প্রতিবেদন : একজন আইনজীবী হয়ে আপনি কীভাবে বলতে পারেন যে সংসদে পাশ করা একটি সংশোধনীকে সমর্থন করবেন না? কেন্দ্রের সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতাকে (Tushar Mehta) এভাবেই তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করলেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। বুধবার আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় মামলার শুনানি চলছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেখানেই সলিসিটার জেনারেলকে একথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
উত্তরপ্রদেশের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’ তকমা দেওয়ার বিরুদ্ধে আইনি অবস্থান নিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। এবিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানানো হয়েছে, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় (এএমইউ) কোনও নির্দিষ্ট ধর্ম বা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিশ্ববিদ্যালয় নয় এবং হতেও পারে না। এই প্রেক্ষিতে মামলার শুনানির পঞ্চম দিনে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল বলেন, তিনি ১৯৮১ সালে সংসদে পাশ করা সংশোধনীকে সমর্থন করছেন না। যে সংশোধনীতে এএমইউকে সংখ্যালঘু মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল।
প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এর নেতৃত্বে সাত বিচারপতির বেঞ্চ সলিসিটার জেনারেলের এই মন্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, একজন আইনের রক্ষক হয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারা সংসদে পাশ করা একটি সংশোধনীর বিরোধিতা তিনি কীভাবে করতে পারেন? প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এদিন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেলকে বলেন, সংসদ একটি অবিনশ্বর, অবিভাজ্য এবং অবিচ্ছিন্ন সত্তা। সেখানে কীভাবে আপনি সংসদে পাশ করা সংশোধনের বিরুদ্ধে যাচ্ছেন? যদিও তুষার মেহতা (Tushar Mehta) নিজের অবস্থান বজায় রেখে উল্লেখ করেন, এলাহাবাদ হাইকোর্ট বিভিন্ন কারণে ১৯৮১ সালের সংশোধনী বাতিল করেছে। এরপরই ডি-ওয়াই চন্দ্রচূড় তীব্র ভাষায় মন্তব্য করেন, এটি আপনার মৌলবাদী চিন্তা। একজন আইনের রক্ষাকর্তা হয়ে আপনি বলছেন যে, সংসদে যা পাশ হয়েছে তা আপনি মেনে চলবেন না!
আরও পড়ুন- জোট : তৃণমূলনেত্রীর বক্তব্যই সমর্থন আপের
প্রসঙ্গত, আজিজ বাশা মামলায় সুপ্রিম কোর্টের ১৯৬৭ সালের রায়ের প্রভাবকে কমাতে ১৯৮১ সালে সংশোধনী পাস করা হয়েছিল। ১৯৮১ সালে সংসদ আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯২০ সংশোধন করে কার্যকরভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সংখ্যালঘু মর্যাদা প্রদান করে। যদিও ২০০৬ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট ১৯৮১ সালের সংশোধনী বাতিল করে এবং ঘোষণা করে যে এএমইউ সংবিধানের ৩০ অনুচ্ছেদের অধীনে সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানের অধিকার দাবি করার অধিকারী নয়। পরে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের ৭ বিচারপতির বেঞ্চে মামলাটি রেফার করা হয়। সেখানেই শুনানিতে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেছেন সলিসিটার জেনারেলের উদ্দেশ্যে।