প্রতিবেদন : দ্বীপরাজ্য গোয়ায় এই মুহূর্তে কংগ্রেস নয়, তৃণমূল-ই বিজেপি বিরোধী প্রধান শক্তি, সেটা উল্কার গতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সংগঠন বিস্তারে তা প্রমাণিত। পুজোর আগেই কলকাতায় এসে গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনো ফেলেইরো তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতা ও অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগদান করেছেন। গোয়ানিজ প্রাক্তন জনপ্রিয় ফুটবলার থেকে বক্সারও ঘাসফুল পতাকা হাতে নিয়েছেন।
গোয়ায় মাটি কামড়ে পড়ে আছে তৃণমূলের ভোট কুশলী প্ৰশান্ত কিশোরের আইপ্যাকের কয়েকশো সদস্য। রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়ান দুর্দান্ত কাজ করছেন। একইসঙ্গে সেখানে পালা পালা করে যাচ্ছেন তৃণমূল নেতা-বিধায়ক-মন্ত্রী-সাংসদরা।
এবার পুজোর মধ্যেই গোয়ায় ফের বড়সড় সাফল্য পেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। গোয়ায় নির্বাচনের আগেই এক বিধায়ককে দলে টেনে কার্যত খাতা খুলল তৃণমূল! ঘাসফুল শিবিরে এখনও সরাসরি যোগ না দিলেও গোয়ার নির্দল বিধায়ক প্রসাদ শশীকান্ত গাওনকার সাংবাদিক সম্মেলন করে স্পষ্ট জানিয়েছেন, ২০২২ বিধানসভা নির্বাচনে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বকেই সমর্থন করবেন। তৃণমূল নেত্রীকে সামনে রেখেই লড়বেন তিনি। এদিন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনো ফেলেইরো এবং ডেরেকে ও’ব্রায়ানের উপস্থিতিতে নির্দল বিধায়ক প্রসাদ গাওনকারের দাবি, শুধু গোয়া বিধানসভা নয়, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পরাস্ত করতে পারেন একমাত্ৰ মমতাই।
আরও পড়ুন :অসুররূপী রোমিওদের দমন করবে তেজস্বিনীরা
তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে সমর্থনের জন্য প্রসাদ গাওনকরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তাঁর ভাই সন্দেশ তৃণমূলে যোগদান করায় তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন।
টুইটে তিনি লেখেন, “ফ্যাসিবাদী নিপীড়ক বিজেপি শাসনের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে তরুণ নেতাদের নীরব না থেকে এগিয়ে আসতে দেখে আমি গর্বিত। আপনাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ।”
এদিকে, প্রসাদ গাওনকরের তৃণমূলকে সমর্থন প্রসঙ্গে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে বলেছেন, “এক কৃষক সন্তান অগ্নিকন্যাকে সমর্থন করেছেন। সন্দেশ গাওনকরকে তৃণমূল পরিবারে স্বাগত।” এমন টুইটের পর অভিষেকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রসাদ গাওনকরের প্রতিক্রিয়া, একসঙ্গে কাজ করে গোয়াকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবেন।
এদিন, প্রসাদ গাওনকর , ২০১৭ সালে তিনি বিধানসভায় গিয়েছেন। কিন্তু রাজ্যে পরিবর্তন আনতে পারেননি। তিনি মনোহর পারিক্করকে সমর্থন করলেও, রাজ্যের প্রভূত উন্নতি হয়নি। সারা দেশ আর গোয়ায় তাকিয়ে দেখুন, কী হচ্ছে। তাই পরিবর্তন দরকার। দিদির মাধ্যমেই তার পরিবর্তন হতে পারে ২০২৪-এ।
এদিন গাওনকর সরাসরি তৃণমূলে যোগ না দিলেও তাঁর ভাই সন্দেশ গাওনকর তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। নির্দল বিধায়ক হিসেবে কার্যকাল শেষ হওয়ার পরই তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দেবেন বলেও জানিয়েছেন প্রসাদ গাওনকর।
তবে তাঁর ভাই সন্দেশের সঙ্গেই অনুগামী এবং এলাকার নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গতবার গোয়ার সনগাম কেন্দ্রে প্রথমবারের বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর নির্দল প্রসাদ গাওনকর প্রথমে সমর্থন করেছিলেন বিজেপিকে। কিন্তু তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পারিক্কর অসুস্থ হয়ে পড়লে বিজেপির ওপর থেকে সমর্থন তুলে নিয়ে নির্দল বিধায়ক হিসেবেই নিজের কাজ করতে থাকেন।