উত্তরের জেলা সফরে আছেন মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister)। আজ, রবিবার আলিপুরদুয়ারে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন উদয়ন গুহ, বুলুচিক বারিক ও অন্যান্যরা। এদিন শিশুদের হাতে গাছ তুলে দেন তিনি। তাছাড়া ২৭ টি প্রকল্পের উদ্ধোধন এবং ৭৭ টি প্রকল্পের শিলান্যাস করছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে ৩১ টি প্রকল্পের অধীনে ৩৯ জনকে পরিষেবা প্রদান করেন। চা শ্রমিকদের পাট্টা বিলি করেন তিনি।
আরও পড়ুন-বে.আইনি পার্কিংয়ের বাড়.বাড়ন্ত রুখতে কলকাতা পুরসভার অ্যাপ
এদিন তিনি চা বাগানের শ্রমিকদের প্রসঙ্গে বলেন, ‘চা বাগানের শ্রমিকদের পাট্টা দেব। আজ ছ’হাজার পাট্টা দেওয়া হবে। আমরা অনেক জমি অধিগ্রহণ করেছি। আমি জেলা শাসককে বলব যাঁদের জাযগা মেলেনি তা নিয়ে পাট্টা দেবেন। মোট ১৩ হাজার পাট্টা দেব। বাকি জায়গায় সমীক্ষা করে দেব। চা সুন্দরীর বদলে ১ লক্ষ হাজার টাকা দেব পাট্টার সঙ্গে। যে সকল চা বাগান বন্ধ রয়েছে সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের অসুবিধা হচ্ছে। ওনাদের মাসে মাসে দেড় হাজার টাকা দিন। পানীয় জল, বিদ্যুত, স্বাস্থ্য পরিষেবা বিনামূল্যে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।’
আরও পড়ুন-বঙ্গে শুরু শীতের ঝোড়ো ব্যাটিং, উত্তরে তুষারপাত
এদিন তিনি আদিবাসীদের স্বার্থে বলেন, ‘আদিবাসী যাঁদের সার্টিফিকেট নেই, তাঁদের একজনের থাকলে দুয়ারে সরকারে আসতে বলুন। সকলকে সার্টিফিকেট দিন। অনেক নকল সার্টিফিকেট হয়েছে। সেগুলির রিভিউ হবে। নকল হলে বাতিল হবে। মজদুর ফ্যামিলির লোকজনের সঙ্গে আমি রয়েছি। আমি বিজেপি নই। যে বলবে সব চা বাগান খুলে দেব বলেছিল। মোদী সরকারের মতো নই। আগের বার বলেছিল ১৫ লক্ষ টাকা করে অ্যাকাউন্টে দেবে। এবার লোকসভা ভোটের আগে ফের শুরু হবে। ওদের বিশ্বাস করবেন না।’
আরও পড়ুন-জলের মিটার চুরি রুখতে নতুন কৌশল কেএমসির
কেন্দ্রকে নিশানা করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘৪৩ হাজার বাড়িতে ঘরে ঘরে পানীয় জল পৌঁছে দিয়েছি। আগামী ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে ১ লক্ষ ২০ হাজার বাড়িতে জল পৌঁছে যাবে। কেন্দ্রীয় সরকার শুধু বিজ্ঞাপন দেয়। কিন্তু জমি কে দেয় ? বিদ্যুৎ কে দেয় ? বিজেপি খালি দালালি করে।সব উদ্বাস্তু কলোনির পাট্টা আমরা করে দিচ্ছি। আমরা সাধ্যমতো করছি। আজও প্রায় ৯৩ কোটি ৩২ লক্ষ মূল্যের ৭০টা প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে।আলিপুরদুয়ারকে নতুন জেলা আমরা করে দিচ্ছি।চা বাগানের পাট্টা আর পর্যটন শিল্প আমরা করে দিচ্ছি। ১০০ দিনের টাকা পাচ্ছি না । আবাসের টাকা ও বন্ধ করে দিয়েছে। কেন্দ্র সরকার সব টাকা নিয়ে যায়। আমাদের জিএসটি ট্যাক্স ওরা নিয়ে যায়। আর আমাদের শেয়ার দিচ্ছে না। আমি দিল্লি যাচ্ছি। ১৮ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে আমি পিএম র কাছে সময় চেয়েছি।না দিলে বলব টাকা দাও নাহলে গদি ছাড়। ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে।’
আরও পড়ুন-প্রতিশ্রুতি পূরণ অভিষেকের, আর্থিক সাহায্য পেলেন বঞ্চিতরা
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রসঙ্গে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে উত্তরবঙ্গে ২৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। কৃষকদের যাদের ক্রপ বিমা করা আছে। তাঁরা টাকা পাবেন। খরিপ চাষের টাকা কৃষকদের অ্যাকাউন্টে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে ঢুকে যাবে।’
আরও পড়ুন-অন্ডাল এয়ারপোর্ট সংলগ্ন সড়কে অবশেষে হতে চলেছে বাস স্টপেজ
এদিন তিনি দুয়ারে সরকারের দিনও জানিয়ে দিলেন। তিনি বলেন, ‘১৫ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুয়ারে সরকার ক্যাম্প শুরু হবে। ১ জানুয়ারি থেকে পরিষেবা প্রদান করা হবে। একটা পরিবারে লক্ষ্মীর ভান্ডার সব মেয়েরা পাবেন। ২৫ বছর থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত। একটা বাড়িতে পাঁচটা বউ থাকলে সকলে পাবেন।’
সবমিলিয়ে লোকসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রীর এই জনমুখী প্রকল্প উল্লেখযোগ্য বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।