প্রতিবেদন : মিলনতীর্থ গঙ্গাসাগর বর্ণময় রূপে ফুটে উঠেছে মকরসংক্রান্তির আগেই। রাত পোহালেই শুরু হবে পুণ্যস্নান। প্রকৃত অর্থেই মিলনমেলার রূপ নেওয়া সাগরে উদ্বোধনের পর থেকে পুণ্যার্থীদের ঢল নেমেছে। শনিবারই ৪৫ লক্ষ মানুষ গঙ্গাসাগরে স্নান সেরেছেন। এদিন সেই সংখ্যাটা ৬৫ লক্ষ ছাড়িয়ে গেল।
রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে অরূপ বিশ্বাস জানান, পুণ্যার্থীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার দিকে সদা নজর রয়েছে প্রশাসনের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাঁরা দাঁড়িয়ে থেকে তদারকি করছেন। সাগরে উপস্থিত হয়ে রাজ্যের আটজন মন্ত্রী সব দিক সামলাচ্ছেন দায়িত্বের সঙ্গে। অরূপ বিশ্বাস ছাড়াও রয়েছেন ইন্দ্রনীল সেন, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, পুলক রায়, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, পার্থ ভৌমিক, সুজিত বসু, বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। এছাড়া সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার, জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা প্রমুখ।
আরও পড়ুন-বিজেপির রাজ্য সভাপতি সহ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা
পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য রাজ্য সরকার গঙ্গাসাগর মেলাকে আধুনিক রূপ দিয়েছে। ডিজিটাল মাধ্যম নির্ভর পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। নজরদারিতে ১১৫০টি সিসিটিভি, ২২টি ড্রোন, ১০টি স্যাটেলাইট ফোন ও ১৪০টি ম্যানপ্যাক। অন্যদিকে পুণ্যার্থীদের যাতে গঙ্গাসাগর মেলাতে আসতে কোনও অসুবিধা না হয় সেজন্য বাবুঘাট থেকে সাগর পর্যন্ত ১৭টি বাফার জোনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অপরাধ দমনে সজাগ প্রশাসন গত কয়েকদিনে ৪১টি পকেটমারির ঘটনায় ৩৮টি খোয়া যাওয়া বস্তু উদ্ধার করেছে। বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের জন্য ২৫০ জনকে গ্রেফতার করেছে।
লক্ষাধিক পুণ্যার্থীদের মধ্যে রবিবার পর্যন্ত ২৮৪৬ জন তাঁদের আত্মীয়দের থেকে বিচ্ছিন্ন হন। যার মধ্যে ২৮১০ জনকে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট আইসিইউ সুবিধাযুক্ত অস্থায়ী হাসপাতালে ৭৫০ জন স্বাস্থ্যকর্মী পরিষেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। একটি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স, ৪টি ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স ও ১০০টি অ্যাম্বুল্যান্স ও গ্রিন করিডরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ১৩টি মোবাইল ট্রিটমেন্ট ইউনিট রয়েছে। এদিন সাতজন তীর্থযাত্রীকে নিয়ে মোট ১২ জনকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের মাধ্যমে এয়ার লিফট করা হল। দু’জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে, যার মধ্যে রয়েছেন রাজস্থানের বাসিন্দা মোহনলাল প্রজাপত (৫৯) ও দিল্লির বাসিন্দা চন্দ্র পাল (৫২)। সেইসঙ্গে গঙ্গাসাগর মেলাকে সার্বিকভাবে পরিবেশবান্ধব ও প্লাস্টিক-মুক্ত করতে বদ্ধপরিকর প্রশাসন নানা প্রচার অভিযান চালাচ্ছে। এবারের গঙ্গাসাগর মেলায় নতুন আকর্ষণ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিউ আর কোড, পুশ এসএমএস অ্যালার্ট, সাগর প্রবচন ও মহাসাগর আরতি।