সম্পর্কের ঘেরাটোপ
কলকাতার বুকে এক সম্ভ্রান্ত বনেদি পরিবার রায়চৌধুরীদের। বহুকাল থেকে যে বাড়িতে মহাসমারোহে দুর্গাপুজো হয়ে থাকে। সেই পরিবারের বড় বউ পরমা। তাঁর স্বামী এক বড় কোম্পানির এমডি। ছেলে-মেয়েরা কলেজে পড়ে। শাশুড়ি অসুস্থ শয্যাশায়ী। পারিবারিক সেই পরিচয় থাকা সত্ত্বেও প্রত্যেক দিন দুপুরে পরমা চলে আসেন তাঁর দেওরের ছেলের বিদেশ-প্রত্যাগত ফটোগ্রাফার বন্ধু রাহুলের ফ্ল্যাটে। পরমা আর রাহুল এই অসমবয়সি মানুষ দুটি প্রত্যেক দিন অন্তরঙ্গ মেলামেশায় মেতে ওঠেন। পরমাকে যেন নেশায় পেয়েছে। যে মানুষটি দুর্গাপুজোর ছবি তুলতে এসেছিলেন পরমাদের বাড়িতে, ঘটনাচক্রে সেই মানুষটির সঙ্গে পরমা মেতে ওঠেন দৈহিক সম্পর্কে। স্বামীর সঙ্গে দীর্ঘদিন দৈহিক সম্পর্ক বন্ধ হওয়ার পর পরমার উপোসী হৃদয় রাহুলের স্পর্শে যেন প্রাণ পেয়েছে। এমন বিতর্কিত বিষয় নিয়ে ছবি করলেন অপর্ণা সেন। ছবির নাম ‘পরমা’। সেন্সর বোর্ড কোনও কাঁচি না-চালানোয় খানিকটা পর্নোগ্রাফিক আনন্দ দর্শকরা পেয়ে যান ছবিটিতে। বড় পর্দায় দুটি অনাবৃত শরীর মাখামাখি অবস্থায় রয়েছে এমন ছবি পয়সা না দিয়ে যায়! প্রধান তিনটি চরিত্রের শিল্পীরা হলেন রাখি গুলজার, দীপঙ্কর দে ও মুকুল শর্মা।
আরও পড়ুন-মায়াঙ্কের গতিতে বেসামাল পাঞ্জাব
এমন বিষয় যখন সাহিত্যে ও চলচ্চিত্রে
সাহিত্যে যেমন বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে বহু সাড়া জাগানো গল্প-উপন্যাস লেখা হয়েছে, তার অনেকগুলির চলচ্চিত্ররূপে স্বাভাবিকভাবে উঠে এসেছে সম্পর্কের এই ঘেরাটোপের ছবি। রবীন্দ্রনাথের এমন ধারার তিনটি কাহিনি দুই পরিচালকের হাতে উঠে এসেছে যেখানে দাম্পত্য-অতিরিক্ত প্রেমই মূল বিষয়। সত্যজিৎ রায়ের ‘চারুলতা’ এবং ‘ঘরে বাইরে’ আর ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘চোখের বালি’র কথাই সম্ভবত মনে আসে। বিরাট বৈভবের মধ্যে থেকেও ভূপতির (শৈলেন মুখোপাধ্যায়) স্ত্রী চারুলতার (মাধবী মুখোপাধ্যায়) দৈনন্দিন জীবন যখন বিবর্ণ, তখন অমলের (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) আগমনে ও সাহচর্যে সেই চারুর প্রাণের প্রকাশ ও মনের বিকাশ ঘটে। এর পরিণতি কোথায় তার কি কেউ হদিশ রাখে? এক অসাধারণ চিত্রকর্ম। অসুস্থ শরীর নিয়েও সত্যজিৎ রায় ‘ঘরে বাইরে’ তৈরি করেছেন। সন্দীপের (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) মক্ষিরানি বিমলা (স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত) বন্ধু নিখিলেশেরই (ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়) স্ত্রী। তবু কামনার আগুন যখন জ্বলে ওঠে তখন ছারখার হয়ে যায় সব সম্পর্ক। এই ছবিতে এই দুয়ের চুম্বনদৃশ্য স্থায়িত্ব পেয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ ‘চোখের বালি’ রচনার সময় আঁতের কথা হিসেবে বিধবা