প্রতিবেদনঃ কিছু জট কাটল, কিছু কাটল না। তবে ইস্টবেঙ্গল যে এবার আইএসএলে খেলতে পারছে তার জন্য খুশি ক্লাবের প্রাক্তনী থেকে কর্তা, সমর্থকরা। ইস্টবেঙ্গলের দাবি, যে টার্ম শিট নিয়ে এত বিরোধিতা ছিল ক্লাব কর্তাদের, তা এবার প্রযোজ্য হচ্ছে না। অর্থাৎ পুরনো চুক্তিতেই খেলবে লাল-হলুদ। তবে তাঁবুর পূর্ণ অধিকার বা ক্লাব হস্তান্তর নিয়ে কর্তাদের শুরু থেকে যে আপত্তি ছিল, তা নাকি আপাতত মিটে গিয়েছে। যদিও এই ব্যাপারে লগ্নিকারী সংস্থা শ্রী সিমেন্টের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ইস্টবেঙ্গল কর্তারা বলছেন, ‘‘ফুটবল বাঁচল, ক্লাব হস্তান্তর আটকানো গিয়েছে। আগের চুক্তিতেই আমরা আইএসএল খেলছি। লক্ষ লক্ষ সমর্থকের কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়ে জট খুলেছেন, তার জন্য তাঁকে অনেক ধন্যবাদ। আমরা ওনার কাছে কৃতজ্ঞ’’।
আরও পড়ুন- বাংলার মহিলাদের “ভিখারি” সম্বোধন করে বিপাকে দিলীপ ঘোষ, হল এফআইআর
সমস্যা তো মিটল। আইএসএল খেলবে দল। যদিও কলকাতা লিগ খেলার সম্ভাবনা খুবই কম। ৩১ অগাস্ট শেষ হয়ে যাবে ফিফার ট্রান্সফার উইন্ডো। হাতে এক সপ্তাহেরও কম সময়। এর মধ্যে কীভাবে দলগঠন সম্ভব? ভাল মানের বিদেশি নির্বাচনই বা কীভাবে হবে? লগ্নিকারী সংস্থার কর্ণধার হরিমোহন বাঙ্গুর ফোন ধরেননি। শ্রী সিমেন্টের কলকাতার প্রতিনিধিরও মুখে কুলুপ। তবে লগ্নিকারীর ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, বেশ কিছু দেশি-বিদেশি ফুটবলারের সঙ্গে কথাবার্তা এগিয়ে রাখা হয়েছে। ৩১ অগাস্টের পর ফ্রি ফুটবলারদেরই সই করানো যাবে। অথবা অন্য কোনও আইএসএল ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে লোনে ফুটবলার নেওয়া যাবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে লড়াকু বা শক্তিশালী দলগঠন কার্যত অসম্ভব। দলগঠন প্রক্রিয়া পুরোপুরি শ্রী সিমেন্ট দেখায় ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের এ নিয়ে কিছু করার নেই।
আরও পড়ুন- দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচি থেকে বাদ পড়ল মহাশ্বেতা দেবীর ছোটগল্প ‘’দ্রৌপদী’’
লাল-হলুদের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বলেছেন, ‘‘শ্রী সিমেন্ট যদি চায়, আমরা ওদের ভাল দল গড়ার জন্য সহযোগিতা করতে পারি। কিন্তু আমরা উপযাজক হয়ে কিছু বলব না। দল গড়ার জন্য আমাদের প্রাক্তন ফুটবলাররাও সাহায্য করতে পারেন। অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় একটা দল তৈরি করেছেন। ওনার কাছে ফুটবলারদের তালিকা রয়েছে। শ্রী সিমেন্ট চাইলে আমরা সেই তালিকা ওদের হাতে তুলে দিতে পারি। সেই যখন দল গড়তে হচ্ছে, তখন তিন মাস আগে তো দলগঠনের কাজ শুরু করে দিতে পারত! স্পোর্টিং রাইটস তো ওদের হাতেই ছিল’’।
আরও পড়ুন- প্রাক্তনীদের সঙ্গে বৈঠক করলেন তৃণাঙ্কুর
লাল-হলুদের ঘরের ছেলেরা খুশি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে এবারের মতো জট কেটে যাওয়ায়। প্রাক্তন ফুটবলার মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে অনেক ধন্যবাদ উনি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে ফের খেলার সুযোগ করে দিলেন। তবে জানি না, কী দল এবার হবে! আর হাতে সময় নেই। ভাল ফুটবলার পাবে কোথায়? তবু ভাল লাগছে আমাদের সবার প্রিয় ক্লাব দেশের সেরা লিগে খেলতে পারছে’’। আর এক প্রাক্তন অতনু ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না। উনি সব সময় ক্লাবগুলোর পাশে থাকেন। এবারও কঠিন সময়ে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে সঙ্কট থেকে উদ্ধার করলেন। তবে একটা ব্যাপার বলতে চাই, আইএসএলে খারাপ ফল হলে তার দায় শ্রী সিমেন্টকেই নিতে হবে। স্পোর্টিং রাইটস হাতে নিয়েও ওরা দল গঠন করেনি। এটা একটা অপরাধ’’। লাল-হলুদ সমর্থকদের মধ্যেও খুশির হাওয়া। তাদের প্রিয় দল ফের মাঠে নামার সুযোগ পাচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে বিভিন্ন ফ্যান ফোরাম।