প্রতিবেদন : চণ্ডীগড় মেয়র নির্বাচন ‘গণতন্ত্রের হত্যা’। কড়া মন্তব্য করে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং অফিসারকে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের ৩ সদস্যের বেঞ্চের তরফে জানানো হয়, ‘ভিডিওতে প্রিসাইডিং অফিসারের কর্মকাণ্ড স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। এটা গণতন্ত্রণের উপহাস। যা ঘটেছে তাতে আমরা হতবাক। এভাবে গণতন্ত্র হত্যার অনুমতি দিতে পারি না।’ পাশাপাশি ওই অফিসারকে নোটিশও জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-প্যান-আধার লিঙ্ক, ৭ মাসে জরিমানা বাবদ কেন্দ্র পেল ৬০১.৯৭ কোটি
চণ্ডীগড়ে নতুন মেয়র নির্বাচনের দাবিতে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আপ কাউন্সিলরের আবেদনের ভিত্তিতে সোমবার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের সভাপতিত্বে বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা এবং মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ জানায়, ওই প্রিসাইডিং অফিসারকে স্পষ্টভাবে দেখা গিয়েছে ব্যালট পেপারগুলিকে বিকৃত করতে। ওই অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত নির্বাচনী ফলাফলকে প্রভাবিত করার জন্য। মামলার শুনানিতে গোটা ঘটনার ভিডিও দেখে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে তিনি ব্যালট পেপার নষ্ট করেছেন। ওঁর বিরুদ্ধে বিচার হওয়া দরকার। সলিসিটর সাহেব, এটা গণতন্ত্রের উপহাস এবং গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা আতঙ্কিত। একজন রিটার্নিং অফিসারের এই আচরণ? দয়া করে রিটার্নিং অফিসারকে বলুন যে সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে দেখছে।’’
আরও পড়ুন-পাঁচ বছরে ১২ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ৩ লক্ষ কোটির জালিয়াতি, অভিষেকের প্রশ্নে স্বীকার কেন্দ্রের
গোটা ঘটনায় আদালত অভিযুক্ত রিটার্নিং অফিসার অনিল মসিহকে নোটিশ জারি করেছে এবং নির্দেশ দিয়েছে পুরনির্বাচনের পুরো রেকর্ড হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দেওয়ার জন্য। আদালত জানায়, ‘‘ব্যালট এবং ভিডিওগ্রাফি সংরক্ষণ করা হোক।’’ পাশাপাশি, চণ্ডীগড় মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের ৭ ফেব্রুয়ারির সভা পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত স্থগিত করা হবে। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। গত ৩০ জানুয়ারি, চণ্ডীগড়ের মেয়র পদের নির্বাচনে আপ-কংগ্রেস জোটের ৮টি ভোট কোনও কারণ না দেখিয়ে প্রিসাইডিং অফিসার অবৈধ ঘোষণা করেন এবং বিজেপি প্রার্থী মনোজ সোনকরকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। আপ-কংগ্রেস জোট প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপির অভিযোগ আনে এবং প্রমাণস্বরূপ একটি ভিডিও প্রকাশ করে। মেয়র নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ নিয়ে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় আপ-কংগ্রেস জোট। কিন্তু হাইকোর্ট নির্বাচনের ফলাফলের উপর স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকার করে। আম আদমি পার্টির কাউন্সিলর কুলদীপ কুমার হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান। সেখানেই বিজেপির মুখে কার্যত ঝামা ঘষে দিল শীর্ষ আদালত।