সৌম্য সিংহ : কাউন্সিলর হিসেবে কাজ করেছেন মাত্র দেড় বছর। ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর হিসেবে অভিজ্ঞতাও দেড় বছরের। সব মিলিয়ে জনসেবার সুযোগ পেয়েছেন তিন বছর। কিন্তু এই সীমিত সময়ের মধ্যেই অমিত সিং প্রমাণ করেছেন নিজের কর্মতৎপরতা। আদতে ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। ম্যানেজমেন্টের এই শিক্ষাটা তিনি নিখুঁতভাবে প্রয়োগ করতে চেষ্টা করেছেন ১১৭ নম্বর ওয়ার্ডের উন্নয়নের কাজে, জনকল্যাণমূলক পরিকল্পনার বাস্তবায়নে। এই অমিত এবারেও এই ওয়ার্ড থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে ভোটপ্রার্থী। টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড থেকে শুরু করে বি এল সাহা রোড, বুড়ো শিবতলা, এস এন রায় রোড— প্রচারে বেরিয়ে এলাকায় এলাকায় মানুষের কাছে পেশ করছেন নিজের কাজের খতিয়ান। কখনও প্রশ্নের উত্তরে, আবার কখনও বা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই, হাসিমুখে। সিরিটি থেকে মহাবীরতলা পর্যন্ত বি এল সাহা রোড— তিন লেনের রাস্তা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের সঙ্গে সরাসরি সংযোগকারী নতুন ব্রিজ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে দিয়েছে নতুন মাত্রা। চেহারা বদলে গিয়েছে বস্তির। ক্যানালের গা ঘেঁষে শুধুমাত্র নতুন রাস্তা নির্মাণই নয়, পাঁচতলা বাড়িতে পুনর্বাসনেরও ব্যবস্থা হয়েছে বস্তিবাসীর। নিচে বিশাল হলে পুর পরিষেবার আয়োজন। বুকভরে অক্সিজেন নেওয়ার জন্য নতুন সাজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে হিন্দুস্থান পার্ক এবং রাজনন্দিনী পার্ককে। খেলাধুলোর সুযোগ আরও প্রসারিত করতে নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে শহিদ ভগৎ সিং নামাঙ্কিত খেলার মাঠ।
আরও পড়ুন : প্রশাসনিক বৈঠক থেকে একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস মুখ্যমন্ত্রীর,
মাত্র ৫ বছরেই বাম জমানায় অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া একটি ওয়ার্ডের ভোল বদলে দিয়েছেন ১২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের বিদায়ী কাউন্সিলর রাজীব দাস। বেহালা পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত এই ১২৪ নম্বর ওয়ার্ড। ২০১৫ সালে এই ওয়ার্ড থেকে প্রথমবার কাউন্সিলর হন রাজীব দাস। তার আগে এই এলাকা ছিল নামেই কলকাতা। উন্নয়নের কোনও চিহ্নই ছিল না। ওয়ার্ড জুড়ে কাঁচা রাস্তা, খানাখন্দ, ছিল না পানীয় জল, নিকাশি। একটু বৃষ্টিতেই জমত জল। এটাই ছিল ১২৪ নম্বর ওয়ার্ডের চেনা ছবি। সেই জায়গা থেকে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ শুরু করে ৫ বছরে অনেকটাই ভোল বদলে দিয়েছেন রাজীব। পুরস্কার হিসেবে এবারও ১২৪ নম্বর ওয়ার্ডে রাজীবই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী। দায়িত্ব নেওয়ার পরই সবার প্রথম বাড়ি বাড়ি বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন রাজীব। গত ৫ বছরে সেই কাজে তিনি প্রায় একশো ভাগ সফল। নিকাশিও অনেকটা উন্নত করা গিয়েছে বলে দাবি রাজীবের। ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পেয়েছেন একশো শতাংশ মানুষ। দ্বিতীয় ডোজের হার এরই মধ্যে প্রায় সত্তর শতাংশ। একদা পিছিয়ে পড়া বঞ্চিত ওয়ার্ড এখন আলো ঝলমলে। রাস্তাঘাট আগের থেকে উন্নত। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পাশাপাশি নিয়মিত চিকিৎসকও মেলে। তবে রাজীবের আক্ষেপ, বেহালা পূর্বের প্রাক্তন বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায় যদি পাঁচ বছর এলাকায় থাকতেন, তাহলে ১২৪ নম্বর ওয়ার্ডের উন্নয়ন আরও গতি পেত। কিন্তু তাঁর অনুপস্থিতিতেও পরিষেবায় কোনও ব্যাঘাত ঘটতে দেননি কাজের মানুষ রাজীব।