প্রতিবেদন: মিজোরামে জোমি সম্প্রদায়ের পুনর্গঠনের জন্য গঠিত জো রি-ইউনিফিকেশন অর্গানাইজেশন (জোরো) উত্তর–পূর্বাঞ্চল বিশেষত মিজোরামের সঙ্গে মায়ানমার সীমান্তে বেড়া দেওয়া এবং দুই দেশের মধ্যে অবাধ চলাচল বন্ধের তীব্র বিরোধিতা করেছে। জোরোর সাধারণ সম্পাদক এল রামদিনলিয়ানা মিজোরামে বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার সীমান্তে প্রস্তাবিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলে রাজ্যের তরুণদের আবার অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়া ছাড়া আর কোনও পথ খোলা থাকবে না। এই প্রথম উত্তর-পূর্ব ভারতের কোনও সামাজিক সংগঠন মায়ানমার–মিজোরাম সীমান্তে বেড়া দেওয়ার বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় সরকারকে সরাসরি অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়ার হুমকি দিল।
আরও পড়ুন-ভোটের ডিউটিতে আসা বিএসএফের হাতে শ্লীলতাহানি
মায়ানমার সীমান্ত লাগোয়া মিজোরামের চাম্পাই জেলায় গত শুক্রবার এক জনসভায় জোরোর সম্পাদক রামদিনলিয়ানা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যদি সীমান্তে বেড়া দেওয়া এবং অবাধ চলাচল প্রত্যাহারের পরিকল্পনা অব্যাহত রাখে তবে এই অঞ্চলের তরুণদের আবার অস্ত্র হাতে নিতে হবে। এছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। মিজোরামের রাজধানী আইজলভিত্তিক সংগঠন জোরোর লক্ষ্য: ভারত, বাংলাদেশ ও মায়ানমারের সমস্ত চিনা-কুকি-মিজো-জোমি উপজাতিদের একটি প্রশাসনের অধীন এনে একত্রিত ও ঐক্যবদ্ধ করা। জোরো সম্পাদকের এই হুমকি ভারতের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের। কারণ মিজোরামে দীর্ঘদিনের বিচ্ছিন্নতাবাদী ও স্বাধীনতাকামী সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে। ১৯৬৬ সালে মিজো জাতীয়তাবাদী সংগঠন মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট পৃথক ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করে।
আরও পড়ুন-যোগীরাজ্যে আয়কর হানায় উদ্ধার ৬০ কোটি
ভারতের বাহিনীর সঙ্গে ন্যাশনাল ফ্রন্টের একাধিক স্থানে প্রায় ২০ বছর ধরে লড়াই চলে। দুই পক্ষেই অসংখ্য মানুষ, বিশেষত মিজোরামের গ্রামীণ আদিবাসীরা মারা যান। এই লড়াইয়ের জেরে ভারত সরকার ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে মিজো চুক্তি সম্পাদিত হয় ১৯৮৬ সালে। এরফলে নতুন রাজ্য হিসেবে মিজোরামকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সেই মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের গুরুত্বপূর্ণ নেতা জোরামথাঙ্গা গত বছর পর্যন্ত মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট এখন একটি মূল স্রোতের রাজনৈতিক দল হলেও তাদের লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে।