গুড় গড়তে শ্রম বেশি আয় কম, শীতেও দেখা নেই শিউলিদের

প্রসঙ্গত, গাছ থেকে প্রায় ১৫ লিটার খেজুররস সংগ্রহ করার পর তা ফুটিয়ে মেলে মাত্র এক কেজি গুড়। যার দাম সত্তর থেকে আশি টাকা।

Must read

প্রতিবেদন : ঠান্ডা পড়ে গেলেও এখনও করিমপুরের খেজুরগাছগুলোর আশপাশ আগাছায় ভর্তি। দেখা নেই শিউলিদের। এক সময় শীত পড়তে না পড়তেই তারা খেজুরগাছ কাটতে চলে আসত। কিন্তু গত কয়েক বছর শিউলিরা না আসায় আর এই অঞ্চলে সেভাবে খেজুররস সংগ্রহ হয় না। আগে যাঁরা রস সংগ্রহ করতেন, তাঁদের প্রায় সকলেরই এখন বয়স হয়েছে। কেউ আবার মারাও গিয়েছেন। নতুন প্রজন্মের কেউ আর এই কাজে আগ্রহী নন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় এত গাছে উঠে কলসি লাগানো ও ভোরবেলায় সেই কলসি নামানো খুব কষ্টকর তাদের কাছে। ঠান্ডা যত বেশি পড়বে রস ও গুড়ের স্বাদও তত ভাল হবে। কিন্তু হাড়হিম করা শীতে গাছে ওঠাও ঝুঁকির। তবুও সংসার চালাতে আগে অনেকেই এই কাজ করতেন। এখন অন্য কাজে রোজগার বেশি। তাই গাছ থেকে রস সংগ্রহ এবং তারপর জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ এখন প্রায় কেউই করছেন না।

আরও পড়ুন-দিমি-তালাল জুটিতে জ্বলল মশাল

প্রসঙ্গত, গাছ থেকে প্রায় ১৫ লিটার খেজুররস সংগ্রহ করার পর তা ফুটিয়ে মেলে মাত্র এক কেজি গুড়। যার দাম সত্তর থেকে আশি টাকা। রস ফোটাতে প্রচুর জ্বালানি লাগে তাই এই দামে খরচ পোষায় না। আগে জঙ্গল, ঝোপঝাড়ের আগাছা বা গাছ কেটে শুকিয়ে তা ব্যবহার করা হত জ্বালানি হিসেবে। এখন তাও মেলে না। ফলে জ্বালানি খরচই ওঠে না গুড় বেচে। তাই খেজুর গাছ থাকলেও দেখা মিলছে না শিউলিদের। পরিশ্রম বেশি, রোজগার কম বলে অনেকেই অন্য কাজে ঢুকে পড়েছেন। করিমপুরের এক গুড় ব্যবসায়ীর অভিযোগ, আগে এলাকায় প্রচুর নলেন গুড় পাওয়া যেত। এখন মুর্শিদাবাদের কয়েক জায়গা থেকে গুড় আসে। চাহিদা থাকলেও উৎপাদন কম হওয়ায় গুড়ের দাম যেমন বেশি তেমনি গুড়ের মানও পড়তির দিকে। চিনি মেশানো নিম্নমানের ভেজাল গুড়ে বাজার ছেয়ে গিয়েছে। করিমপুরও তার বাইরে নয়।

Latest article