রাজ্যের প্রাপ্য টাকা আদায়ে এবার ‘দিল্লি চলো’- ধর্না মঞ্চ থেকে ডাক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee)। কলকাতার রেড রোডে দু’দিন ধরে ধর্নায় তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। মুখ্যমন্ত্রী জানান, দু’দিন ধরে তিনি ধর্নায় বসেছেন। কিন্তু এর মধ্যে একবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা বা কেন্দ্রের কেউই একটা ফোন করেননি।
ধর্না মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ঘোষণা,” সবাইমিলে জোট বাধুন। অধিকার না পেলে চলো দিল্লি চলো। নেতাজী, গান্ধীজি, আম্বেদকর- সবার ছবি হাতে নিয়ে আমরাও দিল্লি যেতে পারি। ভিক্ষে করে ভাড়া করব ট্রেন। তোমরা রিজার্ভেশন না দিলে” তিনি জানান, “১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা বকেয়া। জিএসটির টাকা পাব। মিডিয়া দেখাবে না তো কী। সোশ্যাল মিডিয়া আছে। ভেবেছিলাম ভদ্রতা করে কেন্দ্রীয় সরকারের কেউ যোগাযোগ করবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেনি।”
মুখ্যমন্ত্রীর আরও সংযোজন, “সমস্ত বিরোধী দলগুলিকে কলঙ্কিত করছে। দিল্লি থেকে মিডিয়ার মালিকদের বলে দেওয়া হচ্ছে তৃণমূলের ধরনা কর্মসূচি দেখানো যাবে না। রিপোর্টাররা খবর পাঠালেও তা দেখানো হচ্ছে না। জিএসটি কর নিয়ে যাচ্ছে। এক টাকাও বাংলাকে দিচ্ছে না। প্রাপ্য দিচ্ছে না। তিনবার প্রধানমন্ত্রীকে বলে এসেছি। দলের সাংসদরা বলেছে। আন্দোলন করেছে। মন্ত্রীরা গেছে। চিঠি দিয়েছি। দুবছর চলে গেল। যা পেতাম তাও বাদ। হরেকরকম্বা। কোন অধিকারে বাংলার – দিল্লি – পাঞ্জাব – তামিলনাড়ু – ছত্তিশগড় – মহারাষ্ট্রের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। অন্য রাজ্যে৷ টাকা দিলেও এরাজ্যের সব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এখন কন্যাশ্রী নকল করছে।
আরও পড়ুন: ধর্না মঞ্চেই তৃণমূলে যোগ দিলেন অভিনেতা তরুণ কুমারের নাতি সৌরভ
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পাঁচবার আমরা সেরা হয়েছি ১০০ দিনের কাজে। তাতেও ৭ হাজার কোটি টাকা দেয়নি। এবছর বাজেটেও টাকা দেয়নি বাংলাকে। এখানে কিছু আছে যারা কুটুস কুটুস করে। গ্রাম সড়কে প্রথম হয়েছি। তাও টাকা বন্ধ। বিজেপি ভোটের সময় ৫০০০ টাকা দিয়ে বলবে একটা ভোট ৫০০০ টাকা। বাংলা আবাস যোজনার টাকা দেয়নি। খাদ্যসাথীর টাকা ওরা যা দেয় তাতে ভর্তুকি আমাদের দিতে হয়। এবারেও ৭ লাখ চাল প্রোকৃরিওরমেন্ট হয়েছে। ৬০ শতাংশ টাকা আমরা দেব আর ছবি থাকবে পিএমের। আমরা এটা চাই না। ৬০ শতাংশ দিতে পারলে ৪০ শতাংশও দেব৷ সেভ কনস্টিউশন সেভ ডেমোক্রেসি। গরীবের টাকা বন্ধ।। ছাত্র ছাত্রীদের স্কলারশিপ বন্ধ। ওবিসিদের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে।”
মোদি সরকারকে কটাক্ষের পুরে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো বলেন, “ওহে নন্দলাল। বাংলাকে কিছুই দেবে না” কেয়া বাবুলাল! ৫২ কোটি টাকা ওভারড্রাফট। কী করে একটা পার্টি ওভারড্রাফট পায়। বিজোপি জমিদারের মতো আচরণ করছে। কিছু বললে ইডি – সিবিআই পাঠিয়ে দেয়। সব বিক্রও করে দিচ্ছে। এলআইসি – ব্যাংক সব। কো-অর্ডিনেশন কমিটি বলছে তৃণমূল চোর। বদলা নয় বদল চাই। তাই জেতার পর রবীন্দ্র গান বাজিয়েছিলাম।
একইসঙ্গে সিপিএমকেও ছেড়ে কথা বললেন না মুখ্যমন্ত্রী। চড়া গলায় এদিন তিনি জানান,” সাইলেন্স প্লিজ। নিজেদের ভালোর জন্য চুপ থাকুন। চিরুকুট ধারী পার্টি তারা এখন পেন ডাউন করছে। আমরা কাউকে তাড়াইনি। কর্মনাশা – সর্বনাশা এরা। বাম- রাম এক হয়ে বলছে আমরা সবকাগজ পেয়ে যাই। সিপিএমের লোকেরাই এসব বের করছে। অথচ ওদের কাগজ খুঁজে পাবে না। টাকা নিচ্ছে পেনশন নিচ্ছে, আরও চাই। ইংরেজি চ্যানেলের সাংবাদিক দিল্লিতে যা মাইনে পান, ঐ চ্যানেলের বাংলা সাংবাদিক কী সেই মাইনে পান? পান না।”
কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,” কিছু বললেই জেলে। আর বিজেপি করলেই সাধু। সবাই চোর আর ওরা একমাত্র সাধু। আমরা আন্দোলন করব। আন্দোলোনেই আমার জন্ম। আমরা ভয় পাই না। আগামী লড়াই দেশের জনতা বনাম নন্দলাল। গোটা দেশের মানুষ লড়াই করবে। ওরা গণতন্ত্রকে – মানুষকে বুলডোজ করতে চায়। বিজেপি শেষ কথা বলবে না। আমাদের দেশের মানুষ শেষ কথা বলবে। ভয় পেয়েছেন তাই যা খুশি তাই বলবে। উনি যা বলবেন সবাইকে শুনতে হবে। বাকি কেউ কিছু বলবে না।”