প্রতিবেদন : জয়নগরের তৃণমূল নেতা খুনের (Jaynagar murder) ঘটনায় মূল ‘মাস্টারমাইন্ড’ আনিসুর রহমান লস্কর গ্রেফতার। ধরা না পড়লে পরিকল্পনা ছিল খুনের পর মুর্শিদাবাদে পালিয়ে গিয়ে আত্মগোপন করার। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে বৃহস্পতিবার পুলিশ তুলে নিল আনিসুরকে। পুলিশের জালে আনিসুরের অন্যতম শাগরেদ কামাল উদ্দিন ঢালিও। তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্করকে খুন করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল ১৫ দিন আগে মন্দিরবাজারের টেক পাঁজা এলাকায় নাসির হালদার ওরফে বড় ভাইয়ের বাড়িতে। সইফুদ্দিনকে খুন করার জন্য আনিসুর রহমান ‘বড় ভাই’কে প্রায় এক লক্ষ টাকা দেয়। তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিনকে খুন করার বেশ কয়েকদিন তাঁর খুঁটিনাটি নখদর্পণে রাখছিল আনিসুর ও তার দলবল। সুযোগ বুঝে কালীপুজোর পরের দিন সোমবার বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে নমাজ পড়তে যাওয়ার সময় দুটি বাইকে মোট পাঁচজন এসে তৃণমূল নেতাকে খুন করে। খুনের পর পরিকল্পনামাফিক এলাকা থেকে গা ঢাকা দেয় সিপিএম নেতা আনিসুর রহমান লস্কর। তৃণমূল নেতা সাইফুদ্দিন লস্করের খুনের (Jaynagar murder) অন্যতম অভিযুক্ত ছিল এই নাসির উদ্দিন রহমান লস্কর। এমনকি এফআইআরে নামও থাকে এই আনিসুর রহমান লস্করের। এরপর অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি অভিযানে নামে বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ। তৈরি করা হয় বিশেষ প্রতিনিধি দলের। এরপর আনিসুর রহমান লস্করের মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করা হয়। টাওয়ার লোকেশনে প্রথমে আনিসুরের সিগনাল পাওয়া যায় বাসন্তী থানায় এলাকায়। এরপর বিশাল পুলিশ বাহিনী ওই এলাকায় হানা দেয় কিন্তু ততক্ষণে আনিসুর গা ঢাকা দিয়েছে। এরপর আনিসুরের পরিকল্পনা ছিল পুলিশের নজর বাঁচিয়ে নদীয়া হয়ে গাড়িতে করে মুর্শিদাবাদে পৌঁছে যাওয়ার। সেই পরিকল্পনা মাফিক ১১ হাজার টাকার বিনিময়ে একটি চার চাকা গাড়ি ভাড়া করে আনিসুর। এরপর বৃহস্পতিবার নদিয়া থেকে গাড়িতে করে মুর্শিদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। কিন্তু ততক্ষণে বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশের কাছে সমস্ত তথ্য চলে আসে। এরপর বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ রানাঘাট থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযুক্তকে রানাঘাট থেকেই গ্রেফতার করে। শুধুমাত্র আনিসুর রহমান লস্কর ওই গাড়িতে ছিল না ওই গাড়িতে ছিল কামাল উদ্দিন ঢালী সহ আরো দুজন। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। এ বিষয়ে বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার পলাশ চন্দ্র ঢালী বলেন, জয়নগরের তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্করের খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আনিসুর রহমান লস্কর কে আমরা গ্রেফতার করেছি। সেইসঙ্গে আরও এক অভিযুক্ত কামাল উদ্দিন ঢালীকেও আমরা গ্রেফতার করেছি। এছাড়াও আরও দুজনকে আমরা আটক করেছি। জয়নগরের তৃণমূল নেতা খুন কাণ্ডে তিনজন গ্রেপ্তার হলো। এখনো পর্যন্ত নাসির হালদার ওরফে বড় ভাইয়ের খোঁজে আমরা তল্লাশি চালাচ্ছি। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের পর এই খুনের পিছনে কে বা কারা জড়িত রয়েছে তা আমরা কিনারা করতে পারব।
আরও পড়ুন-ভোট বাজারে মোদির মিথ্যাচার, ‘২৪ থেকে বন্ধ বিনামূল্যে রেশন