শান্তি ও অহিংসাই ছিল তাঁর জীবনের মূলমন্ত্র। দুর্ধর্ষ ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে তিনি শান্তি ও অহিংসাকে হাতিয়ার করেই চরম আন্দোলন করেছিলেন। মহাত্মাজীর সেই কাজকে স্বীকৃতি দিতে শান্তি ও অহিংসার পথ প্রদর্শক হিসেবে আমেরিকার সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘কংগ্রেসানাল গোল্ড মেডেল’ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হল। মার্কিন কংগ্রেসের এক সদস্য গান্ধীজিকে সে দেশের অসামরিক ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়ার এই প্রস্তাব এনেছেন। এই প্রস্তাব অনুমোদিত হলে মহাত্মা গান্ধীকে মরণোত্তর সম্মান দেওয়া হবে।
জাতিরজনককে যদি এই সম্মান দেওয়া হয়, তাহলে তিনি হবেন প্রথম ভারতীয় যিনি এই সম্মান পেতে চলেছেন। এর আগে মাদার টেরিজা, জর্জ ওয়াশিংটন, নেলসন ম্যান্ডেলা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র রোজা পার্কসের মতো ব্যক্তিত্ব এই সম্মান পেয়েছেন। তবে, কোনও ভারতীয় এখনো পর্যন্ত এই সম্মান পাননি। নিউ ইয়র্কের মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য ক্যারোলিন বি ম্যালোনি জানিয়েছেন, গান্ধীজির ঐতিহাসিক অহিংস ও সত্যাগ্রহ আন্দোলন গোটা দুনিয়াকে অনুপ্রাণিত করেছে। শান্তি ও অহিংসকেই তিনি ব্রিটিশের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করেছিলেন।
আজও আমাদের প্রত্যেককেই দেশের জন্য কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেন বাপুজি। সেই কাজ করতে হবে শান্তি ও অহিংসার মাধ্যমে। ম্যালেনি আরও বলেছেন, গোটা। বিশ্বকেই অহিংস আন্দোলন করার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন ভারতের জাতির জনক। গান্ধীজি গোটা বিশ্বে যে পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন, সেই পরিবর্তন সবার আগে নিজের মধ্যে আনার কথা বলেছিলেন। গান্ধীজি মনে করতেন, কেউ যদি শান্তি ও অহিংসার পথে চলে তবে সে অবশ্যই একদিন দুনিয়ার মাঝে মাথা তুলে দাঁড়াবে।
গান্ধীজির সেই ভাবনাচিন্তা ও পরিকল্পনাকে আমাদের সকলেরই এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। মহাত্মাজি অহিংস ও সত্যাগ্রহ আন্দোলনের মাধ্যমে শুধু যে ভারকেই পথ দেখিয়েছিলেন তা নয়। তাঁর সেই আদর্শ ও দর্শন আজও গোটা বিশ্বের ক্ষেত্রে একই রকম প্রাসঙ্গিক। গান্ধীজির সেই দর্শনকেই নিজেদের পথ চলার পাথেয় করেছিলেন জর্জ লুথার কিং, ম্যান্ডেলার মত ব্যক্তিত্বরা। তাঁরা আগেই আমেরিকার সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পেয়েছেন। তাঁরা যাকে লক্ষ্য করে এগিয়েছিলেন সে গান্ধীজি কিন্তু এখনও এই সম্মান পাননি। তাই আমি মনে করি, সবার আগে গান্ধীজিকে এই সম্মান দেওয়া উচিত।