সংবাদদাতা, দুর্গাপুর: ৬১ বছর পার। ফাঁকা মাঠটার চারপাশে ঘটেছে পরিবর্তন । যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পুজোয় লেগেছে থিমের ছোঁয়া। কিন্তু বদলাইনি সাবেকিয়ানা। প্রতিবছর বর্ধমান জেলার সেরা থিম পুজোর পুরস্কার জিতলেও দুর্গাপুর মার্কনি দক্ষিণপল্লী ৬০ পেরিয়েও ধরে রেখেছে তাদের ঐতিহ্য। প্রধান বিশেষত্ব সপ্তমীর সকালে দোলা আনা এবং কলাবউ স্নান। সার্বজনীন পুজো হলেও সপ্তমীর সকালে কলাবউ স্নানে রয়েছে বনেদিয়ানার ছাপ।
আরও পড়ুন : শিশু-কিশোরদের কোভাক্সিন টিকাকরণের অনুমতি কেন্দ্রের
সপ্তমীর দিন সকাল সাড়ে ছটা থেকে সাতটার মধ্যে মহিলারা লালপাড় সাদা শাড়ি এবং পুরুষেরা ধুতি বা পাজামা-পাঞ্জাবি পরে হাজির হন মণ্ডপের মাঠে। ভোর সাড়ে চারটে থেকে শুরু হয় ঘোষণা। বলা যেতে পারে সকলকে নির্দিষ্ট সময়ে তৈরি হতে বলার সঙ্কেত। এরপর একে একে এলাকার বাসিন্দারা হাজির হন। দোলা কাঁধে ঢাকের বাজনা আর ধুনোর গন্ধে আট থেকে আশির উপস্থিতিতে এই শোভাযাত্রা হয়ে ওঠে বর্ণময়। মহিষ্কাপুর কালীমন্দিরের পুকুর থেকে ঘট নিয়ে সকলে আবার মণ্ডপে ফেরেন। এরপর অঞ্জলি দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়।
এবারের মণ্ডপ এবং প্রতিমাও নজরকাড়া। পুজোভাবনা ‘কুমোরপাড়ার গরুর গাড়ি, বোঝাই করা কলসী হাঁড়ি।’ শিল্পী মেদিনীপুরের। পোড়ামাটির কলসী দিয়ে সেজে উঠেছে মণ্ডপ। প্রতিমায় সাবেকিয়ানার ছাপ। পোড়ামাটির শিল্পকে নতুন করে তুলে ধরতেই এই থিমের পরিকল্পনা। শুধু তাই নয়, রয়েছে অন্য একটি বার্তাও। পুজো কমিটির সহকারী সম্পাদক দেবাশীস তাঁ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জলের অপচয় রুখতে ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্প চালু করেন। পুজো শেষ হলে মণ্ডপ খোলার সময় প্রত্যেকটি মাটির কলসী আমরা জল সংরক্ষণের বার্তা দিতে এলাকাবাসী এবং পথচলতি মানুষদের হাতে তুলে দেব।’