প্রতিবেদন : শুক্রবারই ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে লোকাল ট্রেন চালানোর অনুমতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। একটি ট্রেনে যত যাত্রীর বসার জায়গা থাকে, তার অর্ধেক যাত্রী নিয়েই ট্রেন চালানো হবে। কিন্তু বাস্তবে সেটা কীভাবে সম্ভব তা নিয়ে অনেকেরই পরিষ্কার ধারণা নেই। শহরতলির লোকাল ট্রেন বলতে চোখের সামনে যে ছবিটা ভেসে ওঠে, তার সঙ্গে এই ৫০ শতাংশের হিসেব মেলানো কঠিন। কিন্তু তা সত্ত্বেও কোভিডবিধি অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে যাত্রী সাধারণের স্বার্থেই। এখানে বিন্দুমাত্র আপস নয়। তবে কোভিডবিধি কার্যকর করতে রেলের বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। তাঁরা এ নিয়ে রাজ্য সরকারের সাহায্যও চেয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে সবরকম ভাবে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। রেল কর্তারা বলছেন, নিয়ম মেনে ৫০ শতাংশ যাত্রীর হিসেব রাখা কার্যত সম্ভব নয়। রেলের আধিকারিকরা মানছেন, এক্ষেত্রে যাত্রীদের সহযোগিতা ছাড়া রেলের কাছে যাত্রীসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার কোনও ক্ষমতাই নেই। রেলের তরফে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় রাজ্য সরকারের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তবে এর জন্য এর মধ্যেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজার উদ্যোগ নিয়েছে রেল। রবিবার থেকে লোকাল ট্রেন চালু হলেও রেলের তরফে রবিবার থেকে খুব প্রযোজন ছাড়া ট্রেন সফর না করার অনুরোধও জানানো হয়েছে। যাত্রীসংখ্যা কম রাখারও জন্যও যাত্রীদের কাছেই আবেদন জানানো হয়েছে। তবে গত পাঁচ মাস ধরে স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেন চলার কারণে ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হবে না বলেই রেলের তরফে জানান হয়েছে। এতদিন পর্যন্ত শিয়ালদা শাখায় প্রতিদিন ৯২২টি ট্রেনের মধ্যে ৬১০ থেকে ৬২০টি ট্রেন চলছিল। অন্যদিকে, হাওড়া শাখায় ৪৮৮টি ট্রেনের পরিবর্তে ২৫৪টি ট্রেন চলছিল। ট্রেনের সংখ্যা কম থাকায় ভিড়ও হচ্ছিল বেশি। তবে পুরোদমে ট্রেন চালু হলে এই ভিড় অনেকটাই কমবে বলেই ধারণা সবমহলের। লোকাল ট্রেন চালু হওয়ার আগে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে রেল। তার মধ্যে সব স্টেশনে আরপিএফ ও জিআরপি রাখার কথা বলা হয়েছে। ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সব রকম সাহায্য নেওয়া হবে। রেলের সব বগিগুলির নিয়মিত স্যানিটাইজ করা হবে।
আরও পড়ুন :কালনায় বিজেপি ছাড়লেন ৫১১
এদিকে রবিবার লোকাল ট্রেন চালু হওয়ার আগে স্টেশনে স্টেশনে চলল স্যানিটাইজেশনের কাজ। শুক্রবারাই এ সংক্রান্ত ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য সরকার। তার আগে শনিবার শিয়ালদা স্টেশনে দেখা গেল চূড়ান্ত পর্বের প্রস্তুতি। জোরকদমে চলছে স্যানিটাইজেশনের কাজ। একই সঙ্গে হাওড়া স্টেশনেও দিনভর চলল স্যানিটাইজেশনের কাজ। করোনা আবহে ১৭৮ দিন পর, রবিবার থেকে সর্বসাধারণের জন্য ফের গড়াচ্ছে লোকাল ট্রেনের চাকা। নিত্যদিন লাখো যাত্রী যাতায়াত করেন শিয়ালদা ও হাওড়া স্টেশন দিয়ে। এদিন সেখানে গিয়ে দেখা গেল, স্টেশনে ঢোকার পর ট্রেনগুলিতে স্যানিটাইজেশনের কাজ শুরু চলছে। শুধু স্যানিটাইজেশন নয়। করোনা সংক্রমণ যাতে ছড়াতে না পারে, তার জন্য যাত্রীদের সচেতন করার কাজও করবে রেল। পাশাপাশি করোনাবিধি মানা নিয়ে চলছে কড়া নজরদারি। চূড়ান্ত ব্যস্ততা হাওড়াতেও। বামুনগাছি ইএমইউ রেলইয়ার্ডে লোকাল ট্রেনগুলির স্যানিটাইজেশন করা হয়।