প্রতিবেদন : ফিট সার্টিফিকেট ছাড়াই পুজোর কথা ভেবে, রাজনৈতিক ফায়দার কথা মাথায় রেখে খুলে দেওয়া হয়েছিল মোরবির মাচ্ছু নদীর উপর ঝুলতা পুল। কারা ছিল এই ব্রিজ মেরামতির দায়িত্বে? ওরেভা গ্রুপ। তারা কী করে? এরা সিএফএল বাল্ব, ঘড়ি, ই-বাইক ইত্যাদি তৈরি করে। কে এই গ্রুপের মালিক? ওধাবজি রাঘবজি প্যাটেল। তিনি মোদি-ঘনিষ্ঠ। প্রধানমন্ত্রীর (Narendra Modi- Bridge Collapse) কাছের শিল্পপতি। প্যাটেলের কোম্পানির কোনও অভিজ্ঞতাই নেই ব্রিজ তৈরি বা মেরামতের। তবু কিনা তাঁকে বরাত? কেন? কোন কারণে? কোন সম্পর্কের জেরে। মোদি- ঘনিষ্ঠ এই শিল্পপতিকে কেউ ছুঁতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন না। ইতিমধ্যে আওয়াজ উঠেছে, ফাঁসি চাই প্যাটেলের। কিন্তু কেন মোরবি পুরসভা প্যাটেলদের বরাত দিল? কেন ২৬ অক্টোবর গুজরাতি নববর্ষে খুলে দেওয়া হল তাড়াহুড়ো করে? প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু জবাব দেবে কে? বিজেপি টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে মরিয়া। মাত্র ২ কোটি টাকায় ব্রিজ সারাই! ৬ মাস সময় পাওয়ার পরেও ব্রিজ সারাই হয়নি। তাহলে হচ্ছিলটা কী? সেতু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হবে কী করে? কে করবে? যে সংস্থা দায়িত্বে তারা সামান্য রং আর কেবল পাল্টে কাজ শেষ করে।
গুজরাতে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, মোরবি ব্রিজের সিভিক বডির সঙ্গে ১৫ বছরের চুক্তির পর ওরেভা কাজের জন্য দায়িত্ব দেয় এক অনামি ছোট সংস্থাকে। যাদের নাম দেবপ্রকাশ সলিউশন। তারা ঠিক ভাবে কাজ করতে পারেনি। সঙ্গে অতিরিক্ত লোক ওঠানো তো আছেই। একসঙ্গে ১০০ জনের বেশি ব্রিজে (Narendra Modi- Bridge Collapse) তোলার কথা নয়। সেই জায়গায় টিকিটের টাকার লোভে প্রায় ৪৫০জন উঠে দাপাদাপি করছিল ব্রিজে।
আরও পড়ুন-শোকপ্রকাশ করে তৃণমূল বলল, সাহস থাকলে প্রধানমন্ত্রী বাংলায় বলা সেই চারটি লাইন গুজরাতেও বলুন
তবে মোরবি ঝুলন্ত ব্রিজ এই প্রথম ভেঙে পড়েনি। ১৯৭৯ সালেও শতাব্দী প্রাচীন এই ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়েছিল। ঘটনায় কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ১৯৭৯ সালের ১১ অগাস্ট মাচ্ছু নদীতে এই মোরবি সেতু ভেঙে যায়। ঘটনায় কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। প্রবল বর্ষণ মাচ্ছু নদীর জল বিপদ সীমার ওপর দিয়ে বইতে থাকে। সেই সময় নদীর জল সেতু উপছে যায়। বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ মোরবি সেতু ভেঙে যায়। মাচ্ছু নদীর জল শহরে প্রবেশ করে। ঘটনায় প্রায় ১,৫০০ জনের মৃত্যু হয়। ১,৩০০ পশুর মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় কয়েকদিন পর যখন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী মরবি যান, সারা শহর জুড়ে পচা দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ছিল যে ইন্দিরা গান্ধীর সফর পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।
এবার শুধু লাশের সারি। হাহাকার। চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুর ঘটনা। সরকারি অবহেলা। আর মিডিয়ার কাছে আসল কথা লুকনোর চেষ্টা। ফুঁসছে মারবি এলাকার মানুষ।