প্রতিবেদন : সাইবার অপরাধ নির্মূল করতে কলকাতা পুলিশের মূল লক্ষ্য এবারে জামতাড়া গ্যাং। এই অপরাধচক্রের কিংপিনদের খুঁজে বের করতে জামতাড়া, গিরিডি, ধানবাদেও নিয়মিত হানা দিচ্ছে কলকাতা পুলিশ। সবমিলিয়ে বিভিন্ন চক্রের মোট ৩১টি মাথাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এইসব অঞ্চল থেকে। ভেঙে দেওয়া হচ্ছে সাইবার ক্রাইমের উৎসস্থল।
আরও পড়ুন-পাঁচ হাজার সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রে টেলিমেডিসিন
পুলিশ রিপোর্ট বলছে, গত এক বছরে কলকাতা এবং লাগোয়া অঞ্চলে যাবতীয় সাইবার প্রতারণার ৩০ শতাংশেরই উৎস এই জামতাড়া। ২০২২-এ এই অপরাধে ধৃত প্রতি ৬ জনের মধ্যে একজনেরই শিকড় জামতাড়াতেই। কলকাতা পুলিশ গত ডিসেম্বরেই বিশেষ অভিযান চালিয়ে জামতাড়ায় জালে ফেলেছে মোট ১৫ জন সাইবার প্রতারককে। এই প্রতারণাচক্রের মূল লক্ষ্যই ছিলেন মহানগরীর প্রবীণ নাগরিকরা। সাধারণত ভুয়ো ইলেকট্রিক বিল সামনে রেখে বিদ্যুৎসংযোগ ছিন্ন করার ভয় দেখিয়ে এই প্রতারকরা ফাঁদে ফেলত বয়স্ক মানুষদের। হাতিয়ে নিত মোটা অঙ্কের টাকা।
আরও পড়ুন-সেপ্টেম্বরেই ফের ভারত-পাক দ্বৈরথ
পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, এইসব প্রতারণাচক্রের লোকেরা এরাজ্যে ঢুকে বাড়িভাড়া নেয় সাধারণত কলকাতার আশপাশে শহরতলি এলাকায়। তারপরে লোকাল সোর্সের সাহায্যে শুরু করে লোক-ঠকানোর অপারেশন। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, এই প্রতারকচক্র কিন্তু সাধারণত ভাড়াবাড়ি বা কোনও অফিস থেকে জাল ছড়ায় না। অপারেশন চালায় কোনও পার্কিং লট বা পাবলিক প্লেস থেকে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের অবস্থান জেনে চিহ্নিত করা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। সবচেয়ে বড় কথা, সাইবার প্রতারণার কিন্তু কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। নিত্যনতুন কৌশলে সপ্তাহের পর সপ্তাহ, এমনকী মাসের পর মাস ধরে এরা চালাতে পারে কোনও বিশেষ অপারেশন।
আরও পড়ুন-জি২০ নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করবে ইএম বাইপাস
প্রতারণার কাজে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ক্যুরিয়র সার্ভিসকে ব্যবহার করে থাকে এরা। কিন্তু কখনওই নিজেদের অস্থায়ী ঠিকানা জানায় না তারা। ক্যুরিয়র সার্ভিস অফিসে গিয়েই যাবতীয় কাজকর্ম সুকৌশলে সেরে নেয় প্রতারকরা। কলকাতা এবং বিধাননগরের বিভিন্ন ডেরায় আচমকা অভিযান চালিয়ে ভিনরাজ্যের বেশ কিছু প্রতারককে গ্রেফতার করে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই এখন জামতাড়া, গিরিডি, ধানবাদের কিংপিনদের খুঁজে বের করছে কলকাতা পুলিশ।