বিনোদিনীর কামনাকে তুলে ধরেছিলেন। ঋতুপর্ণ ঘোষ সেই কাহিনির চিত্ররূপে মহেন্দ্রের (প্রসেনজিৎ) সঙ্গে আশ্রিতা বিধবা বিনোদিনীর (ঐশ্বর্য রাই) ঘনীভূত দৈহিক মিলন ও চুম্বন রেখেছেন। বঙ্কিমচন্দ্রের দুটি স্মরণীয় উপন্যাসে (বিষবৃক্ষ ও কৃষ্ণকান্তের উইল) বিধবার কামনা ও পরপুরুষের সঙ্গে মিলন প্রাধান্য পেয়েছিল। সেই উপন্যাস যখন ছবি হয়ে এল তখন তাদের বিস্তার তো থাকবেই। অজয় করের পরিচালনায় ‘বিষবৃক্ষ’ ছবিতে নগেন্দ্রনাথ (রঞ্জিত মল্লিক) তাঁর স্ত্রী সূর্যমুখীর (অপর্ণা সেন) টান অস্বীকার করে আকৃষ্ট হয়েছেন বিধবা কুন্দনন্দিনীর (দেবশ্রী রায়) দিকে। ঠিক তেমনি রাজা সেনের ‘কৃষ্ণকান্তের উইলে’র চিত্ররূপে গোবিন্দলাল (জিৎ) ঘরে স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও বিধবা রোহিণীর (স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়) সঙ্গে দৈহিক মিলনে মত্ত হয়েছেন। শরৎচন্দ্রের ‘গৃহদাহ’ একসময় অল্পবয়সিরা লুকিয়ে লুকিয়ে পড়তেন। পরে সেই উপন্যাস নিয়ে একাধিকবার চলচ্চিত্র হয়েছে। শেষবারের চলচ্চিত্রায়ণে মহিমের (উত্তমকুমার) সুন্দরী স্ত্রী ব্রাহ্মকন্যা অচলার (সুচিত্রা সেন) প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন বন্ধু সুরেশ (প্রদীপকুমার)। সুরেশ ছলনা করে অচলাকে পেয়েছেন। এই অবৈধ প্রেমের চিত্রায়ণ দর্শকরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে দেখেন। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাসের চিত্ররূপ দিলেন গৌতম ঘোষ। কুবের (আরসাদ) তার ঘরে প্রতিবন্ধী সুন্দরী স্ত্রী মালাকে (চম্পা) উপেক্ষা করে আকৃষ্ট হয় শ্যালিকা লাস্যময়ী কপিলার (রূপা গঙ্গোপাধ্যায়) দিকে। শেষে কুবের-কপিলা পাড়ি দেয় ময়নাদ্বীপে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দিবারাত্রির কাব্য’ নারী-পুরুষের জটিল সম্পর্ক নিয়ে লেখা। এর চিত্ররূপে বিবাহিতা সুপ্রিয়া (মাধবী মুখোপাধ্যায়) আকৃষ্ট হয়েছেন হেরম্বের (বসন্ত চৌধুরী) দিকে। হেরম্বকে আবার আকর্ষণ করেন আনন্দ (অঞ্জনা ভৌমিক)। এমন সম্পর্কের ছবিতে অভিনয় একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মাধবী এই ছবি থেকে রাষ্ট্রপতির ঊর্বশী পুরস্কার (শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী) পেয়েছিলেন। সদ্যপ্রয়াত অঞ্জনা ভৌমিক দেখিয়েছেন আনন্দ চরিত্রে তাঁর অভিনয়ের জোশ।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
এমন বিষয় বাংলা ছবি কতটা প্রাপ্তবয়স্ক
