প্রতিবেদন : গ্রেফতারি থেকে বাঁচতে কীভাবে বিজেপির সঙ্গে দল করেছিল গদ্দার সোমবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হাঁটে হাড়ি ভাঙলেন জয়প্রকাশ মজুমদার। কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেললে ঠিক কী শর্তে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন দলবদলু মিরজাফর? প্রাক্তন বিজেপি নেতা তথা তৃণমূলের বর্তমান রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার এদিন তারিখ ধরে ধরে গদ্দারের বিজেপিতে যোগদান রহস্য ব্যাখ্যা করেন।
আরও পড়ুন-বন্দে ভারতে খাবার নেই, তীব্র ক্ষোভ
তাঁর কথায়, ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর অমিত শাহের সঙ্গে পাঁচতারা হোটেলে ডিল করে দলবদলু শুভেন্দু। তখন আমি বিজেপির নেতা হিসেবে আরও অনেকের মতো সেখানে হাজির ছিলাম। জয়প্রকাশের সংযোজন, তৎকালীন রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেনন, তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়-সহ আরও অনেকে ছিলেন। সকলের সামনেই গদ্দার অমিত শাহর কাছে কাতর আর্জি জানিয়েছিল ছিল, নারদা ও সারদা মামলায় যেন তাঁকে জেলে যেতে না হয়। সিবিআই-ইডি যেন না ডাকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন গদ্দার যা চাইছে, তেমনটাই হবে। তবে পাল্টা তৃণমূল ভাঙানোর শর্ত দেন অমিত শাহ। শুভেন্দু বুক ঠুকে বলেছিল, দশদিনের মধ্যে ৭০ জন বিধায়ককে ভাঙিয়ে আনবেন। যদিও শুভেন্দু সেটা পারেনি। তবে অমিত শাহ তাঁর কথা রেখেছেন। এরপরই ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর মন্ত্রিত্ব থেকে থেকে ইস্তফা দেয় শুভেন্দু। ১৬ ডিসেম্বর বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করে। আর ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে বিজেপির সভায় অমিত শাহের পা ধরে দলবদল করেন। জয়প্রকাশ মজুমদার স্মৃতিচারণ করে বলেন, এই তারিখের অনেক আগেই বিজেপিতে যোগদান করার জন্য কথা চালাচ্ছিল শুভেন্দু। কিন্তু অমিত শাহের সঙ্গে জেল না খাটার ডিল পাকা না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকে।
আরও পড়ুন-গুণমান যাচাই না করে চাল বণ্টন : সতর্কবার্তা
জয়প্রকাশের সংযোজন, ২০১৯-এ দু’বার আরএসএস মুখপত্রে মুকুল রায়-সহ তৎকালীন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীকে দলে নেওয়ার বিষয়ে প্রবল আপত্তির কথা লেখা হয়েছিল। পাশাপাশি এ রাজ্যে আরএসএসের এক শীর্ষনেতা দাবি করেছিলেন, দক্ষতা, গ্রহণযোগ্যতা, বিশ্বাসযোগ্যতা কোনওটাই নেই শুভেন্দুর। সেইমতো বঙ্গ বিজেপিতে তৎকালীন জুটি সুব্রত চট্টোপাধ্যায় ও দিলীপ ঘোষও তাঁদের আপত্তির কথা জানান। পরে সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়া হয়। এবং শুভেন্দুকে যোগদান করানো হয়।
আরও পড়ুন-অভিষেককে স্বাগত জানাতে জোর প্রস্তুতি
এদিন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষও দলবদলু মিরজাফরের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, সুদীপ্ত সেন আদালতে জানিয়েছেন সবটা। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, কাঁথি পুরসভায় সরদাকর্তার থেকে ৫০ লক্ষ টাকা ড্রাফটে ও ২০ লক্ষ টাকা নগদে নিয়েছে। পুরসভায় সারদার টাকা আছে না নেই? কাঁথি পুরসভার সেই দুর্নীতির নথি এদিন প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন তিনি। সেই সঙ্গে মিডিয়ার ভূমিকা দেখেও তিনি অবাক। নথি তো ভুল কথা বলবে না। তখন সারদা-কর্তাকে শুভেন্দু নিয়ে গিয়েছে, সৌমেন্দু চেয়ারম্যান ছিল। কুণালের সংযোজন, বিষয়টি কোর্টে আছে। কিন্ত সিবিআই কেন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ইডি এদিক-ওদিক যাচ্ছে। কিন্তু কাঁথি পুরসভায় যাচ্ছে না।