জেলবন্দি ইমরানকে রুখতে তৎপর নওয়াজ, ঘুঁটি সাজাচ্ছে সেনাও, পুনর্নির্বাচন ঘোষণা হতেই অগ্নিগর্ভ পাকিস্তান

আসন সংখ্যার বিচারে জেলবন্দি প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থক নির্দল প্রার্থীরা এগিয়ে থাকলেও পিটিআইকে রুখতে সক্রিয় হয়েছেন নওয়াজ শরিফ

Must read

প্রতিবেদন : ত্রিশঙ্কু পরিস্থিতিতে পাকিস্তানে সরকার গড়তে নানা শিবিরের তৎপরতা তুঙ্গে। আসন সংখ্যার বিচারে জেলবন্দি প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থক নির্দল প্রার্থীরা এগিয়ে থাকলেও পিটিআইকে রুখতে সক্রিয় হয়েছেন নওয়াজ শরিফ। ইমরান জমানায় জেলে যাওয়ার ভয়ে লন্ডনে পালিয়ে যাওয়া নওয়াজ এখন বদলা নিতে চান। যে কোনও মূল্যে সরকার গড়তে একদা চরম শত্রু প্রয়াত বেনজির ভুট্টোর দলই তাঁর ভরসা এখন। আর সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীও তৎপর হয়ে উঠেছে। ইমরানকে ঠেকাতে নওয়াজ-বিলাওয়াল জোট সরকার নাকি পাকিস্তানে ফের সেনা-শাসন তা স্পষ্ট হয়ে যাবে কিছুদিনের মধ্যেই। ইতিমধ্যেই সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির স্থিতিশীল সরকার গড়ার ডাক দিয়ে জল্পনা উসকে দিয়েছেন।

আরও পড়ুন-মুর্শিদাবাদ থেকে বাংলাদেশের জলপথে সরাসরি বাণিজ্য

সময় যত গড়াচ্ছে ততই ঘোলাটে হচ্ছে পাকিস্তানের নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের পর ৩ দিন কেটে গেলেও সম্পূর্ণ নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। আর সে-কারণেই শনিবার রাত থেকে ধীরে ধীরে অশান্ত হতে থাকে পরিস্থিতি। রবিবার রাতে গণনা শেষ হলেও এককভাবে কোনও দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এদিকে নির্বাচন কমিশনের তরফে ৪০ আসনের একাধিক বুথে পুনর্নির্বাচনের ঘোষণা করার পরই রবিবার সকাল থেকে পাকিস্তান জুড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের কর্মী-সমর্থকরা। জেলবন্দি ইমরান খানের দাবি, তিনিই সরকার গঠন করবেন।

আরও পড়ুন-রাজ্যের পড়ুয়াদের পাশে রাজ্য সরকার

শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত পাকিস্তানের ২৬৫ আসনের মধ্যে ২৫০টিরও বেশি আসনে ফল ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। বাকি ছিল ১০ আসনের গণনার কাজ রবিবার রাতে শেষ হয়েছে বলে খবর। এদিকে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের ৪০ টি আসনে পুনর্নির্বাচনের ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ফলপ্রকাশে এমন টালবাহানা দেখে বিরোধীদের অভিযোগ, পাকিস্তানের নির্বাচনে ব্যাপক রিগিং ও কারচুপি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত যে ফলাফল সামনে এসেছে তাতে পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে ৯৩টিরও বেশি আসনে জয়ী পিটিআই সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা। বেসরকারিভাবে দাবি, সংখ্যাটা শতাধিক। অন্যদিকে, নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন ৭৩টি আসনে জয়ী হয়েছে। এছাড়া বিলাওয়াল ভুট্টোর দল ৫৪টি আসনে জয়লাভ করেছে। অন্যান্যরা পেয়েছে ৩৩টি আসন। পিটিআই, পিপিপি ও পিএমএল-এন সকলেই আলাদা আলাদাভাবে বিভিন্ন আদালতে রিগিংয়ের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। তবে সময় যত গড়াচ্ছে পাকিস্তানেও প্রকট হচ্ছে ঘোড়া কেনাবেচার খেলা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, পাকিস্তানের রাজনীতিতে আগামী কয়েকদিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এই সময়ের মধ্যেই পাকিস্তানে কে সরকার গড়বে, তা-ও নিশ্চিত হয়ে যাবে। ইমরানের দলকে রুখতে নওয়াজ শরিফের সঙ্গে বিলাওয়াল ভুট্টোর দল পিপিপি হাত মেলাতে চলেছে বলে আগেই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। তাঁর নেতৃত্বাধীন জোটই পাকিস্তানে সরকার গঠন করবে বলে ফের দাবি করেছেন নওয়াজ শরিফ।

Latest article