কেশব বন্দ্যোপাধ্যায় : কোচ হিসেবে রবি শাস্ত্রী সফল। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটের হট সিটে বসে ওঁর আচরণ সবসময় ঠিক হয়েছে বলে মনে করি না। ভারতীয় দলের হেড কোচ মানে আপনার দিকে সর্বক্ষণ মিডিয়ার সার্চ লাইট। এই চেয়ারের প্রোটোকল রক্ষা করা উচিত ছিল। যা শাস্ত্রীর সময় হয়নি।
আরও পড়ুন : শহরে এলেই তার রসগোল্লা চাই
দেখুন, কেউ একটা দায়িত্ব থেকে সরে গেলে তাঁর সম্পর্কে ভাল ভাল কথা বলাই রীতি। আর শাস্ত্রী তো কোচ হিসেবে যথেষ্ট সফল। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে সিরিজ জিতে এসেছেন। ইংল্যান্ডে এগিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এসবের পর তাঁর সম্পর্কে ‘বিরাট’স ম্যান’ প্রচার শাস্ত্রীর সম্মান বাড়ায়নি।
ক্রিকেটার শাস্ত্রী ইউটিলিটি ক্রিকেটার ছিলেন। আমার বরং অনেক সময় মনে হয়েছে, লোকটা ক্রিকেটার হিসাবে প্রাপ্য জায়গা পায়নি। কিন্তু ভারতীয় দলের কোচ হওয়ার পর অহেতুক বিতর্কে না জড়িয়ে আমি ভারতীয় দলের কোচ, এটা ওঁর মাথায় রাখা উচিত ছিল। কারণ, ভারতের কোচ হওয়া মানে আপনার পদক্ষেপের উপর সবার নজর থাকবে।
এই যে শাস্ত্রী ইংল্যান্ডে চূড়ান্ত কোভিড পরিস্থিতিতেও বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে বিরাটদের ডেকে নিয়েছিলেন, সেটা ঠিক হয়নি। নিজে আক্রান্ত হয়ে সফরের শেষদিকে দলের সঙ্গে থাকতে পারেননি। আমার তো তখন বিরাটদের নিয়েও ভয় করছিল। ওরা না করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়ে! আরও অবাক হয়েছি এটা জেনে যে, এহেন অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য বোর্ডের কোনও অনুমতিই নাকি নেওয়া হয়নি।
অধিনায়ক বিরাট এত মন-মর্জিমাফিক চলতেই পারত না, যদি না শাস্ত্রীর প্রশ্রয় থাকত। আমার শাস্ত্রীকে খুব উদ্ধত মনে হয়েছে। আমি যা বুঝব, তাই করব। সেদিন টিভিতে এক ইন্টারভিউয়ে শাস্ত্রী বললেন, আমি যা করেছি, সেটা ক্রিকেটের জন্য। আমার তো মনে হল, তুমি শুধু বিরাটের কথা শুনেই চলেছ। না হলে সাড়ে চার বছরে একবারও দেশের সেরা স্পিনার অশ্বিনকে সাদা বলের ক্রিকেটে দরকার মনে হল না! কোচকে কিন্তু নিজের জায়গা ঠিক রাখতে হয়। তবু বলব, লোকটা ক্রিকেট বোঝে। সাত বছরে ভারতীয় ক্রিকেটকে অনেক সাফল্য দিয়েছে। আমরা বিদেশে মাথা তুলে খেলতে পারছি। সিরিজ জিতে আসছি। এটা কম নয়। এইজন্য কোচ শাস্ত্রীকে বাহবা দিতেই হবে।
( লেখক মহেন্দ্র সিং ধোনির ছোটবেলার কোচ। লেখাটি সাক্ষাৎকারভিত্তিক )