অপর্ণা সেন পরিচালিত ‘সতী’ ছবির কথা অবশ্যই বলার মতো। সতী (শাবানা আজমি) বোবা। সতীকে গাছের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন তার বাবা (কালী বন্দোপাধ্যায়) শুধু কৌলিন্যপ্রথা বজায় রাখতে। প্রচণ্ড ঝড়জলের রাতে সতীর বাড়িতে এলেন প্রতিবেশী বিবাহিত যুবক (অরুণ বন্দোপাধ্যায়)। যদিও তাঁর যাতায়াত ছিল এই বাড়িতে। সতী ছাড়া তখন সেই বাড়িতে কেউ নেই। সর্বাঙ্গ ভিজে গেছে যুবকের। প্রদীপ নিভে গেছে ঝড়ের দাপটে। জলে ভিজে যাওয়া নায়ক বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও উত্তেজনায় জড়িয়ে ধরেন সতীকে। প্রথমে চুম্বন। পরে একে একে দেহের সর্বত্র চুমু। অবশেষে দৈহিক মিলন। সারা প্রেক্ষাগৃহ তখন নিথর নিস্তব্ধ। ‘পারমিতার একদিন’ ছবিতে পারমিতার শাশুড়ি সনকা (অপর্ণা সেন) বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও পূর্বপ্রণয়ী মণিময়-এর (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) প্রতি আকর্ষণ ভুলতে পারেন না। এদের আলিঙ্গনবদ্ধ চুম্বনদৃশ্য রয়েছে ছবিতে। অপরদিকে পারমিতা (ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত) স্বামীর (রজতাভ দত্ত) প্রেমহীন ব্যবহারে বাধ্য হয়ে আকৃষ্ট হয়েছেন পরপুরুষ শ্রীবাস্তবের দিকে (রাজেশ শর্মা)। তার হাত ধরে ঘরও ছাড়েন পারমিতা। ১৯৯২ সালের ২৪ জুন বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায় মেট্রোরেলের রবীন্দ্র সরোবর স্টেশনের সামনে সমাজবিরোধী একদল যুবক এক মহিলার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। এক মহিলা সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত। নিজের ব্যক্তিগত বিপদ তুচ্ছ করে সাংবাদিক ওই মহিলাকে বাঁচিয়েছিলেন। বাস্তবের সেই ঘটনা নিয়ে সুচিত্রা ভট্টাচার্য লিখলেন ‘দহন’ উপন্যাসটি। চিত্ররূপ দিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। সাংবাদিক দহনে রূপান্তরিত হয়েছেন শিক্ষিকাতে। নাম ঝিনুক (ইন্দ্রাণী হালদার)। আক্রান্ত যুবতী শর্মিষ্ঠা এখানে বিবাহিতা রোমিতা (ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত)। শর্মিষ্ঠার স্বামী জনার্দন এখানে পলাশ (অভিষেক চট্টোপাধ্যায়)। পুরুষশাসিত সমাজব্যবস্থার কঠোর ঘেরাটোপে সমগ্র বিশ্বই বন্দি। তাই দেখতে পাই পলাশ পর্যন্ত তার স্ত্রী রোমিতার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বলাৎকার করেন। সেই মুহূর্তে একাকার হয়ে যায় বাইরের সত্য ও ভিতরের সত্য। অভিন্ন হয়ে যায় রোমিতার আক্রান্ত হওয়ার পটভূমি।
আরও পড়ুন-আজ নদিয়ায় সভা, নির্বাচনী প্রচার শুরু মুখ্যমন্ত্রীর
আরও কিছু স্মরণীয় গল্পের চিত্রায়ণ
প্রমথনাথ বিশীর ‘জোড়াদীঘির চৌধুরী পরিবার’ নিয়ে ছবি করলেন অজিত লাহিড়ী। জোড়াদিঘির জমিদার দর্পনারায়ণ (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) মন দিয়েছিলেন রক্তদহের জমিদারকন্যা ইন্দ্রাণীকে (মাধবী মুখোপাধ্যায়)। প্রেম পর্বের পর বিবাহ স্থির। এদিকে, তেমাথার জমিদার পরন্তপ রায়ের (তরুণকুমার) অত্যাচারের হাত থেকে বনলতাকে (সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়) উদ্ধার করেন দর্পনারায়ণ। বাধ্য হন বনলতাকে