প্রথম ইতিহাস তৈরি হয় সেই ২০০৮ সালেই, চন্দ্রযান-১

২০০৮ সালেই চাঁদে প্রথম চন্দ্রযান (চন্দ্রযান-১) পাঠিয়েছিল ভারত। সেদিন প্রচারের ঢক্কানিনাদ ছিল না সেই সফল চন্দ্রাভিযান ঘিরে।

Must read

প্রতিবেদন : বুধ-সন্ধ্যায় চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান-৩ -এর সফল অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হল ইতিহাস। উচ্ছ্বাসে ভাসছে গোটা দেশ। এদিন সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে ইসরোর বিজ্ঞানীদের সাফল্যে উজ্জ্বলতর হল তেরঙ্গার গৌরব। এখনও পর্যন্ত পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিন চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে তাদের মহাকাশযান নামাতে পেরেছিল। চন্দ্রযান-৩ সফল হওয়ায় ভারত এই তালিকার চতুর্থ দেশ হল। তবে দক্ষিণ মেরুতে এই কৃতিত্ব ভারতের একার।

আরও পড়ুন-দুই বিমানের দূরত্ব মাত্র ১.৮ কিমি, মহিলা পাইলটের দক্ষতায় প্রাণ বাঁচল ৩০০ যাত্রীর

অনেকে বলছেন, চাঁদে ভারতের এই গৌরবযাত্রা এটাই প্রথম। কিন্তু সত্যিই কি তাই? অনন্য ইতিহাস তৈরির দিনে ভারতের মহাকাশযাত্রার গতিপথ দেখলে উঠে আসছে চন্দ্রযান-১-এর সাফল্যের কথাও। সাল ২০০৮, তারিখ ১৪ নভেম্বর। সেই দিনই প্রথম ভারতের সফল চন্দ্র অভিযান হয়।

আরও পড়ুন-আইসিইউতে জুতো খোলার কথা শুনে বুলডোজার-হুমকি, লখনউ মেয়রের কীর্তি

২০০৮ সালেই চাঁদে প্রথম চন্দ্রযান (চন্দ্রযান-১) পাঠিয়েছিল ভারত। সেদিন প্রচারের ঢক্কানিনাদ ছিল না সেই সফল চন্দ্রাভিযান ঘিরে। সেই সাফল্যের অনেক তথ্যই সাধারণের অজানা। অথচ ২০০৮-এর ১৪ নভেম্বরই চাঁদের মাটি স্পর্শ ভারতীয় মহাকাশযান। তার আগে ২২ অক্টোবর ভারতীয় সময় অনুযায়ী সকাল ৬টা ২২ মিনিটে চেন্নাইয়ের ৮০ কিলোমিটার উত্তরে অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের নেলোর জেলার শ্রীহরিকোটা থেকে চন্দ্রযান-১ উৎক্ষিপ্ত হয়। নভেম্বরের ১৪ তারিখে সন্ধ্যা ২০টা ০৬ মিনিটে মুন ইমপ্যাক্ট প্রোবটি চাঁদের কক্ষপথে ভ্রাম্যমাণ চন্দ্রযান থেকে পৃথক হয়ে যায় এবং চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছাকাছি অঞ্চল স্পর্শ করে।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

একইসঙ্গে চন্দ্রযান-১ মহাকাশযানটি চাঁদের রাসায়নিক, খনিজতাত্ত্বিক এবং ফটো-জিওলজিক ম্যাপিংয়ের জন্য চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০০ কিলোমিটার উচ্চতায় চাঁদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করে। ওই অভিযানে মহাকাশযানটি ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানি, সুইডেন এবং বুলগেরিয়াতে নির্মিত ১১টি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র বহন করেছিল। এই রিমোট সেন্সিং চান্দ্র উপগ্রহটির উৎক্ষেপণ মুহূর্তের ওজন ছিল ১৩৮০ কিলোগ্রাম এবং চান্দ্র কক্ষপথে প্রবেশকালে এর ওজন হয় ৬৭৫ কিলোগ্রাম। এই যানে প্রায় ইনফ্রারেড, সফট ও হার্ড এক্স-রশ্মি স্পন্দনের জন্য ব্যবহৃত উচ্চ রেজোলিউশনের রিমোট সেন্সিং যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়া হয়। ভারতের এই মহাকাশযানই চাঁদে জলের অস্তিত্ব প্রথম খুঁজে পেয়ে ইতিহাস তৈরি করেছিল। রাডার অল্টিমিটারটি চন্দ্রপৃষ্ঠের সঙ্গে দূরত্ব মাপার কাজ করছিল।

আরও পড়ুন-গদ্দারকে অভিষেকের চ্যালেঞ্জ, সাহস থাকলে চলে এসো মুখোমুখি বিতর্কে

চাঁদের বায়ুমণ্ডল সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছিল স্পেকট্রোমিটার। প্রায় ১০০ কিলোমিটার উঁচু থেকে চন্দ্রযান ছেড়ে চাঁদের দিকে নামতে শুরু করে মহাকাশযান। কোনওরকম বাধা ছাড়াই মহাকাশ থেকে চাঁদের বুকে নামতে যানটির সময় লেগেছিল ২৫ মিনিট। সমস্ত প্রধান মিশনের উদ্দেশ্য সফলভাবে সমাপ্ত হওয়ার পর ২০০৯ সালের মে মাসে কক্ষপথটি ২০০ কিলোমিটারে উন্নীত করা হয়। উপগ্রহটি চাঁদের চারপাশে ৩৪০০টিরও বেশি কক্ষপথ তৈরি করেছে এবং ২৯ অগাস্ট মহাকাশযানের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে মিশনটি শেষ বলে ঘোষণা করা হয়।

Latest article