প্রতিবেদন : গত পাঁচদিন ধরে হিংসার আগুন জ্বলছে হরিয়ানায়। এক ধর্মীয় মিছিলকে কেন্দ্র করে রক্তাক্ত ডবল ইঞ্জিনের এই রাজ্যের একাধিক জেলা। ব্যাপক সংঘর্ষের মাঝে পড়ে সেখানে অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে সবচেয়ে বেশি সমস্যার মুখে পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা (Migrant Workers- Haryana)। এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বারবার হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাঁদের। এদিকে, অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে অসহায় মানুষগুলিকে। নেই ঘরে ফেরার টাকাও। এই অবস্থায় প্রশাসনের সাহায্যের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন বাংলা-সহ একাধিক রাজ্য থেকে কাজের সন্ধানে আসা অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকরা।
বাংলা (West Bengal) থেকে হরিয়ানায় (Migrant Workers- Haryana) কাজের সন্ধানে যাওয়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক পরিযায়ী শ্রমিক বলেন, নুহতে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনার পর রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছে আমরা। বাইরে কাজ নেই, বাড়িতে খাওয়ার কিছু নেই, কাছে টাকাও নেই যে রাজ্যে ফিরব। এমনই অবস্থা হরিয়ানায় কাজে যাওয়া ১০০টির বেশি পরিবারে। অসহায় এই পরিবারগুলির মধ্যে ইতিমধ্যেই ৮৫টি পরিবার গুরুগ্রাম ছেড়ে বাংলায় ফিরে এলেও ১৫টি পরিবারের কোথাও যাওয়ার মতো জায়গা নেই। এই পরিস্থিতির মাঝেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের হুমকি দিয়ে আসা হচ্ছে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য। বলা হয়েছে, মুসলিম পরিযায়ী শ্রমিকরা যেন অবিলম্বে গুরুগ্রাম ছাড়েন। অবিশ্বাসের বিষাক্ত পরিবেশ চারদিকে। এই অবস্থায় কার্যত অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে অসহায় শ্রমিকদের।
আরও পড়ুন-হরিয়ানায় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বুলডোজার নীতি, পক্ষপাতদুষ্ট প্রশাসন
শুধু পরিযায়ী শ্রমিক নয়, গুরুগ্রামে যাদের বাড়িতে এই শ্রমিকরা ভাড়া থাকছেন সেই বাড়িওয়ালাদের উপরও চাপ সৃষ্টি করছে দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবারই এমন এক বাড়িওয়ালার ওপর চড়াও হয়েছিল কয়েকজন। মারধর করা হয় তাঁকে। এখন তিনি হাসপাতালে ভর্তি। বাড়ি বাড়ি যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের তদারক করার দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, আমার কাছে ৩০ জন কাজ করেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে গত দু’দিন মাত্র ৪ জন কাজে আসছেন। তাঁদের মধ্যে একজনকে আবার সেদিন রাস্তায় ঘিরে ধরে মারধর করা হয়। আমরা সকলেই ভয়ে সিঁটিয়ে আছি। বাড়ির বাইরে পা রাখতেই ভয় পাচ্ছি। গুরুগ্রামের ডেপুটি কমিশনার নিশান্ত যাদব জানান, কিছু পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ পেয়েছি। এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। স্পর্শকাতর জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে। চলছে রুটমার্চও।