বিবাহ করতে। ক্রোধে জ্বলে ওঠেন ইন্দ্রাণী। রক্তদহ ও জোড়াদিঘির পুরনো শত্রুতার স্মৃতি ইন্দ্রাণীর রক্তে দোলা দেয়। আকস্মিক ঘটনায় পরন্তপ রায়ের বিয়ে হয় ইন্দ্রাণীর সঙ্গে। ইন্দ্রাণী অল্পদিনের মধ্যেই বুঝতে পারেন তার স্বামী চরিত্রহীন। কিন্তু উপায়ই বা কী? প্রেমহীন বিবাহে দর্পনারায়ণ-ইন্দ্রাণী ক্ষতবিক্ষত। কী অসাধারণ চিত্ররূপ। একবার দেখলে ভোলা যায় না। সলিল দত্ত পরিচালিত সমরেশ বসুর ‘অপরিচিত’ ছবিতে বনেদি বংশের ছেলে রঞ্জন (উত্তমকুমার) জোর করে বিয়ে করেন সুনিতাকে (অপর্ণা সেন)।
স্বামী জানেন না যে সুনিতার মন পড়ে রয়েছে সুজিতের (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) জন্য। বৈভবের জীবনে ভালবাসা যে নিলাম হয়ে গেছে। কলগার্ল সুনিতার মুখের গানও সেই কথাই বলে: ‘এই ভাঙা হাটে আমি পসরা/ কে নেবে কে নেবে আমায়?’ সমরেশ বসুর ‘অয়নান্ত’ উপন্যাসের চিত্ররূপে রাজা (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) ও কনক (সুপ্রিয়া দেবী) ভালবেসে ঘর বাঁধার জন্য প্রস্তুত। তবে বাস্তব বড় কঠিন। কনকের বাবাকে যেদিন পুলিশ ধরে নিয়ে যায় সেদিন কনকের পাশে এসে দাঁড়ান প্রতুল (এন বিশ্বনাথন)। প্রতুল কি সোজা মানুষ? সম্পর্কের এই ঢেউ রয়েছে ‘অয়নান্ত’ ছবিতে। বিমল মিত্রের ‘স্ত্রী’ উপন্যাসের চিত্ররূপ দিলেন সলিল দত্ত। জমিদার মাধব দত্ত (উত্তমকুমার) লম্পট চরিত্রহীন। তবু গ্রামের মৃন্ময়ীকে (আরতি ভট্টাচার্য) বিয়ে করলেন। তিনি জানেনও না যে মৃন্ময়ীর প্রেমিক আছে সীতাপতি (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়)। এই ঘটনা তিনি আবিষ্কার করলেন মৃন্ময়ীর মৃত্যুর পর তার গলার লকেটে সীতাপতির ছবি দেখতে পেয়ে। তবে বৃন্দাবন কার ছেলে? সীতাপতির না মাধব দত্তের? এসব ছবি একসময়ে বাণিজ্য করেছে চুটিয়ে।
আরও পড়ুন-অভিষেকের হাত ধরে তৃণমূলে বিজেপির ২ নেতা ও ৫০ কর্মী
এই বিষয় নিয়ে হিন্দি ছবি
পাশাপাশি হিন্দি ছবির কথা বলতে হয়। বিবাহবহির্ভূত প্রেম নিয়ে, অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে বেশ কিছু ছবি হিন্দিতেও পেয়েছি। প্রথমেই বলা যাক বি আর চোপড়া পরিচালিত ‘গুমরাহ’ ছবির কথা। মীনা (মালা সিনহা) ভালবেসেছেন সংগীত শিক্ষক রাজেন্দ্রকে (সুনীল দত্ত)। মীনার দিদির আকস্মিক গাড়ি অ্যাক্সিডেন্টে মৃত্যু হয়, দিদির ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মানুষ করার জন্য জামাইবাবু ব্যারিস্টারকে (অশোক কুমার) বিয়ে করতে বাধ্য হন। পুরনো প্রেম তবু থেকে যায়। ব্যারিস্টারেরও অজানা থাকে না বিষয়টি। তা নিয়েই নাটক। বিজয় আনন্দের ‘গাইড’ ছবির গাইড রাজু (দেব আনন্দ) আচমকা ভালবেসে ফেলেন রীতাকে (ওহাদিয়া রেহমান)। তখনও রাজু জানেন না যে তার প্রেমিকা বিবাহিত রমণী। মহেশ ভাটের ‘অর্থ’ ছবিতে ইন্দার একজন নামকরা পরিচালক (কূলভূষণ খারবান্দা)। