প্রতিবেদন : ব্যাট তুলে রাখলেন মনোজ তিওয়ারি। বৃহস্পতিবার ইনস্টাগ্রামে এক দীর্ঘ পোস্টের মাধ্যমে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্তের কথা জানান ৩৭ বছর বয়সি বাংলার এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।
আরও পড়ুন-তাঁত-হস্তশিল্পীদের আর্থিক সুবিধা দিতে আইন সংশোধন বিধানসভায়, ৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জিএসটি ছাড়
জাতীয় দলে মনোজের কেরিয়ার দীর্ঘ হয়নি। দেশের জার্সিতে শেষ একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ২০১৫ সালে। আইপিএলেও ব্রাত্য ছিলেন। মূলত বাংলার হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতেন। গত মরশুমেই বাংলাকে রঞ্জি ট্রফিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন মনোজ। সেটাই যে তাঁর শেষ মরশুম ছিল বাংলার হয়ে, অভিমন্যু ঈশ্বরণের থেকে মনোজের হাতে নেতৃত্বের ব্যাটন তুলে দিয়ে তা বুঝিয়ে দিয়েছিল সিএবি-ও। মনোজও চেয়েছিলেন, ক্রিকেটজীবনে অনেক অপ্রাপ্তির মধ্যেও একবার অন্তত রঞ্জি ট্রফি জয়ের স্বাদ পেতে। কিন্তু সেই স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে থেকে গিয়েছে তাঁর। গত মরশুমে বাংলা ফাইনালে উঠলেও ইডেন গার্ডেন্সে ফাইনালে সৌরাষ্ট্রের কাছে হেরে যায়। স্বপ্নভঙ্গ হলেও অবসর প্রসঙ্গ তোলেননি বঙ্গ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা তারকা। তবে বাংলার নতুন মরশুমের প্রাথমিক দলে নিজের নাম রাখতে না চাওয়ার মধ্যে দিয়েই অবসরের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মনোজ। জল্পনা সত্যি করে নিজেই ঘোষণাটা করে দিলেন বৃহস্পতিবার। তবে অবসরের পর রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিজের কাজে বাড়তি মনোযোগ দেবেন, নাকি কোচিং বা ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায় তাঁকে দেখা যেতে পারে, তা স্পষ্ট করেননি।
আরও পড়ুন-জনতার টাকা নিয়ে উধাও, শীর্ষে মেহুল
বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মার সমসাময়িক ক্রিকেটার বাংলার মনোজের জাতীয় দলে অভিষেক হয় ২০০৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারতীয় ওয়ান ডে দলের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন হাওড়ার ছেলেটি। ভারতীয় দলের হয়ে ১২টি ওয়ান ডে খেলেছেন। মোট রান ২৮৭। রয়েছে একটি শতরান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে অপরাজিত ১০৪ রান সর্বোচ্চ। দেশের হয়ে ওয়ান ডে-তে ইনিংসে পাঁচ উইকেট রয়েছে তাঁর। জাতীয় দলে কেরিয়ার দীর্ঘ না হলেও বাংলার ক্রিকেটে মনোজ তিওয়ারির অবদান অনস্বীকার্য। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রায় ১০ হাজারের কাছাকাছি রান রয়েছে তাঁর। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৩০৩ রানের ইনিংস।
আরও পড়ুন-ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে লন্ডভন্ড বেজিং, ১৪০ বছরের রেকর্ড ভেঙে বন্যা
এদিন ইনস্টাগ্রামে বিদায়ী বার্তায় মনোজ লিখেছেন, ‘‘ক্রিকেটকে বিদায় জানালাম। এই খেলা আমাকে সবকিছু দিয়েছে। এমন ছোটখাটো জিনিস যা আমি কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি। জীবনে বারবার অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। ক্রিকেট খেলাটির প্রতি আমি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। ঈশ্বরের প্রতিও, যিনি সর্বদাই আমার পাশে থেকেছেন।’’
আরও পড়ুন-আরপিএফের জুলুমবাজি বিক্ষোভে রেল হকাররা
মনোজ আরও লিখেছেন, ‘‘যাঁরা আমার এই ক্রিকেট সফরে পাশে থেকেছেন তাঁদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ছোটবেলার কোচ থেকে শুরু করে প্রাক্তন সতীর্থ এবং গত মরশুমেও যাদের সঙ্গে খেলেছি, তাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমার এই যাত্রাপথে মানবেন্দ্র ঘোষ শুধু একজন কোচ ছিলেন না, উনি ছিলেন আমার বাবার মতো। উনি না থাকলে আজ ক্রিকেটার হিসেবে এত দূর আসতে পারতাম না। আপনাকে ধন্যবাদ। বাবা-মাকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। কখনও পড়াশোনার জন্য অতিরিক্ত চাপ না দিয়ে ক্রিকেট খেলতে উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন। আমার জীবনে আসার পর থেকে সব সময় পাশে থাকার জন্য স্ত্রী সুস্মিতার কাছেও কৃতজ্ঞ।’’