অনন্ত গুছাইত, নয়াদিল্লি : পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোট টানতে ফের নাটুকে সংলাপ শোনা গেল নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) মুখে। সরকারি আবাস ৭, লোক কল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রী প্রাতরাশে মিলিত হন শিখ ধর্মগুরু ও শিখ সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ৩৭ জন ব্যক্তির সঙ্গে। শিখ ধর্মগুরুদের মোদি কী বলেছেন, তার একটি ভিডিও এরপর প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে প্রকাশ করা হয়। প্রশ্ন উঠছে, নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী যেসময় ভোটপ্রচার নিষিদ্ধ, তখন খোদ প্রধানমন্ত্রী বিধি ভেঙে প্রচারের ভিডিও দিলেন কীভাবে? পাঞ্জাব ভোটের আগের দিন শিখ ধর্মগুরু ও বিশিষ্টদের সঙ্গে আলাপচারিতা তুলে ধরা যে শিখ ভোটারদের ভাবাবেগ উসকে দিতে, তা বোঝার জন্য রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার পড়ে না। অথচ দেশের প্রধানমন্ত্রীর চরম বেআইনি কাজ দেখেও নির্বিকার জাতীয় নির্বাচন কমিশন। বিধিভঙ্গের ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা! বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া ব্রিগেড শনিবার মোদির এই সাক্ষাৎকার পর্ব ছড়িয়ে দেয় পাঞ্জাবের শহরে, গ্রামে। স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলিতেও চলতে থাকে এই ভিডিও। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী যা চরম বেআইনি। অন্য কোনও দল হলে তৎক্ষণাৎ বিধিভঙ্গের দায়ে ব্যবস্থা নিত কমিশন।
আরও পড়ুন – চাকরির দাবিতে স্লোগান উঠল রাজনাথের সভায়
পাঞ্জাব ভোটের আগে শিখ ধর্মগুরুদের সঙ্গে কথোপকথনের সময় মোদিকে (Narendra Modi) বলতে শোনা যায়, ভারতের জন্ম ১৯৪৭ সালে হয়নি! তাঁর কথায়, আমাদের গুরুরা কত তপস্যা করেছেন… জরুরি অবস্থার সময় আমরা অনেক কষ্ট পেয়েছি… সেই সময় জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে পাঞ্জাবে সত্যাগ্রহ হত। আমি তখন আন্ডারগ্রাউন্ডে ছিলাম। আমি ছদ্মবেশ ধারণ করতাম। লুকানোর জন্য আমি শিখ পাগড়ি পরতাম। শিখ ধর্মীয় ভাবাবেগ উসকে দেওয়ার পরিকল্পিত চেষ্টায় এরপর প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেন কর্তারপুর করিডরের প্রসঙ্গ। মোদি বলেন, কংগ্রেস ভারতের সঙ্গে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরের কর্তারপুরকে সংযুক্ত করতে কোনও চুক্তিতে পৌঁছতে পারেনি। আর আমি কূটনৈতিক পথে কথা বলতে শুরু করেছিলাম। আমি যখন পাঞ্জাবে থাকতাম, আমি কর্তারপুর সাহেবকে বাইনোকুলার দিয়ে দেখেছিলাম। তখন থেকেই আমি ভাবতাম যে আমাদের কিছু করতেই হবে। গুরুদের কৃপায় আমরা এই পবিত্র কাজটি করতে পেরেছি। এত অল্প সময়ে আমরা যে কাজটি করেছি তা বিশ্বাস ছাড়া সম্ভব হত না। সাক্ষাৎকারে মোদি বলেন, আমি গুজরাতের মানুষ হিসেবে বলতে চাই যে আপনাদের সঙ্গে আমার রক্তের সম্পর্ক রয়েছে। কারণ, গুরু গোবিন্দ সিংজির পাঁচজন প্রিয় মানুষের একজন ছিলেন গুজরাতের।
পাঞ্জাব ভোটের ২৪ ঘণ্টা আগে শিখদের ধর্মীয় আবেগ উসকে দেবার এই ভাষণে নীরব দর্শক দেশের নির্বাচন কমিশন।