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী রয়েছেন পূজা (শাবানা আজমি)। কিন্তু ইন্দার প্রেম করলেন কবিতার সঙ্গে (স্মিতা পাতিল)। পূজার কাছে জিনিসটা অজানা রইল না। সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়েই ‘অর্থ’ ছবিটি নির্মিত হয়েছে। বি আর চোপড়ার আরেক স্মরণীয় ছবি হল ‘পতি পত্নী ঔর ওহ’। সেখানে স্বামী রঞ্জিত (সঞ্জীবকুমার), তার স্ত্রী পতিব্রতা সারদা (বিদ্যা সিনহা)। রঞ্জিতের সর্বদাই টান তার পি এ নির্মলার (রঞ্জিতা) দিকে। স্ত্রীর অসুস্থতার কথা বলে বলে অনেক কাছাকাছি চলে আসেন এই রঞ্জিত ও নির্মলা। সারদা ও নির্মলা মিলে কীভাবে রঞ্জিতের চিত্তশুদ্ধি করছেন সেই নিয়ে মজাদার ছবি। ‘সিলসিলা’ ছবিতে এই সম্পর্কের দারুণ চড়াই-উতরাই দেখিয়েছেন পরিচালক যশ চোপড়া। অমিত (অমিতাভ বচ্চন) ভালবাসেন চাঁদনীকে (রেখা)। শেখরের (শশী কাপুর) প্রেমিকা শোভা (জয়া বচ্চন)। শেখরের আকস্মিক মৃত্যুতে সন্তানসম্ভবা শোভাকে বিয়ে করতে বাধ্য হন অমিত। সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে বিধ্বস্ত অমিত-চাঁদনী। দর্শকদের মুগ্ধ হয়ে দেখতে হয় সেই ছবি। ‘রুস্তম’ ছবিতে রুস্তম (অক্ষয়কুমার) আবিষ্কার করেন তাঁর স্ত্রী সিনথিয়া (ইলিনা ডিসুজা) বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত। ফলে প্রেমিক বিক্রমকে খুন করেন রুস্তম। ‘লাইফ ইন এ মেট্রো’ ছবিতে প্রধান চরিত্রেরা প্রত্যেকেই বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে রয়েছেন। অনুরাগ বসু পরিচালিত এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকাগুলিতে অভিনয় করেছেন ইরফান খান, কে কে মেনান, কঙ্কণা সেন শর্মা, শিল্পা শেট্টি, কাঙ্গেনা রঙ্গোয়াত, সালমান জোশি প্রমুখ। ‘নৌকাব’ ছবিতে সোফিয়া (ঊর্বশী শর্মা) তাঁর স্বামী ভিকি (অক্ষয় খান্না) থাকা সত্ত্বেও করণকে (ববি দেওল) কীভাবে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন তাই নিয়ে ছবি নৌকাব। ‘জিসম’ ছবিতে সোনিয়া (বিপাশা বসু) তাঁর স্বামী কোটিপতি রোহিতকে (গুলশান গ্রোভার) পেলেও কবিরের প্রতি আকৃষ্ট হন (জন আব্রাহাম)। আসঙ্গ লিপ্সায় জড়িয়ে পড়েন। ‘হামারি আধুরি কাহানি’ ছবিতে নায়িকা বিদ্যা বালানের স্বামী নিখোঁজ সেই অবস্থায় তিনি জড়িয়ে পড়েন ইমরান হাসমির সঙ্গে। কিন্তু এই সম্পর্ক যখন অনেক দূর গড়ায় তখন তাঁর স্বামী ফিরে আসেন। অবৈধ সম্পর্কও আছে আবার টান-টান উত্তেজনাও আছে।
আরও পড়ুন-প্রার্থী হোন ইডি কর্তা! ফের চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন অভিষেক
পুনশ্চ
এমন আরও অনেক অনেক ছবি রয়েছে, যেখানে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভেঙে টুকরো-টুকরো হয়ে গিয়েছে। সম্পর্কের এই বিধ্বস্ত রূপের ছবির প্রতি দর্শকদের আলাদা আকর্ষণ আছে তা নিঃসন্দেহে বলা চলে।