সংবাদদাতা, মথুরাপুর : এই বিয়ে দুই ‘পজেটিভ’ মানুষের। একদিকে তারা যেমন মন থেকে ‘পজিটিভ’ তেমনি শরীরে বয়ে চলেছে এইচআইভি পজিটিভ (HIV Positive)। আর তাদের বিয়েতে কোনরকম কার্পণ্য করেননি উদ্যোক্তারা। কারণ তারাও মানসিকভাবে পজেটিভ। অগ্নিসাক্ষী রেখে মালা বদল করেন ও সাত পাক ঘরেন পাত্র-পাত্রী। বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করেন মহিলা পুরোহিত। আর তাতেই গাট -ছড়া বাঁধলো দুটি নিষ্পাপ মনের মানুষ। আর তাকে সম্মতি দিল সমাজ।
আরও পড়ুন-সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে ঝাঁঝরা প্রেমকুমার, অত্যাচারীদের ছবি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সোনারপুরের গোবিন্দপুরে ‘আনন্দ ঘর’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন এইচআইভি পজেটিভ শিশুদের নিয়ে। যে সমস্ত পিতা-মাতা এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তাদের বাচ্চাদেরকে এই হোমে রেখে বড় করা হয়। সেরকমভাবেই এই হোমে উপস্থিত হয়েছিল মেদিনীপুরের সুনিতা যাদব। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মাকে হারিয়ে এই হোম থেকেই পড়াশোনা করে সে। ‘আনন্দঘর’ হোম তাকে শৈশব থেকে কৈশোরে এবং যৌবনে পা রাখতে সাহায্য করেছে। বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে সে ‘কাফে পজিটিভ’ নামে একটি কফি শপে কর্মরতা। কিন্তু প্রতিমাসে তাকে মেডিকেল কলেজে যেতে হয় অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল ভাইরাল থেরাপি চিকিৎসা নিতে। প্রতি মাসে সেখানে যেতে আলাপ হয় সৌমিত্র গায়েন নামে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির এক যুবকের সাথে। ছোটবেলায় বিড়ালের কামড়ের ইনজেকশন নিতে গিয়ে সিরিঞ্জ থেকে আক্রান্ত হন এইচআইভি পজিটিভে (HIV Positive)। সৌমিত্রর সঙ্গে প্রথম দেখাতেই মন দেওয়া নেওয়া। ঈশ্বর হয়তো চেয়েছিলেন তাদের এই সম্পর্কের পরিণতি পাক। আর সেই সম্পর্ক গড়ালো বিয়েতে। রবিবার সন্ধ্যায় সেই শুভক্ষণ হলো সম্পন্ন। যে বিয়ে আর পাঁচটা অন্য সব বিয়েকে মলিন করে দিয়েছে সম্পর্কের ভালোবাসায়। দুজন এইচআইভি পজিটিভ রোগী হওয়ার সত্বেও যেভাবে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সত্যি অকল্পনীয়।