সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রাম : কচি পাতা আর শাল, মহুয়া ফুলে সেজে ওঠা প্রকৃতির নতুন রূপকে স্বাগত জানাতে প্রাচীন প্রথা মেনে জঙ্গলমহলে হল সারুল পুজো। জঙ্গলমহল জুড়ে এ সময় শাল, মহুয়ার ডালে ডালে আসে কচি পাতা। বাতাসে ভর করে ছড়িয়ে পড়ে নতুন ফোটা শাল আর মহুয়া ফুলের সুবাস। কাঠফাটা গরমেও প্রকৃতির আপন হাতে সাজানো থেমে থাকে না। প্রাচীন প্রথা মেনে নতুন এই রূপকে সম্মান জানাতে তৈরি হন অরণ্য সন্তানরা। জঙ্গলমহলের সাঁওতাল, মাহাতো অর্থাৎ কুর্মী সম্প্রদায়ের মানুষজন।
আরও পড়ুন-জল-দুর্ভোগ কমাতে হাওড়ায় কন্ট্রোল রুম
রীতি মেনে অনেকে নিজের বাড়িতেও করেন সারুল পুজোর আয়োজন। এছাড়া গ্রামের পাশে পুরানো শালগাছের নিচে পোড়া মাটির হাতি ঘোড়া রেখে সেখানে অর্থাৎ জাহের থানে হয় সারুল আরাধনা। সাঁওতাল, মাহাতো সম্প্রদায়ের মানুষজন পুরোহিতকে লায়া বা নাইকে বলেন। চৈত্রের শেষ থেকে এই পুজোর আয়োজন কোথাও না কোথাও চলতে থাকে। তবে চৈত্রের সংক্রান্তিতে অধিকাংশ জায়গায় হতে দেখা যায়। শালগাছের নতুন কচি পাতা, ফুল, মহুয়ার ফুল, গাছে আসা কচি আম সব দিয়ে দেবতার নৈবেদ্য সাজানো হয়। নতুন সৌন্দর্য্যে ভরে ওঠা প্রকৃতির পুজো করতে।
আরও পড়ুন-কর্ড লাইনে ফের ট্রেন বাতিল
প্রকৃতির নতুন রূপকে স্বাগত জানানোর এই আরাধনাকে কেন্দ্র করে আনন্দে মেতে ওঠেন জঙ্গলমহলের কুর্মী, সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মানুষজন। পুরোহিত বা নাইকে জাহের থানে পুজো করে বাড়ি ফেরার সময় প্রথা মেনে ঘটির জল দিয়ে তাঁর পা ধুয়ে দেন বাড়ির মহিলারা। এরপর পুরোহিত ওই সব মহিলাদের ফুল বিতরণ করেন। এরপর থেকে গাছের নতুন ফুল, পাতা ব্যবহার করতে পারেন সবাই। পুজোর আগে কেউ গাছের নতুন পাতা, ফুল ব্যবহার করেন না।