প্রতিবেদন : ইডির তলব পাওয়ার পর আরও আক্রমণাত্মক দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইডির তরফে সমন পাওয়ার পর মঙ্গলবার দুপুরেও তিনি এনসিআরবির রিপোর্ট তুলে ধরে সরাসরি তোপ দেগেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। আইনশৃঙ্খলা এবং নারী সুরক্ষার নিরিখে বাংলা-কলকাতা দেশের মধ্যে সর্বোত্তম। দিল্লি সবথেকে খারাপ। এভাবেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খোঁচা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। সোমবার মেয়ো রোডের সভা থেকে অভিষেক বলেছিলেন, আমি অন্য ধাতুতে তৈরি। মাথা উঁচু করে বাঁচি। এজেন্সির ভয় দেখিয়ে আমাদের মাথা নিচু করা যাবে না। এটা মঙ্গলবার আবারও প্রমাণ করে দিলেন অভিষেক। দিল্লিতে ইডির তরফে সমন করা হয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্যালিকা মেনকা গম্ভীরকেও। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর ইডির কলকাতার অফিসেই যাবেন মেনকা। হাইকোর্টের নির্দেশ, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন-দ্বিতীয় দিনেও মোচ্ছব গেরুয়া প্রশিক্ষণ শিবিরে
একদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২৯-এর সফল ছাত্র সমাবেশের পরই ডেকে পাঠানো, অন্যদিকে তাঁর শ্যালিকাকে দিল্লিতে তলব। এই জোড়া আক্রমণ করেও টলানো যায়নি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে। আইনশৃঙ্খলা ইস্যুতে তিনি পাল্টা আক্রমণ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। এরকম ইস্পাত কঠিন স্নায়ু নিয়েই যে তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবেন, এদিন আবারও বুঝিয়ে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, এই ঘটনা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক চক্রান্ত। অভিষেককে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে ইডি-সিবিআই দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে। কুণালের কথায়, এসবের মোকাবিলা করতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একাই একশো। তিনি ইস্পাত কঠিন স্নায়ু নিয়ে এসবের মোকাবিলা করছেন।
আরও পড়ুন-বিসর্জনের ঘাট পরিদর্শন
এর আগেও ইডির সমন পেয়ে দিল্লি গিয়ে জেরা সামলে বেরিয়ে এসে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন অভিষেক। দৃপ্ত কণ্ঠে বিজেপির বিরোধিতা করেছেন। মঙ্গলবার এনসিআরবি রিপোর্ট নিয়ে ট্যুইট করেছেন সমন পাওয়ার পরেও। একেই বলে বুকের পাটা, যা সবার থাকে না। একুশের নির্বাচনে হেরে গিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই ইডি-সিবিআইকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে, স্পষ্ট বক্তব্য শশী পাঁজা ও কুণাল ঘোষের।
আসলে সবই যে পূর্ব পরিকল্পিত ও রাজনৈতিক কারণে করা তার উদাহরণস্বরূপ কুণাল ঘোষ ও শশী পাঁজা বলেন, এর আগে একুশে জুলাই বিরাট সমাবেশ গোটা বাংলা দেখল- দেশ দেখল। তারপরেই এক নেতার বাড়িতে ইডি গেল, গ্রেফতার করল। কুণালের কথায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারবার হিট করা হচ্ছে। তার কারণ সরকার উন্নয়নের কাজ করছে একদিকে। অন্যদিকে দলে একাধিক প্রজন্ম মিলিয়ে সিনিয়র-জুনিয়রের জমাট দুর্গ ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জমায়েত থেকেই বিজেপিকে আক্রমণ করে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলে দিয়েছিলেন, আজ ভাল জমায়েত হয়েছে। দেখবেন চার-পাঁচদিনের মধ্যে কিছু ঘটতে পারে। দেখা গেল ২৯-এর সভার পরেই সমন পাঠানো হল তাঁকে। বোঝাই যাচ্ছে বিজেপি কতটা ভয় পায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
আরও পড়ুন-বাংলাই হবে পর্যটনে সেরা : বাবুল
২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বেরোনোর পরই বাড়িতে সিবিআই পাঠিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-মন্ত্রীদের তুলে নিয়ে যাওয়া হল। কিন্তু একই কেসে নাম থাকা শুভেন্দু অধিকারীকে কিছুই করা হল না। কারণ, বাঁচার জন্য ও বিজেপি নেতাদের পায়ে পড়েছে। একে বিজেপির দ্বিচারিতা ও রাজনৈতিক দৈন্যতা ছাড়া আর কী বলবেন? এছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি গেলে বলেন সেটিং আর ইডি সমন পাঠালে লাফালাফি করেন, এসব রাজনৈতিক ভণ্ডামি ছাড়া আর কী, স্পষ্ট বক্তব্য তৃণমূল কংগ্রেসের।