মিনি টর্নেডোয় লন্ডভন্ড জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের বেশ কিছু এলাকা। কমপক্ষে ৫জনের মৃত্য হয়েছে। আহত ২০০-র বেশি মানুষ। ৫ হাজার বাড়ি ধুলিস্যাৎ। ঘটনার খবর পেয়েই দুর্যোগের রাতে ছুটে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কিন্তু নির্বাচনী আচরণ বিধি থাকায় কিছুই করতে পারা যাচ্ছে না। প্রশাসনের তরফে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকারকে কিছু করতে হলে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি প্রয়োজন। প্রয়োজনীয় অনুমতি এখনও পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বৃহস্পতিবার, প্রথমে কোচবিহারের (Coochbehar) মাথাভাঙা ও পরে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) মালের প্রচার সভা থেকে এই প্রসঙ্গে ফুঁসে ওঠেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেন, “কেন আটকে রেখেছেন? বিজেপি বললে তার পর ছাড়বেন?”
রবিবার রাতেই বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িতে গিয়েছিলেন মমতা। দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন প্রশাসন সব সাহায্য করবে। আশ্বাস দিয়েছেন ভেঙে পড়া বাড়ি তৈরি করে দেবে রাজ্য সরকার। কিন্তু নির্বাচনী বিধি জারি থাকায় রাজ্য সরকার সরাসরি অর্থ সাহায্য করতে পারছে না। প্রশাসনের মাধ্যমে এই কাজ করতেও কমিশনের অনুমতি প্রয়োজন। কিন্তু সেই অনুমতিই এখনও মেলেনি। তৃণমূল সভানেত্রী বলেন, “৫ হাজার বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। আমরাই করে দেব। নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ, এটাকে ঝুলিয়ে রাখবেন না। মানুষগুলো রাস্তায় পড়ে রয়েছে। স্কুলে পড়ে রয়েছে।” মমতার কথায়, “সরকার প্রশাসনের হাত দিয়ে টাকাটা দিতে পারলে, প্রশাসন বাড়িগুলো করে দেবে। যেহেতু নির্বাচন আছে তাই এটা প্রশাসন করবে।”
এর পরই প্রবল আক্রমণ করে মমতা বলেন, ”কেন আটকে রেখেছেন? বিজেপি বললে তার পর ছাড়বেন?”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, কীভাবে দুর্যোগের পরেই রাতের বিমানে গভীর রাতে বাগডোগরা ও সেখান থেকে জলপাইগুড়ি পৌঁছন। সেখান থেকে যান স্বজনহারা পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করতে। সেখান থেকে হাসপাতাল। কথা বলেন, আহতদের সঙ্গে। ঘড়ির কাটা তখন পরিয়েছে প্রায় একটা। মুখ্যমন্ত্রী যান ত্রাণ শিবিরে। পাশে থাকার আশ্বাস দেন দুর্গতদের। সেখান থেকেই রাত প্রায় ৩টে নাগাদ যান বার্নিশে, যেখানে ঝড়ের তাণ্ডবে বহু বাড়ি মাটিতে মিশে গিয়েছে। প্রায় সারারাত সব দেখে ভোট চারটে নাগাদ চালসায় থাকার জায়গায় ফেরেন মমতা। জলপাইগুড়ির প্রশাসন, ডাক্তার, নার্স এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের চেষ্টায় অনেকের প্রাণ বেঁচেছে। তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানান মুখঅযমন্ত্রী। আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারেও গিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন- বোলপুর-বীরভূমে জয়ের ব্যবধান বাড়বে, নেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও, বললেন অভিষেক
এরপরেই অভিযোগ করে মমতা বলেন, বিজেপি নির্বাচন বিধি মানে না। কারণ ওটা ওদের নিজেদের ঘরবাড়ি। এটা কেন্দ্রের নির্বাচন। যার বিয়ে তিনি নিজে পুরোহিত। অর্থাৎ ওদিকে কেউ তাকিয়ে দেখে না। ওরা মারলেও দোষ নাই। এরেস্ট করলেও দোষ নয়। ওরা নির্বাচন ঘোষণার পরে ১০০দিনের কাজের মজুরি বাড়ানোর ঘোষণা করতে পারে, অথচ এখানে দুর্গত মানুষের বাড়ি করার অনুমতি দিচ্ছে না- তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা।