প্রতিবেদন : প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনল আট বছরের নাবালক ইমরানকে। কৃতিত্ব অবশ্যই হাসপাতালের ইএনটি বিশেষজ্ঞদের এবং অত্যাধুনিক শল্যচিকিৎসা ব্যবস্থার। কে জানত আট বছরের মহম্মদ ইমরান খেলার সময় আস্ত একটা বাঁশি গিলেছে! গিলেছে ঠিকই, তবে পেটে যায়নি। শ্বাসনালিতে আটকে ছিল। শেষপর্যন্ত প্রায় দুই সেন্টিমিটারের প্লাস্টিকের বাঁশি বের করলেন মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন-সাক্ষাৎকার: প্রথম কাজ হবে পানীয় জলের ব্যবস্থা
গত শনিবার সকালে ঘরে বসে খেলছিল ইমরান। তখনই একটি বাঁশি খেয়ে ফেলে সে। ছেলের কাছে এমন কথা শুনে তার মা শ্বাস নিতে বলেন। শ্বাস নেওয়ার সময় শোনা যায় বাঁশির শব্দ। জল খাইয়ে বমি করানো হল, যদি বেরিয়ে আসে। উল্টে জলের সঙ্গে রক্ত বেরোয়। আর দেরি করেনি ইমরানের পরিবার। ক্যানিং স্ট্রিট থেকে সোজা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগ। সেখান থেকে ইএনটি বিভাগে। এদিকে স্বাভাবিক শ্বাস নিতে না পেরে ক্রমশ নেতিয়ে পড়ছিল ইমরান। শরীর নীল হয়ে যাচ্ছিল। জরুরি বিভাগে হঠাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। মেডিক্যালের ইএনটি বিশেষজ্ঞ সার্জেন ডাঃ দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায়ের কথায়, সেই সময় ছোট্ট ইমরানের রক্তে অক্সিজেন ছিল শতকরা ৩০ শতাংশ।
আরও পড়ুন-প্রথম ইতিহাস তৈরি হয় সেই ২০০৮ সালেই, চন্দ্রযান-১
কিছুক্ষণ প্রাথমিক চিকিৎসার পর স্বাভাবিক হয়। ব্রঙ্কোস্কোপি করে দেখে নেওয়া হয় ঠিক কোন জায়গায় বাঁশি আটকে। এরপরে সেটি অতি সন্তর্পণে বের করে আনা হয়। প্রায় দুই ইঞ্চি মাপের প্লাস্টিকের বাঁশি বের করতে ইমরানকে কিছু সময়ের জন্য অজ্ঞান করতে হয়। বিভাগীয় প্রধান ডাঃ সৌমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের চিকিৎসক দল ইমরানের অস্ত্রোপচার করেন। চারদিন হাসপাতালে কাটিয়ে বুধবার মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফিরেছে ইমরান। ছেলেকে ফিরে পেয়ে আপ্লুত ইমরানের পরিবারের। চিকিৎকদের কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই তাঁদের।