয়ার জন্য পাইপলাইন পাতার কাজ প্রায় শেষ। কিছু এলাকায় জল ইতিমধ্যে পৌঁছেও গিয়েছে।
পরিকাঠামো : জলপাইগুড়িতে বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাতে ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩২ কেভি সাব-স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। চা-বাগান শ্রমিকরা বাম আমলে ছিল অবহেলিত। মুখ্যমন্ত্রী তাদের উন্নয়নের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন। ১৯ কোটি ২৮ লাখ টাকায় চা-সুন্দরী প্রকল্পে শ্রমিকদের জন্য ১২৫৪টি ঘর তৈরি করা হয়েছে। চা-বাগানের সকল শ্রমিককে পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের উদ্যোগে জেলার সমস্ত বন্ধ বাগান খোলা হয়েছে।