সিকিমের (Sikkim) ভয়াবহ স্মৃতি কাটার আগেই অসম ও অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তে একটি নির্মীয়মাণ নদী বাঁধের কাছে ভয়াবহ ধস নেমেছে। সুবনসিরি নদীর (Subansiri river) উপর নির্মিত ২০০০ মেগাওয়াটের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ধসের ফলে নদীর গতিপথ বদলে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, নদীর জলপ্রবাহে হ্রাস দেখা দিয়েছে। এই কারণেই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে জলের ঘাটতি দেখা দেওয়ার আশঙ্কা প্রবল। এই ভূমিধসের কারণে এলাকাবাসীরা রীতিমত আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। বিক্ষোভ শুরু করেছেন সেখানে স্থানীয়রা। সুবনসিরিতে হঠাৎ এই জলের প্রবাহ হ্রাসের কারণে রীতিমত উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন তারা। যেকোনো সময় বিপদ ঘটতে পারে তাই স্থানীয়দের অনেকেই রাত জেগে নজরদারি চালাচ্ছেন। আতঙ্কে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানোও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিপদের আশঙ্কায় নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন-ফের অশান্ত মণিপুর, খুন এসডিপিও, ‘ঠান্ডা মাথায় হত্যা’
জানা গিয়েছে, ২০০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধটি অরুণাচল প্রদেশে বড় বাঁধগুলির মধ্যে অন্যতম। হঠাৎ করেই এই ভূমিধসের ফলে সুবনসিরি নদীতে একটি ডাইভারশন টানেল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মাছ ধরা, স্নান এবং নৌকা চালানোর মতো যেকোন কাজ বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। গবাদি পশু নদী থেকে দূরে রাখা হচ্ছে। ভূমিধসের একটি ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, উপর থেকে বড়-বড় পাথর প্রায় ৩০০ মিটার নীচে পড়ছে। জাতীয় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প কর্পোরেশন এই বিষয়ে জানিয়েছে, সুবনসিরি নদীতে ভূমিধসের কারণে এর আগে চারটি টনেল বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন-১০০ টাকার উপরে বাড়ল এলপিজি সিলিন্ডারের দাম
অরুণাচল প্রদেশের বাঁধের এই ধস আসামের লখিমপুর জেলায় ভূমিধস কর্তৃপক্ষকে আতঙ্কিত করেছে। এনএইচপিসি একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে সন্ধ্যার মধ্যে নদীটি তার স্বাভাবিক প্রবাহে ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রতি সেকেন্ডে ৯৯৭ ঘনমিটার নদীর বর্তমান প্রবাহ জলাধারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে যে সন্ধ্যার মধ্যে জলস্তর ১৪৫ মিটারে পৌঁছে যাবে এবং যদি নিজস্ব গতিবিধি ফিরে পাবে।
আরও পড়ুন-ব়্যাগিংয়ের অভিযোগ কলকাতার হেরিটেজ কলেজে, তদন্তে পুলিশ
গত এক দশকে, বাঁধের নির্মাণ কর্মীরা বিরোধীশিবির এবং স্থানীয়দের বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছিল। গত তিন বছরে, প্রকল্পের জায়গাটি চারটি বড় ভূমিধসের শিকার হয়েছে। এনএইচপিসি জানুয়ারী ২০০৫ সালে প্রকল্পটির নির্মাণ শুরু করেছিল, কিন্তু বিক্ষোভের কারণে ২০১১ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে কাজ স্থগিত থাকে। ২০২০ সালে একটি কোম্পানির অনুমান অনুসারে, ২০১২ সাল থেকে প্রকল্পের ব্যয় ৬,২৮৫ কোটি থেকে প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকা বেড়েছে।