চলে গেলেন চিবুজোর, শোকার্ত চিমা-এমেকা

Must read

প্রতিবেদন : আট ও নয়ের দশকে ময়দানে ছিল একটা চেনা আওয়াজ উঠত। চিমা-চিবুজোর-ক্রিস্টোফার। শুরুতে ছিল চিমা-এমেকা-চিবুজোর। ক্রিস্টোফারও অকালে বিদায় নিয়েছিলেন। এবার চিবুজোরও (Chibuzor Nwakanma) চলে গেলেন। আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিন প্রধানে খেলা এই নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকারের। বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৫ বছর। নিজের দেশেই প্রয়াত হয়েছেন চিবুজোর। রেখে গেলেন স্ত্রী এবং সন্তানদের।

১৯৮৬ সালে এমেকার সঙ্গে প্রথম কলকাতায় এসে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে যোগ দেন চিবুজোর (Chibuzor Nwakanma)। পরের বছরই যোগ দেন মহামেডান স্পোর্টিংয়ে। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত খেলেন সাদা-কালো জার্সিতে। মহামেডানের হয়ে সেরা ফুটবল খেলেন চিবুজোর। ক্লাবকে সাফল্যও এনে দেন। নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকারের বল নিয়ে দৌড়, স্পট জাম্প, ডান পায়ে জোরালো শট, আর হেডিং ছিল দুর্দান্ত। ১৯৯৩ সালে তিনি সই করেন মোহনবাগানে। ১৯৯৫ পর্যন্ত সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে খেলেন। সেই সময় চিবুজোরের সঙ্গী ছিলেন বার্নাড, ক্রিস্টোফারের মতো নাইজেরিয়ান সতীর্থ। তিনজনের বন্ধুত্বের জন্য ময়দানে তাঁদের ‘তিনমূর্তি’ বলা হত। তবে চিবুর সঙ্গে দারুণ বন্ধুত্ব ছিল চিমা ও এমেকার। দু’জনেই প্রিয় বন্ধুকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ। এমেকা ইউজুগোর সঙ্গে প্রথম ১৯৮৬ সালে ইস্টবেঙ্গলে সই করেছিলেন চিবুজোর। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমেকা লিখেছেন, ‘আমার ভাই অকালে চলে গেল। ওর প্রয়াণে আমার হৃদয় ভেঙে গিয়েছে। আমার পরিবারের থেকেও বেশি আপন ছিল চিবু। কলকাতা ফুটবল এক আইকনকে হারাল।’ এমেকার কথায়, ‘‘সকালে হাঁটতে বেরিয়েছিল চিবু। বাড়ি ফিরে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে মৃত্যু।’’

চিবুর আর এক প্রিয় বন্ধু চিমা লন্ডন থেকে ফোনে বলছিলেন, ‘‘চিবুর এভাবে এত তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছি না। আমরা প্রায় একসঙ্গেই কলকাতায় খেলতে এসেছিলাম। কিন্তু চিবু ছিল অন্য গ্রহের। ও খুব বড় মনের মানুষ ছিল। সবাইকে নিয়ে থাকতে ভালবাসত। খুব ধার্মিক মানুষ ছিল। ওর কিটব্যাগে রাখা থাকত বাইবেল। তাই ওকে সবাই সম্মান করত।’’

১৯৯৭-৯৮-এ চার্চিল ব্রাদার্সে খেলে অবসর নেন চিবুজোর। ফুটবলকে বিদায় জানানোর পর নাইজেরিয়ায় একটি চার্চের ফাদার হয়ে গিয়েছিলেন এই দাপুটে নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার। খেলা ছাড়ার পরেও কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল চিবুজোরের। বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছিলেন। শিখেছিলেন বাংলাও। পরে দেশে ফিরে গেলেও অ্যাকাডেমি গড়ে ছোটদের খেলা শেখাতেন।

Latest article