নকীব উদ্দিন গাজী, সুন্দরবন: ভৌগোলিক পরিবর্তনে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় গজিয়ে উঠেছিল একটি দ্বীপ। বর্তমানে সেই দ্বীপের নাম সাগরদ্বীপ। আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগে গড়ে উঠেছিল এই দ্বীপ। তখন তা ছিল ঘন জঙ্গলে ঢাকা। রুটি-রুজির টানে সুন্দরবনের উপকূলবর্তী এলাকার মানুষ এই দ্বীপে এসে কাঠ ও মধু সংগ্রহ করতেন। তখন জঙ্গলের হিংস্র জীবজন্তুর হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে একটি বটবৃক্ষের তলায় পূজার্চনা করে জঙ্গলে যেতেন এলাকাবাসীরা।
আরও পড়ুন-রেশনে কারচুপি রুখতে আসছে ই-ওয়েট যন্ত্র
মানুষের বিশ্বাস ছিল, বটবৃক্ষের তলায় পুজো অর্চনা করায় হিংস্র জীবজন্তুদের আক্রমণে প্রাণ হারানোর সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। তারপরই উপকূলবর্তী এলাকার মানুষ জঙ্গল পরিষ্কার করে সাগরদ্বীপে বসবাস শুরু করেন। সাগরদ্বীপের এক বাসিন্দা নিরঞ্জন পাত্র স্বপ্নাদেশ পান। সেইমতো তিনি ঘন জঙ্গল পরিষ্কার করে মন্দির তৈরি করে দেবী মূর্তির প্রতিষ্ঠা করেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগরের ধসপাড়া এলাকায় গড়ে ওঠে মন্দির। এই মন্দির আদি কালীমন্দির নামে পরিচিত। তারপর থেকে ওই মন্দিরে কালী পুজাে হয়ে আসছে। জাগ্রত এই কালীমন্দিরে মনস্কামনা জানাতে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মানুষ ছুটে আসেন পুজো দিতে। প্রতিবছর কালীপুজোর দিন জাঁকজমকের সঙ্গে গঙ্গাসাগরে আদি কালীমন্দিরে পূজিতা হন মা কালী।
আরও পড়ুন-বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে সরব কাকলি, রথীন
প্রতিদিনই এই মন্দিরে নিত্য পুজোর ব্যবস্থা রয়েছে এছাড়াও প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার ও শনিবার বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। মন্দিরের প্রধান সেবায়েত প্রকাশ পণ্ডা বলেন, সাগরদ্বীপ গড়ে ওঠার পর থেকেই মন্দিরে কালী মায়ের পূজো শুরু হয়েছিল। আমাদের পূর্বপুরুষ এই মন্দিরে মায়ের সেবা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। স্থানীয় বাসিন্দা মধুসূদন মণ্ডল বলেন, এই বটগাছের নীচেই মায়ের মূর্তি ছিল। স্বপ্নাদেশের পর মন্দির প্রতিষ্ঠা করে পুজো হচ্ছে।